প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটের একের পর এক মিলছে গ্যাসের ভান্ডার, বাড়ছে নতুন সম্ভাবনা

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৫, ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

Manual5 Ad Code


সিলেটে একের পর এক মিলছে গ্যাসের আধার। চলতি বছরে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন পাঁচটি কূপে মিলেছে গ্যাসের সন্ধান। নতুন কূপের পাশাপাশি পুরনো পরিত্যক্ত কূপেও পাওয়া গেছে গ্যাসস্তর। ফলে দেশের গ্যাস ভান্ডারে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে আগামী বছরের মধ্যে বর্তমানের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

Manual8 Ad Code

সিলেটে গ্যাস প্রাপ্তিতে সর্বশেষ সুখবর আসে গত ২২ অক্টোবর। ওইদিন এসজিএফএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের পরিত্যক্ত ৭ নম্বর কূপের সংস্কার কাজ শেষে দুটি স্তরে বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, ৭ নম্বর কূপের ১ হাজার ২শ’ মিটার গভীরে গ্যাস পাওয়া গেছে। প্রতিদিন ওই স্তর থেকে ৭-৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামুলকভাবে উত্তোলন করা হচ্ছিল। সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে জাতিয় গ্রিড লাইনে ওই কূপের গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। ওই কূপ থেকে দৈনিক ৬-৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রিড লাইনে সরবরাহের ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

Manual2 Ad Code

মিজানুর রহমান আরও জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের সবকটি কূপ মিলিয়ে বর্তমানে দৈনিক ৬০-৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। এর সাথে নতুন করে যুক্ত হবে ৭ নম্বর কূপের ৭-৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

Manual3 Ad Code

এসজিএফএল সূত্র জানায়, বর্তমানে উৎপাদনে থাকা কোম্পানির আওতাধীন কূপগুলো থেকে দৈনিক ৬০-৭০ মিলিয়ন গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হলেও চলতি বছরের মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সরবরাহের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে। আর সরকারের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ২০২৫ সালের মধ্যে এসজিএফএল জাতীয় গ্রিড লাইনে দৈনিক ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। যা দেশের গ্যাস সংকট নিরসনে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

Manual6 Ad Code

সূত্র আরও জানায়, গত এক বছরে এসজিএফএল’র আওতাধীন পাঁচটি কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে কোন কূপ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। নতুন করে সংস্কার ও খনন করে মিলেছে গ্যাসের নতুন স্তর। চলতি বছরের ২৪ মে খনন কাজ শেষে এসজিএফএল’র মালিকানাধীন কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ৮ নম্বর কূপে ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৩ হাজার ৪৫৫ হাজার ফুট গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। কূপটি থেকে আগামী ২০ বছর গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে ওই সময় জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি এসজিএফএল’র আওতাধীন রশিদপুরের ২ নম্বর কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। ওই কূপে মজুদের পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তারও আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরনো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাসপ্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে এসজিএফএল। এর চারদিন আগে গত বছরের ২২ নভেম্বর কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। ওই কূপ থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে) প্রথম গ্যাসের সন্ধান মিলে ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে। এরপর এই অঞ্চলে আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএল’র আওতাধীন পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো- হরিপুর, রশিদপুর, ছাতক, কৈলাশটিলা ও বিয়ানীবাজার। এর মধ্যে টেংরাটিলায় দুর্ঘটনার পর ছাতক গ্যাসক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বাকি চারটি গ্যাসক্ষেত্রের ১৪টি কূপ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code