প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ছাত্রদের ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব পাবে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
ছাত্রদের ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব পাবে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার

Manual5 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

চলতি বছরের শেষ দিনে (৩১ ডিসেম্বর) ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা। তারা মনে করছে, গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরেই ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করা উচিত ছিল। তা না করায় আওয়ামী লীগের পক্ষের শক্তিগুলো মিডিয়ায়, বুদ্ধিজীবী পাড়ায়, সব জায়গায়– বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। এটি গণ-অভ্যুত্থানের লেজিটিমেসিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে! তাই তাদের জবাব দিতে ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচনা করে ২০২৪ সালের বিপ্লবের চেতনার অঙ্গীকারে ঘোষণাপত্র প্রকাশের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়করা।

Manual3 Ad Code

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ও তাদের লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটিতে থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন’ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। সে ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে ২৪-এর চেতনার পাশাপাশি আগের সব গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা।

ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের ঘোষণাপত্রে থাকতে পারে- এই ভূখণ্ডের মানুষ কয়েক শতাব্দী ধরে ঔপনিবেশিক আধিপত্য থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে এবং ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এরই মধ্যে, পাকিস্তান এই ভূখণ্ডের মানুষের প্রতি বৈষম্য করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, এই ভূখণ্ডের মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিহত করেছে এবং গৌরবময় ’৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ১৯৭২ সালের সংবিধান লাখ লাখ শহিদের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে এবং গণতন্ত্র ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার পথ প্রশস্ত করেছে এবং সামরিক শাসনব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক স্বার্থে সংবিধান সংশোধন রাষ্ট্রকে দুর্বল করেছে এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এসব উত্তাল যাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, জবাবদিহি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠান এবং বন্দোবস্তের ব্যর্থতা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা ১/১১-এ ক্ষমতা হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

Manual5 Ad Code

এ ১১টি দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে মুজিববাদী দৃষ্টান্তকে টিকিয়ে রেখেছে এবং শেখ হাসিনার প্রশ্নাতীত ক্ষমতা ও আধিপত্যের পথ প্রশস্ত করেছে। ঔপনিবেশিকবিরোধী সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও প্রতিশ্রুতি শেখ মুজিবুর রহমানের ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ ও ধর্মকে টিকিয়ে রাখার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

সামরিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন হয়ে ওঠে দুর্নীতিগ্রস্ত ও দমনমূলক ফ্যাসিবাদী মেকানিজমের জন্য সহায়ক।

বলপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং যে কোনো ভিন্নমত সাড়ে ১৫ বছর ধরে নৃশংস শক্তির লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল।

ঘোষণায় বলা হতে পারে, পিলখানা, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড ও প্রহসনমূলক নির্বাচন ও বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষ হত্যা রাষ্ট্রীয় যন্ত্র দিয়েই ঘটেছে। সংখ্যালঘু এবং নারীরা ফ্যাসিবাদী শাসনের অরক্ষিত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং তাদের প্রতি কোনো ন্যায়বিচার করা হয়নি।

২৪-এ ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১ হাজারের বেশি নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়। ৯ দফা ঘোষণা দিলে সরকার আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। পাশাপাশি বিগত দিনে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়।

Manual7 Ad Code

ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব দেওয়া বিষয়বস্তু নিয়ে কথা হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এক সমন্বয়কের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে নাগরিক কমিটির সংগঠক পদে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণাপত্রে আগামীর বাংলাদেশকে রূপক অর্থে হাজির করা হবে। বিশেষ করে ৪৭, ৭১, ৯০ সালের ধারাবাহিক সংগ্রাম এবং ১/১১ যে ব্যর্থ সেটেলমেন্ট- এসব বিষয় থাকবে। পাশাপাশি গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচার, যেগুলো সহ্য করতে হয়েছে দেশের মানুষকে, কেন আমাদের এই অভ্যুত্থান করা লাগল, এসব বিষয় থাকবে। এবং সেই আন্দোলনে আমাদের যে ত্যাগতিতিক্ষা এসব থাকবে। তারপর থাকবে বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার এবং বাংলাদেশে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।’ তবে তাদের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান এই ছাত্র নেতা।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code