প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সুনামগঞ্জে আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ০২:০৯ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জে আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা

Manual6 Ad Code

 

Manual6 Ad Code

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

Manual7 Ad Code

হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে এবার আমনের আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন চাষীরা। তাতে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আরও প্রায় তিন হাজার টন বেশি ধান উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সুনামগঞ্জ মূলত এক ফসলি বোরো এলাকা হলেও জেলার কয়েকটি উপজেলায় আমন ধানও চাষ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সেসব এলাকায় ২০২৪-২০২৫ মওসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

এর মধ্যে জেলায় ৫০ ভাগের বেশি ধান কাটা শেষ হয়েছে। আর মওসুম শেষে উৎপাদিত আমন ধানের বাজার মূল্য এক হাজার কোটি টাকার বেশি হবে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৮৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জন হয়েছে প্রায় ৮৩ হাজার ৪৯৫ হেক্টর। ভালো ফলনের কারণে চলতি মওসুমে ধান উৎপাদিত হবে তিন লক্ষ ২১ হাজার টন। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার টন বেশি।

কৃষি বিভাগের মতে, জেলায় প্রায় চার লাখ চাষি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক পরিবার আমন চাষে যুক্ত। হাওর এলাকা হলেও সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা আমন চাষ করেন বেশি।

সবচেয়ে কম আমন চাষ হয় শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলায়। এছাড়াও দিরাই, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, জগন্নাথপুর উপজেলায়ও আমন চাষাবাদ হয়। এর মধ্যেই অর্ধেকের বেশি জমির ধান কাটা শেষে মাড়াই ও রোদে শুকিয়ে সহজে গোলাজাতও করছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বন্যায় ক্ষেতে পলি পড়ায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। ফলে প্রতি বিঘায় ১৪-১৮ মণ ধান উৎপাদিত হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৪.১ টন (ধান) ও ২.৭৩ টন (চাল) ফসল উৎপাদন হয়েছে।

জেলায় আমন মওসুমে ২৫ প্রজাতির ধান চাষাবাদ হয়েছে। আমন ধানের মধ্যে বিনা ১৭, ব্রি ৪৯, ৯০, ৯৫ ও বিআর-২২, ব্রি ধান-৮৭ এর ফলন বেশি ভালো হয়েছে।

তবে কৃষকরা জানালেন, বাজারে ধানের দাম কম। তাই শেষ পর্যন্ত তারা কতটুকু লাভবান হবেন তা নিয়ে শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শান্তিপুর গ্রামের কৃষক শুকুর আলী বলেন, “তিন দফা ছোট বন্যার কারণে পলি পড়ে জমি উর্বর হওয়ায় এবার আমন ধান ভালো হয়েছে। যারাই চাষ করেছে ফসল ভালো পাচ্ছেন।”

উপজেলার মোল্লাপাড়া বিটগঞ্জের কৃষক আশিক মিয়া বলেন, “আমন এবার কিয়ারে (৩০ শতাংশ) ফলন হয়েছে ১৫-১৬ মণ। তবে কৃষকরা ধানের মূল্য কম পাচ্ছেন। বাজারে এখন ১০০০-১২০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। তবুও অনেক কৃষকের হাত খালি থাকায় সস্তায় ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।”

Manual6 Ad Code

একই উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক সুন্দর আলী বলেন, “এক কিয়ার জমি চাষ করতে প্রায় আট-নয় হাজার টাকা খরচ হয়। নিজে ও পরিবারের সদস্যদের পরিশ্রমের মূল্য ছাড়াই এই টাকা খরচ হয়। তাই ভালো দাম না পেলে এখন পোষায় না ধান চাষ করে।“

সদর উপজেলার পৈন্দা গ্রামের ইউপি সদস্য ও কৃষক মো. সফর আলী বলেন, “আমাদের কৃষকরা এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি। এখন ন্যায্য দাম পেলেই তারা উপকৃত হবেন।”

Manual7 Ad Code

পাশাপাশি বৈশাখি মওসুমে কৃষকদের জন্য পর্যাপ্ত সার মজুদ রাখার দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, “আমাদের হিসেবে এবার আমনের রেকর্ড উৎপাদন। লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আরো প্রায় ৩ হাজার টন ধান বেশি উৎপাদিত হয়েছে। ধানের দাম ১০৫০-১২৫০ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন কৃষক।

“এছাড়া সরকার কৃষকের কাছ থেকে ১২৩০ টাকা মণ দরে ধান কিনবে। আশা করি তারা লাভবান হবেন।”

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code