প্রজন্ম ডেস্ক:
সারা দেশে একই মৌসুমে হরেক কিসিমের ফসল চাষ হয়। যার হিসাব সরকার নিয়মিত প্রকাশ করে। তবে কোন ফসল কতটুকু জমিতে উৎপাদন হচ্ছে, তার হিসাব করা হচ্ছে ‘চোখের দেখায়’ অর্থাৎ অনুমান করে। এভাবে জমির পরিমাণ ও ফসলের উৎপাদন বেশি দেখিয়ে সরকার বাহাবা নেয়। অথচ অনুমাননির্ভর তথ্যের ওপর ভর করে নেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে গ-গোল তৈরি হয়। যার ধকল সইতে হয় ভোক্তাকে। এ নিয়ে অস্থিরতা চলতে থাকে বছর জুড়ে।
বিষয়টি নিয়ে বলেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উপজেলা, জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সারা দেশের বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, কৃষকরা লাভ কমে যাওয়ায় ধানের আবাদ থেকে বিশেষ করে বোরো ধান চাষ বাদ দিয়ে ভুট্টা, সবজি, ফলবাগান করছেন। এ থেকে তারা দ্রুত এবং বেশি লাভ করছেন। কিন্তু এ পরিবর্তনের চিত্রটা গ্রামগঞ্জে দৃশ্যমান হলেও সরকারের হিসাবে উঠে আসছে না।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আহুতিয়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী কৃষক মো. সোহাগ গত বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ না করে তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। এই কৃষক ২৬ বছরের কৃষিকাজের অভিজ্ঞতায় এবারই প্রথম ধান বাদ দিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামের অন্য কৃষকরা ভুট্টা চাষ করে লাভবান হওয়ায় আমিও করেছি। ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গেই ভালো দামে বিক্রিও করতে পেরেছি।’
সোহাগের মতো পাকুন্দিয়ার অনেক কৃষকই গত তিন-চার বছরে বোরো মৌসুমে ধানের চাষ কমিয়েছেন, কেউ কেউ আবার কিছু জমিতে পুরোপুরিভাবে বন্ধ করেছেন। এখানে ভুট্টার আবাদ এতটাই বেড়েছে, যা গ্রামের চাষাবাদের চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। ফলে গ্রামের বোরো মৌসুমের সময়টায় চোখের সামনে শুধু ধানের জমিই দেখা যেত, এখন সেখানে চোখে পড়ে ধান ও ভুট্টার জমি।
এই চিত্র শুধু পাকুন্দিয়ার নয়, সারা দেশের। কিন্তু গত কয়েক বছরে কৃষক যে ধানের আবাদ থেকে সরে এসে ভুট্টা চাষ করছেন, এটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যে ঠিকভাবে উঠে আসছে না। প্রতি বছরই ভুট্টার মতো ‘ক্যাশ ক্রপ’ হিসেবে পরিচিত ফসলগুলোতে ধানের জমি ব্যবহৃত হলেও বোরো চাষের জমির পরিমাণ এবং উৎপাদন বাড়ছে বলে সরকারের তথ্যে প্রকাশ পাচ্ছে। প্রকৃত চিত্রে আউশের চাষ তলানিতে নামলেও কাগজে কলমে ২৮ লাখ টনের উৎপাদন দেখানো হচ্ছে। আমন বন্যায় নষ্ট হলেও তার পরিমাণ দেখানো হয় যৎসামান্য। এ প্রযুক্তির যুগেও কোন জমিতে কী পরিমাণ ফসল উৎপাদন হচ্ছে তার হিসাব করা হচ্ছে ‘চোখের আন্দাজে, অনুমাননির্ভর’, যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে।
গত বোরো মৌসুমে আগের বছরের চেয়ে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন বা তারও বেশি চালের উৎপাদন হয়েছে বলে প্রক্ষেপণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এই হিসাব অনুযায়ী, ২ কোটি ২৬ লাখ টন চালের উৎপাদন হয়েছে, যা সরকারিভাবে চূড়ান্ত হওয়ার পথে। আগের বছর ২ কোটি ১০ লাখ টন চাল উৎপাদন হয় এ মৌসুমে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল ক্ষতির মুখে না পড়ায় সামগ্রিক উৎপাদন ভালো হয়েছে। এজন্য বাড়তি উৎপাদনের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। তবে এই প্রক্ষেপণ করা হলেও বাজার উল্টো আচরণ করছে। মৌসুমের মধ্যেই চালের দাম বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকলেও চালের দাম মৌসুমে এত বেশি বাড়ার সুযোগ নেই। চাহিদার সঙ্গে সংগতি না থাকায় এ দাম বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ৩২.৯৬ এবং চালের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ৪৮.৮৮ টাকা। কিন্তু বাজারে নাজির ও মিনিকেট নামের চিকন চাল প্রতি কেজি ৭৫-৮৫ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চালের উৎপাদনের তথ্যে বড় ধরনের গরমিল রয়েছে বলেই বাজার এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। বাজার সামাল দিতে ইতিমধ্যেই বেসরকারিভাবে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তবে মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই, দাম কমেনি এক টাকাও। অথচ এ বছরই আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম নেমেছে উৎপাদন খরচের নিচে। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন চাহিদার বেশি দাবি করা হলেও প্রতি বছরই আমদানি করতে হয়। কারণ, উৎপাদন মৌসুমের মাস তিনেক পর থেকেই দাম বেড়ে যেতে থাকে।
এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় বা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) যেভাবে বোরো উৎপাদনের হিসাব বের করেছে, তা জানতে বিভিন্ন উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসারদের (ইউনিয়ন পর্যায়ের এ অফিসাররা আগে ব্লক সুপারভাইজার হিসেবে পরিচিত ছিল) সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার অংগিয়াদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার বলেন, ‘আমার ব্লকে ৬২০ হেক্টর জমি রয়েছে। এ জমির তথ্য কৃষক, ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ারের দেওয়া মোট কৃষিজমির পরিমাণ এবং কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা।’
তিনি বলেন, ‘৬২০ হেক্টর জমিতে কোন ফসল কী পরিমাণে চাষ হচ্ছে, সেটা পুরোটাই চোখের দেখা হিসাব। কারণ এই ফসল সঠিকভাবে পরিমাণ করার মতো কোনো ধরনের প্রযুক্তি বা পদ্ধতি আমাদের নেই।’
এই উপজেলায় এখন মোট কৃষিজমির পরিমাণ ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর, যার মধ্যে গত বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। অথচ গত বছরই এখান থেকে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমি ভুট্টা, সবজি এবং অন্যান্য ফসলে চলে গেলেও ধানের জমি কমেনি। এই যে ধান চাষের হিসাব করা হয়েছে, তা ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি অফিসারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। যারা কি না এখনো চোখের দেখায় ফসল চাষের জমির পরিমাণের হিসাব করেন।
প্রতি বছর ধানের জমি কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন পাকুন্দিয়ার উপজেলা কৃষি অফিসার নূর-ই-আলম। তিনি বলেন, এই উপজেলায় ব্যাপকহারে ভুট্টার আবাদ বাড়ছে। গত বছরও প্রায় ১৫০ হেক্টর ধানের জমি ভুট্টা চাষে ব্যবহার হয়েছে। তবে প্রকৃত অর্থে আমরা এসব জমির হিসাবের জন্য ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসারদের ওপরই নির্ভর করি। তারা যে হিসাব দেয়, সেটাই আমরা আমাদের জেলা অফিসকে পাঠাই। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রযুক্তির ব্যবহার না করা হবে ততক্ষণ আসলে কোন ফসলের কী পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে, তার সঠিক হিসাব করা মুশকিল।
এভাবেই সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ের তথ্য জেলায় আসে, জেলা থেকে বিভাগ এবং বিভাগীয় পর্যায় থেকে ডিএই এটা সমন্বয় করে মোট হিসাব তৈরি করে। এরপর নমুনা হিসেবে বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত ফসলের নমুনা উৎপাদন বিবেচনায় নিয়ে মোট উৎপাদনের হিসাব তৈরি করে ডিএই এবং এর অনুমোদন দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, গত বোরো মৌসুমে মোট ৫০.৪৫ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, যেখানে উৎপাদনের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টন। ১০ বছর আগে (২০১৪-১৫) কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসেবে এই জমির পরিমাণ ছিল ৪৮.৪০ লাখ হেক্টর জমি এবং উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ টন চাল। প্রতি বছরই কৃষি মন্ত্রণালয় ধারাবাহিকভাবেই জমির পরিমাণ ও চালের উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়েছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভুট্টার আবাদ হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ লাখ হেক্টর জমিতে, যেখানে উৎপাদন হয়েছে ৬৫.৬৬ লাখ টন। এক দশক আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল ৩ দশমিক ৫৫ লাখ হেক্টর জমিতে, যখন উৎপাদন ছিল ৩০ লাখ টনের নিচে।
অথচ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু ফসলের পরিবর্তন হচ্ছে তাই নয়, নতুন রাস্তাঘাটের কারণে প্রতি বছর জমি কমছে। রাস্তা হলে এর পাশে বাড়িঘর, দোকানপাট বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এতে করেও জমি কমছে। অনেক স্থানে ফসলের মাঠে ফলের বাগান তৈরি হচ্ছে, খামার গড়ে উঠছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতি বছরই কৃষিজমি কমছে ১ শতাংশ হারে। অথচ সরকারের প্রতি বছরই কৃষিতে জমির পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
