প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

১৭ বছর আগের আক্ষেপ কাটাতে পারবে এবার পাকিস্তান

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ
১৭ বছর আগের আক্ষেপ কাটাতে পারবে এবার পাকিস্তান

Manual5 Ad Code

স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান, এই তিন দেশে ক্রিকেট শুধু একটা খেলা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষের ভালোবাসা ও আবেগ। তাই এই দেশগুলো নিজেদের ঘরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজন করার পাশাপাশি মুখিয়ে থাকে আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে। সেখানে ভারত-বাংলাদেশ তুলনামূলক এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তান গেল দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ছিল পিছিয়ে। মধ্যে একবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করার সুযোগ পেলেও অন্য দেশগুলো নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার কারণে খেলতে আসতে আপত্তি জানায়, পরে ঐ আসরটি বাদ দিয়ে দেয় আইসিসি। এরপর গেল ১৭ বছরে তারা আর আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেনি তারা।

Manual5 Ad Code

সব মিলিয়ে ২৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছে তারা একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য। অবশেষে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে তাদের এই অপেক্ষা ঘুচতে যাচ্ছে। যদিও এই টুর্নামেন্টটিও ভারতের কারণে অনুষ্ঠিত করতে হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। তবে পাকিস্তানে যেই কয়টি ম্যাচ আয়োজন হবে সবকটির জন্য কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। কারণ এই আসর দিয়েই আইসিসির কাছে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করার সুযোগ পিসিবির।

পাকিস্তানে সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্ট হয়েছিল ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের সঙ্গে ওই আসরের যৌথ আয়োজক ছিল তারা। তারপর ২০০৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ট্রফির ষষ্ঠ আসরের আয়োজক হয়েছিল পাকিস্তান। সব কিছু ঠিক ছিল, সূচি ভেন্যু সবই নিশ্চিত ছিল। টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতিও নিয়েছিল পিসিবি। অপেক্ষা ছিল খেলা মাঠে গড়ানোর।

Manual8 Ad Code

তবে আসরটি শুরু হওয়ার সপ্তাহ তিনেক আগে থেকে শুরু হয় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া নিয়ে আপত্তি জানানো। নিজেদের নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখিয়ে ঐবার সবার প্রথম আপত্তি জানায় দক্ষিণ আফ্রিকা, তারপর একে একে এতে যোগ দেয় ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ সবাই, তাতে আইসিসি আসরটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়। এরপর নিরাপত্তা ইস্যু, রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তান থেকে ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।

Manual8 Ad Code

অবশ্য ঐ সময় টুর্নামেন্টটি বাতিল করার জন্যও আইসিসির কাছে যৌক্তিক কারণ ছিল। সেই সময় পাকিস্তানের মধ্যে অস্থিরতা চলছিল। উগ্রবাদীরা যেখানে সেখানে আক্রমণ চালাচ্ছিলো, তাতে অনেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছিলো। পরিস্থিতি ভয়াবহ দেখে আইসিসি বাধ্য হয়েছিল আসরটি স্থগিত করতে। সেই সময় আইসিসির তৎকালীন সভাপতি ডেভিড মরগান বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সহানুভূতি রয়েছে, তবে কিছু দলের নিরাপত্তা উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে না পারার কারণে টুর্নামেন্ট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এক বছর পর পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে।’

তবে পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টের স্বাগতিক হওয়ার অধিকার হারাতেও পারে জানিয়ে মরগান বলেছিলেন, ‘যদি পরবর্তী সময়ে কোনো দল নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, তবে আইসিসি অন্যত্র টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’ হয়েছিলও তাই, ঐ আসরটি ২০০৯ সালে আয়োজিত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়।

তারপর অনেক বছর আর পাকিস্তানে কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট গড়ায়নি। এর অনেক বছর পর পাকিস্তানে ফিরে ক্রিকেট। দুই বছর আগে এশিয়া কাপ দিয়ে তারা কোনো আন্তর্জাতিক আসর আয়োজন করেছিল। আর এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে পাকিস্তানে পুরোদমে ফিরছে ক্রিকেট। বিশ্ব ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখানোর মওকাও এই আসর। যদিও ভারত এই আসর খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না বলে কিছুটা অপূর্ণতা থাকছেই। তার পরও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন পাকিস্তানের জন্য বিরাট কিছু।

Manual7 Ad Code

আর সুযোগ কাজে লাগাতে আর নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছে শহর জুড়ে। আর স্টেডিয়াম এলাকা আর টিম হোটেল তো ইতিমধ্যে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে। কোনো রকম বিপদ কিংবা ঝুঁকি নিতেই চাচ্ছে না এবারের আসরে। ভালো ভাবে এই আসর শেষ করতে পারলেই সামনে আরও অনেক বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ লুফে নিতে পারবে তারা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code