প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্ম উপলব্ধির দিন

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ
একুশে ফেব্রুয়ারি আত্ম উপলব্ধির দিন

Manual4 Ad Code

ফারুক রেদওয়ান :
বছরের বারো মাসের মধ্যে ফেব্রুয়ারী মাস বাঙ্গালী জাতির জন্য অনন্য। আন্তার্জাতিক মহলের জন্য এ মাস সমাদৃত। এ মাস অনির্বান ও ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্ব পূর্ণ। এ ফেব্রুয়ারি মাসে মহান মাতৃভাষা বাংলাকে, রাষ্ট্র ভাষায় পরিণত করতে জাতি জেগে উঠেছিল। ১৯৫২ সালে এ মাসেই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। তখন থেকে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ‘একুশ তারিখ’ মাতৃ ভাষা দিবস শ্রদ্ধার সাহিত পালন হয়ে আসছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শুভ দিন এলেই এদিনের কথা বাংলাদেশের সর্বস্থরের জনগণের স্মৃতিপঠে উকি দেয়। তা জনগণ কায়মনো হৃদয়ে স্মরণ করে থাকে। কেননা একুশ মানে মাতৃভাষা, একুশ মানে বাংলা ভাষা, একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ মোদের অহংকার, আপন সংস্কৃতির দিন ও বুকের তাজা লাল রক্ত। রক্তের রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি বেদনা বিধুর হলেও গৌরবময় শ্রেষ্ঠ দিন। এ জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশ আন্তর্জাতিক ভাবে বাংলা ভাষাকে, দেশ ও জাতিকে সম্মান প্রদর্শন দেখাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে প্রতি বছর এদিন পালিত হচ্ছে মাসের ২১ তারিখ পালিত হচ্ছে। তা দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমাদের বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। তা কম কথা! তা ইতিহাসে বিরল। এভাবে এ সম্মান বিশ্বের অন্য কোন দেশ, জাতি ও ভাষায় পায় নি। কিন্তু খুবই লজ্জা ও পরিতাপের বিষয় আমরা আমাদের হীনমন্যতার ধরুন নিজের প্রিয় মায়ের ভাষাকে অনেক সময় উপেক্ষা করে থাকি। তা মূল্যায়ন করতে যদি না পারি, তবে আগামীতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? দুঃখ জনক হলে ও সত্যি, আমাদের আচার আচরণে জাতীয় পর্যায়ে ভাষা ও শহীদদের প্রতি যদি যথার্থ উপযুক্ত মর্যাদা দিতে পারিনা, তাহলে দূর্দশা পুহাতে হইবে বৈকি? তা লাঘব হতে বাংলা ভাষার প্রতি সর্বদা অনুরাগ দেখাতে হবে। জন্ম সূত্রে বাঁধা এ বাংলা ভাষাকে লালন ও ভাষার প্রতি মানষিক টান থাকতে হবে। শহীদদের ঋণ পরিশোধ হতে তাদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করা উচিত। ভাষা সৈনিক ও বাংলা ভাষার জন্য যে সকল শহীদান অমর হয়েছেন তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে প্রত্যেকের নাম করনে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলে বাংলাদেশের মানুষ আনন্দে আত্মহারা হবে। আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারে কাজ কর্মে চলনে বলনে অন্য ভাষা ব্যবহৃত না করে নিজস্ব সংস্কৃতি আকড়ে ধরে ভাষাকে সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে। মায়ের ভাষার যথপোযুগী ব্যবাহার নিশ্চিত হলে ভাষার প্রতি আমাদের মমত্ববোধ জন্মিবে। সামাজিকভাবে যে কোন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি, জিনিস পত্রের নাম রাখতে সতর্ক দৃষ্টি রাখা চাই। অন্য ভাষাকে কর্জ না করে, অপসংস্কৃতি বর্জন করে বাংলা ভাষার ঐতিহ্যকে পুণরুদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

Manual6 Ad Code

বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধির সোপানে দেখতে হলে সুষ্ট’ ও সুন্দর রুপ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। শুদ্ধভাবে লেখা-লেখির বাহনে ভাষাকে প্রাঞ্জল ও বলীয়ান করা চাই। ভাষাকে সবল ও সচল রাখতে হবে লিখনীর মাধ্যমে। এ ভাবে ভাষাকে প্রতিষ্টিত করে প্রতিটি ঘরে ঘরে বাংলা ভাষার স্পন্দন পৌছে দেওয়া সকলের দায়িত্ব। আফিস আদালতে অন্য ভাষা চালু না রেখে নিজ বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া কর্তব্য। এ শুভ দিনকে স্মরণ করে সফলতা বয়ে আনতে, আন্তর্জাতিকভাবে ভাষাকে প্রসারিত করতে শ্রমের বিকল্প নেই। আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা, তাই প্রতিনিয়ত বাংলায় কথা বালতে শেখতে ও চর্চা রাখলে স্বার্থক হবে। বাংলা ভাষার জন্য প্রকৃত গৌরব অর্জনে আমরা সফল হব। বাংলা ভাষা সার্বকালে সার্বজনীন ছিল এবং হবে। মায়ের মুখের ভাষা, আমাদের বাংলা ভাষা। রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই আন্দোলনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূচিত হয়েছিল। পরবর্তীতে এরই ফলশ্রুতিতে স্বাধীন হয়েছিল মাতৃভূমি বাংলাদেশ । স্বাধীনতার স্বাদ জনগণ উপলব্দি করেছিল একুশ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের আঙ্গিকে। আমাদের জাতীর সামনে এশুভ দিনের যদি উদয় না হত, হৃদয়ে আত্মউপলব্ধি না হত তা হলে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে দেরী ও বেগ পেতে হত। তাই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি দেশের অঙ্গনে ও বিশ্বের ইতিহাসে সর্ব শিখরে।
লেখকঃ কবি, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code