প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভারত ছাড়ছে বড় ক্রেতারা: দুয়ার খুলছে বাংলাদেশের

editor
প্রকাশিত আগস্ট ৯, ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ
ভারত ছাড়ছে বড় ক্রেতারা: দুয়ার খুলছে বাংলাদেশের

Manual4 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

২ এপ্রিল থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশের রফতানিকারকদের দিন পার করতে হয়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর শুরু হয় তোলপাড়। চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয় মার্কিন বাজার নিয়ে। পরে দফায় দফায় বৈঠকের পর দুই ধাপে কমিয়ে পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ করা হয়। যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা এবং সরকার। এই শুল্ক নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, এখন তা বাংলাদেশের জন্য দারুণ সম্ভাবনা হয়ে দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিযোগী দেশ ভারতের ওপর পাল্টা শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় বাংলাদেশের সামনে পোশাক রফতানি বাড়ানোর আরও বেশি সুযোগ তৈরি হয়েছে। শুল্ক দ্বিগুণ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ভারতের বাজার ছেড়ে চলে যাচ্ছে, আর দুয়ার খুলছে বাংলাদেশের জন্য। একই সঙ্গে চড়া শুল্কের কারণে আরেক প্রতিযোগী দেশ চীন থেকে ছুটে যাওয়া অনেক রফতানি আদেশও আসতে শুরু করেছে বাংলাদেশের বাজারে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ওপর যখন উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তখন আমেরিকান অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তৈরি পোশাকের রফতানি আদেশ স্থগিত করেছিল, আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আদেশ বাতিল করেছিল। শুল্ক জটিলতা কেটে যাওয়ায় এখন সেসব রফতানি আদেশও ফিরতে শুরু করেছে। সব মিলে বিশ্বব্যাপী শুল্ক যুদ্ধ এখন বাংলাদেশের জন্য এখন আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, নিজেদের শক্তিতেই আমরা এখন ভালো অবস্থায় আছি। ভারতের শুল্ক বাড়ানোর কারণে দেশটি থেকে অর্ডার ছুটে এলে আমরা ভালো অবস্থায় যাব বিষয়টি তেমন নয়। কারণ আগে থেকেই তাদের চেয়ে আমাদের অবস্থান ভালো। তবে ভারতের শুল্কহার যেটা ধার্য করা হয়েছে সেটি সত্যিই বেশি, তবে তা কমতে পারে। আমরা যতটা জানতে পেরেছি সহসায় মার্কি প্রতিনিধি আসবে ভারতে বৈঠক করতে। হয়তো আলাপ-আলোচনায় তাদের শুল্ক কমবে বলে আশা করছি। তবে আমরা যে সংকটে পড়েছিলাম শুল্ককে ঘিরে, এখন আমরা আরও ভালো অবস্থায় আছি। আমরা এখন ক্রেতার ভালো সাড়া পাচ্ছি।

ইনামুল হক খান বলেন, এটা ঠিক ভারতের শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায়, মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ভারতের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। তাদের অনেক অর্ডার আমাদের দেশে আসবে। এ ছাড়া চীন থেকে ছুটে যাওয়া অনেক অর্ডারও আসছে। চীন থেকে বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশের বাজারে আসছে-সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে। সুতরাং শুল্ক সংকট এখন আমাদের সামনে সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

Manual4 Ad Code

তিনি আরও বলেন, এখন যে হারে অর্ডার আসছে-তার সবগুলো নেওয়ার মতো অবস্থাও আমাদের নেই। এখনই পর্যাপ্ত অর্ডার আছে। যেমন আমার প্রতিষ্ঠানে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্ডার বুকড। নতুন করে আর অর্ডার নেওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং এখনই সুযোগ যাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্ডার নেই, তারা এগুলো লুফে নিতে পারে। একই সঙ্গে আগে ক্রেতারা ডিসকাউন্ট দিতে আমাদের চাপ দিতে, কিন্তু এখন আর আমরা কোনো মূল্য ছাড় দিচ্ছি না। এটাও শুল্ক সংকটের আরেকটা ইতিবাচক দিক আমাদের জন্য।

