প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

কোয়েটায় বিরোধী দলের হরতালে গ্রেপ্তার ২৬০, অচল পুরো বেলুচিস্তান

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ
কোয়েটায় বিরোধী দলের হরতালে গ্রেপ্তার ২৬০, অচল পুরো বেলুচিস্তান

Manual4 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
পাকিস্তানের কোয়েটা ও বেলুচিস্তানের বিভিন্ন জেলায় বিরোধী জোটের ডাকা হরতালে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) অন্তত ২৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাম্প্রতিক আত্মঘাতী হামলার প্রতিবাদে ডাকা এ হরতালে পুরো প্রদেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

Manual8 Ad Code

পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। কোয়েটাসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সাড়িয়াব, বিমানবন্দর সড়ক, পশতুনাবাদ, নওয়া কিল্লি ও জিন্নাহ রোডে পুলিশ ব্যারিকেড সরাতে গেলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক স্থানে টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিরোধী জোট ‘তেহরিক-ই-তাহাফুজ-ই-আইন-ই-পাকিস্তান’-এর কর্মীরা সকাল থেকেই জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে পাথর ও ব্যারিকেড বসান। ফলে প্রদেশের সড়কপথে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তবর্তী চামান ও তাফতান শহরের বাণিজ্য কার্যক্রমও থমকে যায়। একটি ট্রাকও সীমান্ত অতিক্রম করতে পারেনি। তবে বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনে নিরাপত্তারক্ষীদের কঠোর নজরদারিতে কার্যক্রম চালু ছিল।

Manual4 Ad Code

কোয়েটায় ব্যবসা-বাণিজ্যও পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ রাখার পাশাপাশি বিরোধী দলের কর্মীরা ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোতে টহল দেয়, যাতে হরতাল কার্যকর থাকে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, যেমন পিকেএমএপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম জিয়ারাতওয়াল, সাবেক এমএনএ আবদুল কাহার ওয়াদান ও বিএনপি-মেঙ্গলের মীর নাসির আহমেদ শাহওয়ানিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এই বিক্ষোভে শিক্ষা কার্যক্রমেও প্রভাব পড়ে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অফিস খোলা ছিল। তবে যান চলাচল সীমিত থাকায় খুব অল্পসংখ্যক কর্মী অফিসে পৌঁছাতে পেরেছেন।

প্রাদেশিক অন্যান্য জেলায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। লোরালাই, ঝোব, সিবি, নাসিরাবাদ, খুজদার, কালাত, হারনাই, মস্তুঙ, হাব বেলা, খারান, নোশকি, কিলা সাইফুল্লাহ, তুরবত, পাঞ্জগুর, গওয়াদর ও ডেরা মুরাদ জামালিসহ বিভিন্ন শহরে হরতাল পালিত হয়। এসব এলাকায় আরও অন্তত ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বেলুচিস্তানের বাইরে খাইবার পাখতুনখোয়াতেও বিরোধী দলগুলো, এমনকি ক্ষমতাসীন পিটিআইও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর কোয়েটায় বিএনপি-মেঙ্গলের সমাবেশে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হন। ওই হামলার সময় পিকেএমএপির প্রধান মাহমুদ খান আছাকজাই, বিএনপি-মেঙ্গলের সভাপতি সরদার আকতার মেঙ্গলসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা অল্পের জন্য রক্ষা পান।

সোমবার সন্ধ্যায় কোয়েটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পিকেএমএপির লালা আবদুর রউফ, বিএনপির সাজিদ তারীন, এএনপির আসগর আছাকজাই, ন্যাশনাল পার্টির আসলাম বেলুচ, জামায়াতে ইসলামের জাহিদ আখতার ও পিটিআইয়ের দাউদ শাহ আছাকজাই একযোগে সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তারা অভিযোগ করেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা করছে।

Manual5 Ad Code

নেতারা ঘোষণা দেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রদেশের সব প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। আর ১৩ সেপ্টেম্বর জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠকে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করা হবে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code