প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন: কেউ খোঁজ নিচ্ছেনা বিয়ানীবাজারে নিহত তারেকের পরিবারের

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ১০:১২ পূর্বাহ্ণ
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন: কেউ খোঁজ নিচ্ছেনা বিয়ানীবাজারে নিহত তারেকের পরিবারের

Manual1 Ad Code

পরিবারের সাথে নিহত তারেক আহমদ- ফাইল ছবি/

Manual3 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

বয়স ও অসূস্থতার সঙ্গে লড়াই করে সর্বদা জয়ী হওয়া ইনারুন বেগমকে এবার পরাজয় মেনে নিতে হচ্ছে অভাব ও দারিদ্র্যের কাছে। তাই দুঃখ-দুর্দশাই এখন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ তারেকের মা ইনারুন বেগমের। অসূস্থ স্বামী রফিক উদ্দিন ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখেই কাটছিল তার দিনগুলো। কিন্তু হঠাৎ করে আসা ঝড় তছনছ করে দেয় ইনারুন বেগমের সুখের সংসারকে।

 

Manual2 Ad Code

৮ মাস আগে স্বামীকে হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে গিয়ে প্রাণ হারান তার ছেলে তারেক আহমদ (২৯)। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে মা ইনারুন এখন দিশাহারা। কলিজার টুকরা ছেলেকে এভাবে হারাতে হবে তা কখনও স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। দিন-রাত শুধু ছেলের কথা মনে পড়ে। এই বুঝি তার ছেলে ফিরে এসে বলছে মা তুমি কোথায়। পৃথিবীর সব কষ্টের পাহাড় যেন বাসা বেঁধেছে তার বুকে। অসহায় এই জীবন আর কত বয়ে বেড়াবেন তিনি। স্বামী-সন্তান হারিয়ে তিলে তিলে যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে তার জীবন। নিহত তারেক সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মোল্লাপুর ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তারেক ছিলেন তৃতীয়। তারেকের বড় বোন মর্জিনার বিয়ে হয়েছে আগে।

 

অপর বোন তান্নি ম্যানেজমেন্ট (অনার্স) সম্পন্ন করেছেন। তান্নি বলেন, আমাদের বাবা মারা গেছেন আমরা এতটা কষ্ট পাইনি। তারেক আমাদের সব চাওয়া পূরণ করত। মায়ের ওষুধ থেকে শুরু করে সংসারের চাহিদা মিটত তার রোজগার থেকে। তারেক দুই বছর আগে বিয়ে করেছে। তার ১ বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে।

 

তারেকের বড় ভাই লায়েক বলেন, ৫ আগস্ট বিয়ানীবাজার শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ চলে। তারেকও আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। আমাদের পরিচিত কয়েকজন জানান ওইদিন দুপুরের কোনো এক সময় পুলিশ তারেককে ধরে নিয়ে যায়। সারাদিন পুলিশ-জনতার সংঘর্ষ চলায় পুলিশের সঙ্গে আমরা কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে পুলিশ আর আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে রায়হান ও ময়নুল নামের দুজন মারা যাওয়ার খবর সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই সংবাদে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আমার পরিবার। রাতের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারেকের খোঁজ নেন আত্মীয় স্বজন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর ৬ আগস্ট ভোরে বিয়ানীবাজার থানার সীমানা দেয়ালের কাছে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তারেককে পাওয়া যায়। তারেকের কপালে একটি এবং দুই পায়ে গুলির চিহ্ন ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তারেককে মৃত ঘোষণা করেন।

 

Manual5 Ad Code

তারেক শহীদ হওয়ার ৫ মাস পেরিয়ে গেছে। প্রশাসন বা ছাত্র সমন্বকদের পক্ষ থেকে কেউ এখনও খোঁজ না নেওয়ায় হতাশ তাদের পরিবার। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি তারা। স্থানীয় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী প্রথমদিকে পৃথকভাবে তাদের খোঁজখবর নিলেও এখন আর কেউ কাছে ভিড়েননা।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code