চাল উৎপাদনের এই হিসাব যে অতিরঞ্জিত, সে অভিযোগ আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই উঠতে শুরু করে ব্যবসায়ী সংগঠন ও অর্থনীতিবিদদের পর্যায় থেকে। সবশেষ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনেও গোলমেলে হিসাবের বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বিভিন্ন সময় কৃষিমন্ত্রী তথ্যের যৌক্তিকতা নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। বিষয়টি প্রথম বড় পরিসরে ধরা পড়ে ২০০৭ সালে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিষয়টি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনায় এলেও সমাধান হয়নি। সরকারের তথ্য সরবরাহকারী পরিসংখ্যান ব্যুরোকে শক্তিশালী করা হলেও বিতর্ক শেষ হয়নি।
অর্থনীতিবিদরা জানান, হিসাবের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ মাঠপর্যায়ে যারা হিসাবের সঙ্গে জড়িত, তাদের ওপর ফলন বাড়িয়ে দেখানোর এক ধরনের চাপ থাকে। আবার সরকার যখন ধানের ফিল্ড বা জমি বাছাই করে তখন সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারিভাবে সহায়তা দিয়ে যেসব জমিতে প্রদর্শনী করা হয়, সেগুলো মূল্যায়ন করা হয়। অনেক সময় ভুলভাল হিসাব খাদ্য নিরাপত্তার ওপরও আঘাত করতে পারে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ তথ্যে ভুল থাকলে মূল্যস্ফীতি, বাজারের তথ্য, আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। আবার সরকার সার ও বীজের যে পরিকল্পনা করে থাকে, সেখানেও জটিলতা তৈরি হয়। ফলে এর প্রকৃত তথ্য জানা যেমন জরুরি এবং একই সঙ্গে দ্রুত এ তথ্যগুলো প্রকাশ করা উচিত।’
২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় ধান, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ আটটি কৃষিপণ্যের প্রকৃত উৎপাদন বের করার একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে সেই উদ্যোগ কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রায় বছরখানেক সময় পেরিয়ে গেলেও একটি কাগুজে চিঠির বাইরে এ নিয়ে কোনো কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের সক্ষমতায় ঘাটতি আছে। তবে আমরা কৃষির উন্নয়নে ২৫ বছরের একটি পরিকল্পনা করছি, সেখানে এটা নিয়ে কাজ করা হবে।’ তিনি বলেন, শুধু উৎপাদনের প্রকৃত হিসাবই নয়, আমাদের হিউম্যান-নন হিউম্যান খাদ্যের প্রকৃত চাহিদাও নিরূপণ করতে হবে।
বিবিএস যেভাবে উৎপাদন তথ্যের হিসাব করছে : বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তিন মৌসুমের চাল, পাট, গম, ভুট্টা ও আলু উৎপাদনের হিসাব তৈরি প্রদান করে জাতীয়ভাবে। চালের উৎপাদনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সার্ভে করে। এর জন্য প্রথমে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের পাঁচজন করে কৃষকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে, যাদের কাছ থেকে মূলত কী পরিমাণ জমিতে ফসলের চাষ হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এরপর প্রতিটি জেলায় ৫০টি স্পটের জমি থেকে ধান উৎপাদনের নমুনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে আবার জাতভিত্তিক নমুনা আলাদা করা হয়।
এবার জমির হিসাব এবং নমুনা ফসলের উৎপাদনের যে হিসাব পাওয়া যায়, সেটাকে সার্ভের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করে চূড়ান্ত হিসাব তৈরি করা হয়। এখানেও একটা ইউনিয়নের শত শত কৃষকের মধ্যে মাত্র পাঁচজন কৃষকের কাছ থেকে ফসল চাষের তথ্য নেওয়া হয় যার মধ্য দিয়ে প্রকৃত তথ্যে পাওয়ার সুযোগ সীমিত।
বিবিএসের এ হিসাবেও গত পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে জমির পরিমাণ ও উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে বলেই উঠে এসেছে। তবে বিবিএসের কর্মকর্তারাই বলছেন, সার্ভে মেথড প্রয়োগ করলেও এ হিসাব পদ্ধতির আরও আধুনিকায়ন প্রয়োজন। হিসাবের আধুনিকায়ন করা হলে প্রকৃত তথ্যের আরও বেশি কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হবে।
কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বিবিএসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিবিএসের ফসলের উৎপাদনের হিসাব চূড়ান্ত করার কার্যক্রমে কৃষি, খাদ্য ও বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পারসো কর্মকর্তারা কাজ করেন। মাঠপর্যায়ের তথ্য পরবর্তী সময়ে টেবিলে বসে কাটাছেঁড়া করে চূড়ান্ত করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, সংস্থাটি একটি প্রকল্প নিতে যাচ্ছে। যে প্রকল্পের মাধ্যমে রিমোট সেন্সরিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের প্রকৃত তথ্য বের করতে কাজ করা হবে। যেখানে অত্যাধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার করা হবে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক সচিব রীতি ইব্রাহীম বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া ফসলের প্রকৃত তথ্য বের করার সুযোগ নেই। প্রযুক্তির পাশাপাশি দক্ষ জনবলও দরকার।’
Sharing is caring!