প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নির্বাচন ঘিরে মাঠ প্রশাসন গোছাচ্ছে সরকার

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১০, ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ণ
নির্বাচন ঘিরে মাঠ প্রশাসন গোছাচ্ছে সরকার

Manual3 Ad Code

 

# শিগগিরই ২১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ।

# ভোটের আগে পাল্টাবে বেশির ভাগ ডিসি-এসপি।

# গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

প্রজন্ম ডেস্ক:

Manual3 Ad Code

 

চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া এই সময়সীমা সামনে রেখেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে আগামী নির্বাচনের সময় মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যাদের রাখা হবে, সতর্কতার সঙ্গে তাঁদের তালিকা করছে সরকার।

ভোটের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি)। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকেন পুলিশ সুপার (এসপি)। এ দুই পদে নতুন কর্মকর্তাদের পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে। ভোটের কয়েক মাস বাকি থাকতেই পুরো মাঠ প্রশাসন গুছিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে সরকার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ডিসি নিয়োগের জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর ১০৮ জনের ফিট লিস্ট তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই তালিকা থেকে ৬১ জনকে ডিসি পদে পদায়ন করা হয়। ফিট লিস্টের অন্যদের ডিসি পদে পদায়ন না করে গত ১১ জানুয়ারি থেকে নতুন ফিট লিস্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ জন্য ছয় ধাপে বিসিএস ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের ২৬৯ জন কর্মকর্তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়।

বর্তমানে ২৪তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫তম ব্যাচের ২৫ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ১৩ কর্মকর্তা ডিসির দায়িত্বে আছেন। ২৪তম ব্যাচের ২৬ জনের মধ্যে ২১ জন সম্প্রতি যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাঁদের শিগগিরই ডিসির দায়িত্ব থেকে তুলে এনে সেখানে নতুনদের পদায়ন করা হবে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিব বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। ডিসির দায়িত্বে থাকা কেউ যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেলে তাঁকে আর ওই দায়িত্বে রাখা হয় না।

সূত্র জানায়, ডিসি পদে নিয়োগের জন্য নতুন করে ২৮তম ব্যাচের ১৫৮ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হবে। যদিও এই ব্যাচ থেকে এখনো ডিসি পদে পদায়নের জন্য ফিট লিস্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।

এদিকে বর্তমানে ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা এসপির দায়িত্বে আছেন। নির্বাচনের আগে ২৮তম ব্যাচের কিছু কর্মকর্তাকে এসপি পদে পদায়ন করা হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। অর্থাৎ ভোটের সময় ২৫, ২৭ ও ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তারা আইন- শৃঙ্খলা রক্ষার মূল দায়িত্বে থাকবেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রশাসন সাজানো শুরু করবে সরকার। এ জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাছাই করা হচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়াদের এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার চিন্তা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলি নিয়ে জটিলতায় পড়ে। সমালোচনার মুখে কয়েকটি নিয়োগ বাতিল করা হয়। কিন্তু এখন সতর্কতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাছাই করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ভোটের সময় ডিসি-এসপির দায়িত্বে যাঁদের রাখা হবে, সেসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত তথ্য ছাড়াও তাঁদের পারিবারিক তথ্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নতুনদের পদায়ন করতে নতুন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

Manual3 Ad Code

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের একজন পদস্থ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকা’কে বলেন, মাঠ প্রশাসনে রদবদল রুটিন ওয়ার্কের অংশ। তবে আগের থেকে অনেক সতর্কতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাছাই করা হচ্ছে।

Manual4 Ad Code

 

আছে সন্দেহ ও প্রশ্ন

Manual1 Ad Code

নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসন সাজানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। নতুন দল এনসিপির সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় মাঠ প্রশাসন বিন্যাসে তার প্রভাব পড়বে কি না সেই সন্দেহ আছে তাদের মধ্যে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, মাঠ প্রশাসন সাজানোর ব্যাপার তখনই আসে যখন দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকে। দলীয় সরকারের সময় প্রতিপক্ষ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মনে করে ক্ষমতাসীনেরা সুবিধা নেওয়ার জন্য প্রশাসন সাজাচ্ছে, অতীতে এ রকম হয়ে আসছে। এখন যে রদবদল করা হবে তার সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। তারপরও এনসিপির সঙ্গে সরকারের উপদেষ্টাদের যে সম্পর্ক, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো প্রশ্ন তুলতেই পারে।

সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, বিশেষ অবস্থায় ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসন সাজাতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। দলনিরপেক্ষ, পেশাদার ও সৎ লোকজন নিয়ে প্রশাসন সাজানো উচিত। রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে নব্বইয়ের পর থেকে একটি সমস্যা তো তৈরি হয়েছে, কাজেই উনারা প্রশাসন সাজালে সমস্যা নেই। কিন্তু এখানে উনাদের নিয়ত পরিষ্কার থাকা লাগবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন করে দেবেন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য যে মানুষগুলোকে দরকার, তাদেরকেই তাঁরা নিয়োগ দেবেন, এটি সবার প্রত্যাশা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code