এদিকে ভারত থেকে পণ্য নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অ্যামাজন-ওয়ালমার্টসহ বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট ও গ্যাপসহ বড় বড় মার্কিন রিটেইলাররা ভারত থেকে অর্ডার স্থগিত করেছে। রয়টার্স ও এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, মার্কিন ক্রেতারা ই-মেইল ও চিঠির মাধ্যমে পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্যের চালান আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে। শুল্ক আরোপের কারণে ক্রেতারা বাড়তি খরচ ভাগাভাগি করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভারতীয় রফতানিকারকদেরই এই বোঝা বহন করতে বলেছে।

বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, ট্রাম্পের আরোপ করা দ্বিগুণ শুল্কের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের রফতানি খরচ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রগামী অর্ডার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। ফলে ভারতের ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ওয়েলস্পান লিভিং, গোকালদাস এক্সপোর্টস, ইন্ডো কাউন্ট ও ট্রাইডেন্টের মতো ভারতীয় বড় বড় রফতানিকারকের পণ্য বিক্রির ৪০ থেকে ৭০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক।

এ ছাড়া ভারতের পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বড় রফতানির বাজার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৩৬.৬১ বিলিয়ন ডলারের রফতানির ২৮ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।

বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম টেক্সটাইল রফতানিকারক ভারত আশঙ্কা করছে, এই পরিস্থিতিতে তারা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কাছে অর্ডার হারাতে পারে, যাদের ওপর বর্তমানে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ রয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে এবং বাকি ২৫ শতাংশ ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে।

Manual6 Ad Code

এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেল আমদানির জন্য ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা জরুরি ও উপযুক্ত।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই শুল্ককে ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক’ বলে উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতের জ্বালানি আমদানি বাজার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এবং ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। এই বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

ভারতের দাবি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপে সরবরাহ মোড় ঘুরে যাওয়ায় তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে। তখন যুক্তরাষ্ট্র এই আমদানিকে সমর্থন জানিয়েছিল, যাতে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল থাকে।

চীন-ভারত থেকে বিনিয়োগ আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে অপরদিকে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের কারণে বাংলাদেশের টি-শার্টসহ তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি বাড়ার সুযোগ তৈরি হওয়ার পাশাপাশি ভারত ও চীন থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসার সুযোগ দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন রফতানিকারকরা। এই সুযোগ কাজে লাগাতে শিল্পে গ্যাস সংকট দূর করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন রফতানিকারকরা।। এ ছাড়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বন্দর ব্যবস্থাপনা সহজতর করা, বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং সেক্টরের সংকট দূর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।

রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর বুধবার অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে দেশটির ওপর মোট ৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া, চীনের ওপর ৫৪ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে বাড়তি অর্ডার আসার পাশাপাশি চীন ও ভারত থেকে বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রফতানি করে চীন। তার পরের অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও ভারত। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক পাল্টা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে অন্য সব খরচ অপরিবর্তিত থাকলেও শুধু শুল্কের কারণে চীন ও ভারতের বদলে বাংলাদেশ থেকে একই পণ্য আমদানি করলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের খরচ কমবে ৩০ শতাংশের মতো।

বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের বাইরে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কও তৈরি পোশাক রফতানি করে। এসব দেশের শুল্কহারও বাংলাদেশের প্রায় সমান। তবে দেশগুলোর রফতানি বাড়ানোর সক্ষমতা তেমন নেই বলে মনে করেন রফতানিকারকরা। তাই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকবে বলে আশা করছেন তারা।

Manual8 Ad Code

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকলে বাংলাদেশের টি-শার্টসহ অন্যান্য পোশাক রফতানিও বাড়বে। বাড়তি শুল্কের কারণে চীন ও ভারতের পোশাক রফতানি কমে যাবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সরবরাহের যে গ্যাপ তৈরি হবে, তা সরবরাহ করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম ছাড়া আর কারও নেই। ফলে আমাদের সামনে রফতানি বাড়ানোর বড় ধরনের সুযোগ আছে। এই সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারব, তা সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

