প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে গতি নেই

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ণ
সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে গতি নেই

Manual3 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual5 Ad Code

 

সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প গতি পাচ্ছেনা। সিলেট সদর থেকে শেওলা পর্যন্ত মাত্র ৪৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৭২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অতিরিক্ত প্রকল্প ব্যয়, পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের কাটঁছাট, ডলার সংকট, ঠিকাদার নিয়োগ, জমি অধি:গ্রহণসহ নানা কারণে প্রকল্পটি প্রায় থমকে আছে। এ মহাসড়কের দৈর্ঘ্য হবে মাত্র ৪২ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার। প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে ব্যয় ৯০ কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ২৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে ২ হাজার ৬০৪ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

Manual8 Ad Code

সওজ জানায়, সিলেট জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রভৃতি এলাকার ওপর দিকে যাওয়া সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা হবে।

সিলেট সদর থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত যাত্রী ও মালবাহী পরিবহনের চলাচল দ্রুত এবং সহজ করা, মহাসড়কের উভয় পাশে আলাদা সার্ভিস লেন তৈরি করে স্থানীয় যানবাহন ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিপন্ন বা দুর্বল সড়ক ব্যবহারকারীদের (বয়স্ক, নারী, শিশু ও সক্ষমতাহীন ব্যক্তি) জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমানো এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম লক্ষ্য। একই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত বা বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) করিডোর, সাসেক (সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন) করিডোর, এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডোর, বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার) করিডোর ও সার্ক করিডোরের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং তা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখা।

সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কটি বিসিআইএম করিডোর এবং সাসেক করিডোর-৫-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চীনের ইউনান প্রদেশ, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকের ‘সেভেন সিস্টার্স’র মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে বিসিআইএম করিডোর। সাসেক করিডোর-৫ মধ্য ও উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এ প্রকল্প বিবিআইএন কার্গো রুটের অন্তর্ভুক্ত একটি উপ-প্রকল্পও। এই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক করিডোরগুলো বেশ কয়েকটি স্থল ও সমুদ্রবন্দরে আন্তর্জাতিক যান চলাচল নিশ্চিত করবে। করিডোরগুলোর মাধ্যমে পণ্য ও যাত্রীদের আন্তঃসীমান্ত চলাচল প্রসারিত হবে। যাত্রী ও পণ্যবাহী যানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও বিষয়টিও প্রকল্পে উঠে এসেছে।

প্রকল্প প্রস্তাবে পারফরম্যান্স গ্রেড (পিজি) বিটুমিন ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের বিটুমিন তৈরি হয় না। দেশের কোনো ঠিকাদারের এ ধরনের বিটুমিন ব্যবহার করে রাস্তা বানানোর অভিজ্ঞতা নেই। ফলে দরপত্র আহ্বান করা হলে স্বাভাবিকভাবেই বৈদেশিক পরামর্শকদের কথা অনুযায়ী ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। তখন বিদেশি ঠিকাদার নিয়োগ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। সড়ক ও জনপথের কিছু কর্মকর্তার বাসনায় এ বিটুমিন ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

পরামর্শকরা যে বিটুমিনের কথা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে তা বিদেশ থেকে আনতে হবে। ডলারের এ সংকটকালে এই বিটুমিন আমদানি করা হলে আরও সংকট তৈরি হবে। অর্থায়নকারী সংস্থা বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ইচ্ছা করেই সড়কের এমন ডিজাইন করেছেন। আর ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে এ ধরনের বিটুমিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ফজলে রাব্বি জানান, সিলেট অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে বন্যা এবং ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে এ ধরনের বিটুমিনের ব্যবহার অযৌক্তিক। পিজি বিটুমিনের রাস্তা ভারী বৃষ্টিপাতের এলাকায় পাঁচ বছরের বেশি স্থায়ী হবে না।

Manual8 Ad Code

 

আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ রাস্তায় জমি অধিগ্রহণ বাদ দিলে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হওয়ার কথা ৭০ কোটি টাকা। যদি সাধারণ কংক্রিটের রাস্তাও করা হয় তাহলেও কিলোমিটারে খরচ ৪০ কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জের একই ধরনের রাস্তায় কংক্রিট ব্যবহার করে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে মাত্র ৪০ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code