প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারের ৯শ’ মসজিদে তারাবির প্রস্তুতি

editor
প্রকাশিত মার্চ ১, ২০২৫, ০১:১৪ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারের ৯শ’ মসজিদে তারাবির প্রস্তুতি

Manual1 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

ধর্ম এবং সাম্যের এক নন্দিত জনপদ বিয়ানীবাজার। এই উপজেলার সর্বত্র সুরম্য মসজিদের ছড়াছড়ি। চোখ জুড়ানো এসব মসজিদ থেকে যথাসময়ে ভেসে আসে পবিত্র আজানের সুললিত ধ্বনি। মুয়াজ্জিনগনের আল­াহু আকবার ধ্বনি শোনার পর মুসল্লিরা মসজিদমুখি হন। ইবাদত-বন্দেগি শেষে দলবেধেঁ মুসলি­রা যখন বের হন তখন আশপাশে এক অভূতপূর্ব পরিবেশ বিরাজ করে।

আরবি বছেরর হিসেবে নবম মাস হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। প্রতি বছর ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা রোজা পালনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
আর এর বিশেষ কারণ হচ্ছে এ মাসের ফজিলত অন্য মাসের চেয়ে হাজারগুণ বেশি।

রমজান একটি ফারসি শব্দ। রোজার আরবি শব্দ হচ্ছে সত্তম যাকে বহু বচনে সিয়াম বলা হয়। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিয়ানীবাজার উপজেলার মসজিদগুলোতেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মধ্যে উৎসবমুখর আবহ লক্ষ করা গেছে। খতম তারাবির জন্য প্রস্তুত হয়েছেন অন্তত: দেড় হাজার হাফেজ। ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে এসব হাফেজরা ফজিলতপূর্ণ তারাবির নামাজ জামাতে পড়াবেন। যে কারণে বেশ কয়েক মাস আগে থেকে তারা প্রস্তুতি শুরু করে তারাবি পড়ানোর জন্য নিজেদের তৈরি করে নিয়েছেন।

স্থানীয় একটি মসজিদের হাফেজ তৈয়বুর রহমান বলেন, গত ১০ বছর ধরে তারাবি নামাজ পড়াই। ইনশাল্লাহ এ বছরও তারাবি পড়াবো। যার জন্য প্রায় এক মাস ধরে আমি প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম তথা কোরআনে হাফেজ হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবো।

Manual5 Ad Code

মসজিদ হলো মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র। এখানে প্রার্থনা করা ছাড়াও শিক্ষা প্রদান, তথ্য বিতর়ণ ও বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়। মসজিদের উৎকর্ষের ক্ষেত্রে সেই সপ্তম শতাব্দির সাদাসিধে খোলা প্রাঙ্গণবিশিষ্ট মসজিদে কাবা বা মসজিদে নববী থেকে বর্তমানে এর প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে এবং এখন অনেক মসজিদেরই সুবিশাল গম্বুজ, উঁচু মিনার ও বৃহদাকার প্রাঙ্গণ দেখা যায়।

 

Manual8 Ad Code

বিয়ানীবাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৯শ’ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২০ সালে পরিচালিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জরিপ অনুযায়ি, উপজেলায় ৫১২টি জামে মসজিদ, ২০১টি পাঞ্জেগানা এবং ৩৫টি মোকাম বিদ্যমান রয়েছে। তবে জরিপের বাইরেও শতাধিক মসজিদ নতুনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। কিছু মসজিদ আবার গণণায় বাদ পড়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্থানীয় সুপার ভাইজার আব্দুর রহমান জানান, বিয়ানীবাজারে প্রতœতাত্বিক মসজিদের হালানাগাদ তথ্য তার কাছে নেই। তবে অতি প্রাচীণ মসজিদ রয়েছে অন্তত: অর্ধশ’ত। এগুলোর একেকটির বয়স হবে শ’-ত বছরের উপরে। কোনটি আবার দুই শতাব্দীর পুরনো। তবে প্রাচীণ মসজিদের ইতিহাসে নাম থাকলেও স্থাপনা এবং ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে বিয়ানীবাজার।

 

জানা যায়, উপজেলার প্রাচীণ মসজিদগুলোর মধ্যে হযরত গোলাবাহ (র) ইমামবাড়ি মসজিদ, সৈয়দ শাহ (র) জামে মসজিদ, হায়দর শাহ (র) জামে মসজিদ, বাহাদুরপুর পুরাণ বাড়ি জামে মসজিদ, জায়গীরদার মসজিদ, মেওয়া পূর্ব মহল­া জামে মসজিদ, ভূট্রো বাড়ি জামে মসজিদ, পাতন বাঘমারা জামে মসজিদ, পাতন পোস্ট অফিস মসজিদ, দক্ষিণ বাজার মোকাম মসজিদসহ আরো অন্তত: ৪৫টি মসজিদ। এগুলো নির্মাণের সময় বহ আগে শ’-ত বছর ছাড়িয়েছে।

প্রায় মাসখানেক পূর্বে হঠাৎ করে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বিয়ানীবাজারের প্রবেশদ্বার জায়গীরদার মসজিদের ছবি ফেসবুক ছড়িয়ে তাতে লিখে-স্থানীয় মুসলমানদের আবেগ অনভ‚তি এবং প্রাচীণ নিদর্শনের কথা। এই ছবিটি বেশ সাড়া ফেলে।

Manual7 Ad Code

বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আলম হৃদয় বলেন, লাউতা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর পুরাণ বাড়ি জামে মসজিদটি বর্তমানে প্রতœতাত্বিক অধিদপ্তর দেখাশোনা করে। তারা কিছুদিন পূর্বে মসজিদের প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী বজায় রেখে কিছুটা সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে। ১২৩৮ বাংলা সনে এটি নির্মাণ করা হয়।

উপজেলার আরো বেশ কয়েকটি প্রাচীণ মসজিদ-মোকাম নিয়ে স্থানীয় জনমনে নানা চাঞ্চল্যকর আলোচনা প্রচলিত আছে।

Manual6 Ad Code

 

কালক্রমে বিয়ানীবাজারের মসজিদগুলো প্রতœতাত্বিক জৌলুশ হারালেও অনুমান করা যায়, মসজিদকেন্দ্রিক ধর্মাচার পালনে কতটা সমৃদ্ধ ছিল প্রাচীন পঞ্চখন্ড অধুনা বিয়ানীবাজার জনপদ।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code