প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইমু-সাব্বির

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১০, ২০২৫, ০১:০৫ অপরাহ্ণ
ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইমু-সাব্বির

Manual6 Ad Code

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

মেয়েলি অঙ্গভঙ্গিতে কনটেন্ট তৈরি করে সারা দেশে আলোচিত ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার তরুণ কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইমু ও সাব্বিরের বিরুদ্ধে সমকামিতাকে উৎসাহিত অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে স্থানীয় আলেম-উলামাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়েছেন ইমু ও সাব্বির। এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাদ জোহর মুক্তাগাছা উপজেলা সদরের শহীদ স্মৃতি কলেজ সংলগ্ন মসজিদে গিয়ে স্থানীয় আলেম-উলামাদের কাছে এই মুচলেকা দেন তারা। এ সময় ক্ষমা প্রার্থনা করে ইমু ও সাব্বির ভবিষ্যতে মেয়েলি অঙ্গভঙ্গিতে আর কোনো বিতর্কিত ভিডিও করবে না মর্মে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এতে স্থানীয় মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমীসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Manual1 Ad Code

এর আগে সম্প্রতি ইমু ও সাব্বিরের কনটেন্টে সমকামিতাকে সমাজে উৎসাহিত করা হচ্ছে অভিযোগ করে গত ৬ এপ্রিল ইসরায়েলবিরোধী সমাবেশের মাইকে বক্তব্য দেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমী। এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা মুক্তাগাছার হিন্দু, মুসলিম এবং অন্যান্য জাতি মিলেমিশে আছি। কিন্তু এই সমাজটাকে কলুষিত করার জন্য ইমু ও সাব্বির নামে দুই যুবক যে জঘন্য অপরাধ করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি এই সমকামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক। এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ক্ষমা প্রার্থনা করে মুচলেকা দেন ইমু ও সাব্বির।

 

জানা যায়, মুক্তাগাছা পৌর শহরের সুপারি বাগান এলাকার বাসিন্দা জলিল শেখের ছেলে ইমু ইসলাম (২৫) এবং আজাহার আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (২৮) আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তারা সর্ম্পকে আপন মামা-ভাগ্নে। এর মধ্যে সাব্বির মামা এবং ইমু তার ভাগ্নে। ছোটবেলায় সাব্বিরের মায়ের মঙ্গে বাবা আজাহার আলীর দাম্পত্য বিচ্ছেদ হওয়ায় শৈশব থেকে তারা একসঙ্গে বসবাস করে আসছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইমু ইসলাম।

Manual7 Ad Code

 

তিনি বলেন, আমার মামা সাব্বির ইসলাম শারীরিক গঠনে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি মোটা। ফলে সংসারের অভাব-অনটনসহ নানা কারণে সাব্বির মামা অনার্স তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত লেখাপড়ে করে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। এই অবস্থায় সংসারের দুঃখ ঘুচাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দীক্ষা নিয়ে ২০২০ সালে আমি মামাকে সঙ্গে নিয়ে কনটেন্ট তৈরি শুরু করি। এর মধ্যে মেয়েলি অঙ্গভঙ্গিতে করা বেশিরভাগ কনটেন্ট ব্যাপক সাড়া জাগায়। এ নিয়ে বর্তমানে আমরা স্বচ্ছলভাবে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছি।

Manual1 Ad Code

ইমু বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে বসবাস করি। সমাকামিতাকে প্রমোট করার কোনো সুযোগ বা ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা সামাজিকভাবে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করে আসছি, এ ধরনের কোনো অভিযোগ কেউ করতে পারবে না। তবে দুঃখ হলো আমাদের যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে সতর্ক করা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের সতর্ক না করে সরাসরি প্রকাশ্যে জনসম্মুখে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদেরও প্রাণের ভয় আছে। জীবনযাপনের জন্য আমরা কনটেন্ট ক্রিয়েট করি, মানুষকে বিনোদন দেই। এটা ছাড়া আমাদের সংসার চলবে না। কিন্তু এতে আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নেই। দর্শকরা আমাকে মেয়েলি অভিনয়ে চিনেছে। তারা আমাকে এভাবেই চায়, এজন্যই আমি জনপ্রিয়তা পেয়েছি। এখন নতুন পরিচয়ে কনটেন্টে জনপ্রিয় হওয়া অনেক কঠিন কাজ।

Manual4 Ad Code

মুচলেকা নেওয়া মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমী বলেন, ইমু ও সাব্বির তাদের ভুল বুঝতে পেরে একটি মুচলেকা লিখে মসজিদে এসে তা পাঠ করেছে। আমার হাত ধরে শপথ করেছে যে তারা মেয়ে সেজে আর ভিডিও করবে না। আমরাও তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code