বিকেএমই সভাপতি আরও বলেন, রফতানি ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে আমাদের গ্যাস সংকট দূর করতে হবে। বন্দরে কাজের গতি বাড়াতে হবে এবং ব্যাংক খাতে অর্থায়নের যে সমস্যা চলছে, সেটিও দূর করতে হবে।

Manual5 Ad Code

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারত চতুর্থ শীর্ষ তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। গত বছর ভারত ৪৬৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করে। এই বাজারে ভারতের মূল প্রতিযোগী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। ফলে উচ্চ শুল্কের কারণে ভারত থেকে স্থানান্তরিত ক্রয়াদেশ এই দেশ দুটিতে যেতে পারে। তার কারণ, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ করে পাল্টা শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে ২৫ শতাংশ। বাকি ২৫ শতাংশ ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

স্থগিত হওয়া কার্যাদেশ ফিরতে শুরু করেছে : এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যে রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ (পাল্টা শুল্কও) হার কমিয়ে আনায়, দেশের রফতানিকারকদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বায়ারদের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তা ছাড়া শুল্কের নতুন নির্ধারিত হারওÍ চীন ও ভারতের তুলনায় কম, যা মার্কিন বাজারে বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগী করেছে। এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় বায়ারদের সঙ্গে ক্রয়াদেশ নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হচ্ছে। কেউ কেউ আগের স্থগিত ক্রয়াদেশ অব্যাহত রাখার কথাও বলছেন বলে জানান রফতানিকারকরা।

গত সপ্তাহে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, অনেক রফতানিকারক আমাদের জানিয়েছেন, বায়ারদের প্রতিনিধিরা যোগাযোগ শুরু করেছন এবং হোল্ড হওয়া অর্ডার ফিরতে শুরু করেছে।

গত ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে। মার্কিন শুল্কের নতুন হারে-চীনের ৩০ শতাংশ এবং ভারতের ২৫ শতাংশের তুলনায় বাংলাদেশ এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে ২০ শতাংশ হার সমান হলেও পাকিস্তানের ১৯ শতাংশের চেয়ে একটু বেশি। বিজিএমইএ বলছে, এই ২০ শতাংশ শুল্ক হারের সঙ্গে বিদ্যমান ১৬.৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হয়ে মোট শুল্ক ৩৬.৫ শতাংশে দাঁড়াবে।

স্থগিত অর্ডার ফিরছে : রফতানিকারকরা জানিয়েছে, কোনো কোনো বায়ার তারা আগে যেসব অর্ডার স্থগিত রেখেছিলেন সেগুলোর কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।

এক রফতানিকারক বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ৩ লাখ পিস পোশাকের অর্ডার হোল্ড করে রেখেছিলেন ইউএস বায়াররা ট্যারিফ ইস্যুর কারণে। ট্যারিফ রেট ২০ শতাংশে নামার পর তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে, এবং ওই অর্ডার কন্টিনিউ করার জন্য বলেছেন।

অন্য রফতানিকারকরাও একই ধরনের ইতিবাচক অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন। ঢাকাভিত্তিক মার্কিন বাইয়িং হাউস-লিয়াং ফ্যাশন লিমিটেড জানায়, তাদের ক্লায়েন্ট সাউথপোল শুল্কহার কমানোর ঠিক সেই দিনেই ৭৬,৬০০ পিস লং প্যান্ট ও শর্টসের একটি অর্ডার চূড়ান্ত করেছে। খুব শিগগির একই ধরনের আরও একটি অর্ডার আসার সম্ভাবনাও রয়েছে।

 

বাড়াতে হবে সক্ষমতা : রফতানিকারকরা বলছেন, বাড়তি ২০ শতাংশ শুল্ক ভারের একটি অংশ তাদের ওপর আসার আশঙ্কাও রয়েছে। এমন অবস্থায় প্রতিযোগিতার সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বন্দর, কাস্টমসের দক্ষতা, লজিস্টিকস সক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলেন, আমরা একান্তভাবে আশা করি শিল্প ও দেশের স্বার্থে সরকারের সব নীতি সহায়তা চলমান থাকবে, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে কাস্টমস সংক্রান্ত নীতিগুলো শিল্পবান্ধব করা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং শিল্পে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ দিতে হবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code