প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ

editor
প্রকাশিত মার্চ ১৩, ২০২৫, ০৯:২০ পূর্বাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ

Manual8 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানিতে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারিতে পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধিতে প্রতিযোগী সব দেশকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধিতে শীর্ষ অবস্থানে এখন বাংলাদেশ।

Manual2 Ad Code

 

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী— যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করেছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এ রফতানি গত বছরের (২০২৪) জানুয়ারির তুলনায় ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির এই হার চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ শীর্ষ পোশাক রফতানিকারক দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

Manual6 Ad Code

 

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানোর ফলে দেশের তৈরি পোশাক খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে।’

 

তিনি এই গতি ধরে রাখতে পণ্যের বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

Manual2 Ad Code

 

মহিউদ্দিন রুবেল উল্লেখ করেন, এই প্রবৃদ্ধির ধারা বাংলাদেশের পোশাক রফতানির জন্য আশাব্যঞ্জক সম্ভাবনা তৈরি করছে এবং দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী হিসেবে আরও সুসংহত করছে।

 

অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকেরা ৭২০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছেন। গত বছরের জানুয়ারিতে তারা আমদানি করেছিলেন ৬০৩ কোটি ডলারের পোশাক। তার মানে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক আমদানি বেড়েছে সাড়ে ১৯ শতাংশ।

 

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এ বাজারে গত বছর তৈরি পোশাক রফতানিতে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের শেষে বড় প্রবৃদ্ধি না হলেও ইতিবাচক ধারায় ফেরে। সব মিলিয়ে গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে। এই রফতানি ২০২৩ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি ২৫ শতাংশ কমে ৭২৯ কোটি ডলারে নেমেছিল।

 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় বাজারটি নিয়ে নতুন করে সম্ভাবনার কথা বলেন বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। এতে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রয়াদেশ সরাবে। ফলে বাড়তি ক্রয়াদেশ বা অর্ডার পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বাংলাদেশের জন্য। এমনকি বিনিয়োগকারীরা চীন থেকে কারখানা সরিয়ে এখন অন্য দেশে নিতে আগ্রহী হতে পারেন। বিনিয়োগের সেই সুযোগ বাংলাদেশও নিতে পারে। অবশ্য বর্তমানে পোশাক রফতানিতে যে প্রবৃদ্ধি, তা মূলত দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় বাড়তি ক্রয়াদেশের প্রভাব।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৬০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করে চীন। এ রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। অপরদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভিয়েতনাম রফতানি করেছে ১৪৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এ রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি।

Manual8 Ad Code

অটেক্সার তথ্য মতে, গত বছরের শুরুতেই রফতানিতে ধাক্কা খায় বাংলাদেশের পোশাক খাত। ওই বছরের জানুয়ারিতে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এরপর মার্চে প্রবৃদ্ধি কমে আরও ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ৬১৩ দশমিক ৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৩৩ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার।

জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল বছরের অন্য যেকোনও মাসের চেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মোট পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধির পরও ২০২৩ সালের বেশিরভাগ মাসের তুলনায়ই তা কম ছিল। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে রফতানি প্রবৃদ্ধির ব্যবধান ছিল সামান্য, ০ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

তথ্য অনুযায়ী, বছরের শেষ প্রান্তিকে রফতানি প্রবৃদ্ধিতে গতি ফেরে। সেপ্টেম্বরে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ ও অক্টোবরে ছিল ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

তবে নভেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধির পরও ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম ছিল। যেখানে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, সেখানে গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ৬ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code