প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এবার রেহাই পাচ্ছেন না বিয়ানীবাজারের মাথিউরা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ: এডিসির ক্ষোভ

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ
এবার রেহাই পাচ্ছেন না বিয়ানীবাজারের মাথিউরা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ: এডিসির ক্ষোভ

Manual7 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

 

এবার আর রেহাই পাচ্ছেন না বিয়ানীবাজারের মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আলীম। উচ্চ পর্যায়ের এক প্রশাসনিক বৈঠকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, আর্থিক দূর্নীতি ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় অস্বচ্ছতার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আর এতে প্রচন্ড ক্ষোভ ঝাড়েন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো: শামীম হোসাইন।

 

সূত্র জানায়, সম্প্রতি মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার সকালে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এর দপ্তরে উভয়পক্ষকে উপস্থিত হতে বলা হয়। সেখানে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম। বিশেষ করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সংখ্যা, কানাডা প্রবাসী মাদ্রাসার সহকারি মৌলভী মুহিবুর রহমানের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে অনিয়ম, ছাত্রীদের ওয়াসরুম নির্মানে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক বিল পরিশোধে দূর্নীতির বিষয়টি সামনে চলে আসে। অভিযোগকারীদের এসব প্রশ্নের উত্তরে তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনে চুপসে যান মাওলানা আলীম। পরবর্তীতে তাকে ১০দিনের সময় বেঁধে দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এডিসি মো: শামীম হোসাইন।

তদন্তকালে উপস্থিত অভিযোগকারীদের একজন ছরওয়ার হোসেন জানান, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় শতাধিক। সেখানে অধ্যক্ষ-এডিসিকে ৫শ’ শিক্ষার্থীর কথা বলেছেন। তখন এডিসি সকল শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায় করা বেতন-ফি’ রেজিষ্ট্রার দেখতে চান। মাদ্রাসা কর্তৃক পরিশোধিত একটি বৈদ্যুতিক বিলে ২২ হাজার টাকার স্থলে ৩২ হাজার টাকা পরিশোধের যৌক্তিক প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়াও প্রবাসী শিক্ষকের অনুকুলে বেতন-ভাতা প্রদানও বেআইনী। ছরওয়ার হোসেন আরোও জানান, সরকারিভাবে ছাত্রীদের জন্য ওয়াসরুম নির্মাণে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনুদানে ওই ওয়াসরুম নির্মাণ করেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আলীম কোন সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি।

 

তদন্তের এমন পর্যায়ে অধ্যক্ষ আলীমকে ১০দিনের মধ্যে মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের সঠিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ অভিযোগের স্বপক্ষে সকল প্রমাণাদি দাখিলের নির্দেশ দেন এডিসি মো: শামীম হোসাইন। তিনি বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা অনেক বিষয় সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

Manual7 Ad Code

 

প্রসঙ্গত, বিয়ানীবাজারের মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় এরকম অসংখ্য দূর্র্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ বছরের পর বছর থেকে স্থানীয় মানুষের মুখে-মুখে। কিন্তু অতি রাজনীতির কারণে কখনো এসব অভিযোগ আমলে নেননি তদারকি সংশ্লিষ্টরা। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাদ্রাসা বিভাগের সচিব, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সিলেটের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে মাথিউরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

 

Manual3 Ad Code

অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: আব্দুল আলীম মাত্র ১০বছর বয়সে দাখিল পাশ করেছেন মর্মে নিয়োগকালীন সময়ে তার সনদ জমা দিয়েছেন। তার জমা দেয়া সনদ অনুযায়ী, ১৯৬৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করে ১৯৭৯ সালে দাখিল পাশ করেন। ২০১৯ সালের পরে মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের আর আনুষ্টানিক কোন নিরীক্ষা হয়নি। নিরীক্ষা কমিটির প্রতিবেদনে অনিয়ম ধরা পড়ার পর অধ্যক্ষ আব্দুল আলীমকে ৭ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দেয়ার আহবান জানানো হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ তা আমলেই নেননি।

Manual8 Ad Code

 

এসব বিষয়ে অধ্যক্ষ মো: আব্দুল আলীম জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্য নয়। ১০ বছর বয়সে দাখিল পাশের বিষয়টি মন্ত্রনালয় তদন্ত করেছে।

Manual6 Ad Code

সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ মো: আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, অধ্যক্ষ আব্দুল আলীমের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি আমাদের অফিসও অবগত। দ্রুতই এসব বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code