প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

‘বেহেশতী ফুল তুমি সেখানেই ফুটে থেকো’

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২৪, ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ
‘বেহেশতী ফুল তুমি সেখানেই ফুটে থেকো’

Manual3 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
সাবেক গৃহশিক্ষিকা, গৃহশিক্ষিকার মা ও নানি তিন জন মিলেই হত্যা করে সিলেটের কানাইঘাটের পাঁচ বছরের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে। হত্যার পর মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেন তারা।

Manual5 Ad Code

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মাটিতে পুঁতে ফেলা লাশ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে গৃহশিক্ষিকার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার লাশ দেখতে পান স্বজনরা।

এ ঘটনায় শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বিবি ও নানি কুতুবজান বিবিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার কানাইঘাট (সার্কেল) অলক কান্তি শর্মা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Manual2 Ad Code

স্থানীয়রা জানান, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে মার্জিয়ার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধানে তল্লাশি চালান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালানোর এক পর্যায়ে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তাকে আটকাতে চাইলে তিনি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা কাদামাটি মাখা মুনতাহার লাশ দেখতে পান। পরে মার্জিয়ার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।

এদিকে মুনতাহা নিখোঁজের ঘটনায় তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে অনেকেই সন্ধান চেয়েছেন। তার মৃত্যুর খবর সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। শিশু মুনতাহার ছবি শেয়ার করে অনেকেই নিজেদের অনুভূতির কথা লিখছেন। শোবিজের অনেক তারকাও ছিলেন সেই কাতারে।

অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী রোববার (১০ নভেম্বর) মুনতাহার একটি ছবি ও অভিযুক্ত তিন খুনির ছবি শেয়ার করে তার ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, এদেরকে কি মানুষ বলা যায়? এতটুকু শিশুকে যারা খুন করে তাদের কিভাবে মানুষ বলি! তাহলে তারা আসলে কী! একজন নারী, যিনি একজন মা, সে কীভাবে এত নিষ্ঠুর হয়।

তিনি আরও লেখেন, আহা ফুটফুটে মুনতাহা, এমন গোলাপ কলি ফুটতে দিল না দৈত্যের দল। বেহেশতি ফুল তুমি সেখানেই ফুটে থেকো। তবে দুনিয়াতে তুমি তোমার বাবা মায়ের কাছে যে দোজখের আগুন ফেলে গেলে সে আগুন কোন শান্ত্বনায় নিভবে জানি না। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দিন।

এ অভিনেত্রী আরও লেখেন, এই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। গায়ের জোড়ে, নিজের জিদ তেজ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যারা মানুষ খুন করে বা করতে চায় তারা মানসিক বিকারগ্রস্ত। তারা হিংস্র। হিংস্র প্রাণী যেমন লোকালয়ে রাখা যায় না, তাদের হয় জঙ্গলে অথবা লোহার সিকের বেষ্টনীতে রাখা হয়, এই মানুষদেরও আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করে আটকে রাখা উচিত। মাথাটা আউলা লাগছে, এই নিউজটা নেওয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর সকালে মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন শামীম আহমদ। এরপর মুনতাহা প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায়। বিকেল ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে গিয়েও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। খেলার সাথীরাও মুনতাহার বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি।

Manual2 Ad Code

সে সময় ছোট্ট শিশু মুনতাহার সন্ধান দাতাদের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন অনেকেই। মুনতাহার সন্ধান এবং ‘অপহরণকারীকে’ ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন কয়েকজন প্রবাসী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারা এ ঘোষণা দেন। এ ছাড়া ফারমিস আক্তার নামের সিলেটের এক নারী সমাজকর্মী মুনতাহার সন্ধানদাতার জন্য একটি স্বর্ণের চেইন পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। তখনই পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ করেছিলেন, মুনতাহাকে অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code