স্টাফ রিপোর্টার:
পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) গোলাম সাদেক দস্তগীরকে হাত উঁচিয়ে গুলি না করতে বলেছিলেন সেখানকার স্থানীয় দৈনিক একাত্তরের কথার ফটোসাংবাদিক মো. মোহিদ হোসেন। তারপরও পুলিশ গুলি করে। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয় সিলেটের সাংবাদিক এ টি এম তোরাব। সেদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ তোরাবকে নেয়া হলে, আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের বাধায় তাকে সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইবনে সিনা হাসপাতালে মারা যান সাংবাদিক এ টি এম তোরাব।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এদিন ট্রাইব্যুনালে দেয়া জবানবন্দিতে ৩০তম সাক্ষী হিসেবে এসব কথা বলেন ফটোসাংবাদিক মোহিদ হোসেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই সিলেটে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান মোহিদ হোসেন।
জবানবন্দিতে মোহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি হাত উঁচিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বলছিলাম, দস্তগীর ভাই (এডিসি), আমরা সাংবাদিক, আমাদের গুলি কইরেন না। তারপরও পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকে।’
জবানবন্দিতে মোহিদ হোসেন বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই সারা দেশে বিএনপির গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি ছিল। এর অংশ হিসেবে সিলেটের মধুবন পয়েন্টের কাছে অবস্থিত কালেক্টরেট জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর একটি গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যান।
১৯ জুলাইয়ের আগে আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং জানাজা শেষে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি জিন্দাবাজারের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ পেছন দিক থেকে অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করে। তিনি ও তার সহকর্মী তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পুলিশ তাদের (সাংবাদিকদের) লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছিল বলে উল্লেখ করেন মোহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে আমার সহকর্মী দৈনিক জালালাবাদ ও দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার ফটোসাংবাদিক আবু তোরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে বসে পড়ে। তাকে আমি রিকশায় করে এবং পরবর্তী সময়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন চিকিৎসায় বাধা দেওয়ায় তাকে বেসরকারি ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সে মারা যায়।’ পুলিশের সাবেক এডিসি সাদিক কাউসার দস্তগীর, কোতোয়ালি থানার সাবেক এসি মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মহিউদ্দিনসহ আরও অনেকে গুলিবর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন মোহিদ হোসেন।
Sharing is caring!