প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পিআর ও সংসদে উচ্চকক্ষ আপাতত হচ্ছে না

editor
প্রকাশিত জুলাই ২৮, ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
পিআর ও সংসদে উচ্চকক্ষ আপাতত হচ্ছে না

Manual7 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের অক্টোবরে রাষ্ট্র সংস্কারে গঠন করা হয়েছিল সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন। এই ছয়টি কমিশন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার পর ঐকমত্য কমিশন গঠন করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা চালাচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অনেক সংস্কার সুপারিশেই ঐকমত্য হতে পারেনি দলগুলো।

 

Manual8 Ad Code

বিশেষ করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কাঠামো এবং উচ্চকক্ষে সদস্য মনোনয়ন ও নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হলেও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। এ কারণে বহুল আলোচিত ভোটের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) সংসদ সদস্য নির্বাচন ও সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ আপাতত বাস্তবায়ন হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া নারীদের সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ও সরাসরি নির্বাচন নিয়েও সমঝোতা হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শেষ হলেও হয়নি সিদ্ধান্ত। সংবিধান সংশোধন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ধরন নিয়েও দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত। রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন নিয়েও পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে ডানপন্থি ও বামপন্থি দলগুলো। এমন প্রেক্ষাপটে দ্বিমত বা ভিন্নমত থাকা বিষয়গুলো বাদ দিয়ে শুধু শতভাগ ঐকমত্য তৈরি হওয়া সুপারিশগুলো নিয়েই জাতীয় সনদ তৈরির পক্ষে বিএনপিসহ অধিকাংশ দল।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো বিষয়গুলো নিয়ে একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা। জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ প্রণয়নের কথা বলা হলেও এটা এখনও চূড়ান্ত করা যায়নি। তবে কমিশন ইতিমধ্যে সনদের একটি খসড়া তৈরি করেছে। তাই জুলাই মাসেই জাতীয় সনদ ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে ১৬৬টি প্রস্তাবের একটি তালিকা তৈরি করে রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত গ্রহণ করে। গত ২০ মার্চ থেকে গত ১৯ মে পর্যন্ত চলা প্রথম পর্বের সংলাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোট অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরে। গত ৩ জুন শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্বের সংলাপে এ পর্যন্ত ১৯টি বৈঠক হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোটা দাগে নির্বাচন কমিশন গঠনে সর্বসম্মতভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়ে সবাই একমত হলেও এসবের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে মুখোমুখি অবস্থান। কয়েকটি দলের আপত্তির পরও ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হয় অধিকাংশ দল। তবে আলোচনা আটকে যায় সংসদের উচ্চকক্ষের ক্ষমতাকাঠামো ও নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অধিকাংশ দল উচ্চকক্ষে ভোটের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিলেও বিপক্ষে অবস্থান নেয় বিএনপিসহ কয়েকটি দল। তারা নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায়।

 

এমন পরিস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশন ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের বিকল্প প্রস্তাব করলেও তা সরাসরি নাকচ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ বেশির ভাগ দল। পরবর্তী সময়ে কমিশনের সংলাপে বিএনপিসহ পাঁচটি দল প্রস্তাব করেÑসংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপিসহ ২১টি দল ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে। কয়েকটি দল এমনও প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষেরই দরকার নেই। দীর্ঘ আলোচনায় নির্বাচিত পদ্ধতি প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবই বাদ যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ঐকমত্য কমিশন নিজেরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যদি উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করে তা হলে সেটার বিরোধিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে দলীয় ৩১ দফার আলোকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে তারা বলেছিলেন, যারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন, যাদের জাতি গঠনে অবদান আছে এবং যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতি গঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয় সে জন্য উচ্চকক্ষে তাদের প্রতিনিধি থাকবে। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয়, সেই আইডিয়া থেকেই তারা এই প্রস্তাব রেখেছিলেন। সেখানে তারা উচ্চকক্ষে ১০০ আসন রাখার কথা বলেছিলেন।

ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ‘অতিরিক্ত তত্ত্বাবধায়নমূলক’ একটি স্তর, যা সংসদের নিম্নকক্ষের বা সংসদে সরকারি দলের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ও একচ্ছত্র ক্ষমতা কমাবে। প্রস্তাবে উচ্চকক্ষকে শুধু সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তারপরও উচ্চকক্ষে বিল পর্যালোচনা, সাময়িকভাবে বিল আটকে রাখা ও সুপারিশ দেওয়ার সুযোগ ভালো আইন তৈরিতে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে, সেটা সম্ভব হবে না। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে তুলনামূলকভাবে বেশিসংখ্যক দলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে উচ্চকক্ষে। এমনকি নিম্নকক্ষে আসন না পেলেও ভোটের অনুপাতে কোনো কোনো দলের উচ্চকক্ষে আসন পাওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি দল পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনের বিপক্ষে। তারা নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে আসন বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছে। ফলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

Manual1 Ad Code

অন্যদিকে সংসদের উচ্চকক্ষের মতো নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো। বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। কমিশনের প্রথম প্রস্তাব ছিল, সংসদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০ করা হবে। ১০০ আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে শুধু নারীরা প্রার্থী হবেন। এতে ঐকমত্য না হওয়ায় কমিশন প্রস্তাব করে ২৫টির বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এমন দলগুলো অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বেশিরভাগ দল এ প্রস্তাব নাকচ করে।

Manual2 Ad Code

বিএনপি জানায়, নারী আসন ১০০ করতে একমত, তবে নির্বাচন হতে হবে বিদ্যমান পদ্ধতিতে অর্থাৎ কোনো দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যার অনুপাতে। জামায়াত জানায়, পিআর পদ্ধতিতে নারী আসন বণ্টন হলে তারা আসন বৃদ্ধিতে রাজি।

এ ছাড়া বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ‘একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না’ বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। যদিও এ সিদ্ধান্তে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর।

তাদের বক্তব্য হচ্ছে সংসদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধানমন্ত্রী ওই দলের প্রধান থাকতে পারবেন কি না তা ঠিক করবেন ওই দলের সদস্যরা। দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী করা যাবে না-এমন সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক।

Manual1 Ad Code

তবে কমিশনের দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোসহ ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নির্ধারণ ও ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ’ সংশোধনসহ অধিকাংশ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমা প্রদানের জন্য আইন প্রণয়ন, নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ, বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন ও উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐমমত্য হয়েছে দলগুলোর। আর সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে কমিশন।

রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন নিয়েও পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে ডানপন্থি ও বামপন্থি দলগুলো। এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ জানান, কমিশন ৪টা মূলনীতি প্রস্তাব করেছে। তার মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত ৩টি মূলনীতি। অর্থাৎ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এর সঙ্গে গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি। বলা হচ্ছে, এই পাঁচটা থাকবে। এর সঙ্গে ’৭২-এর সংবিধানে থাকা অথবা পঞ্চম সংশোধনীতে যোগ হওয়া কোনো মূলনীতি যোগ হবে নাকি হবে না, এটা আগামী সংসদের এখতিয়ারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একমত হওয়া সম্ভব নয়। কোন প্রক্রিয়ায় সংস্কার বাস্তবায়ন হবেÑতা ঠিক করবে সরকার। সনদ চূড়ান্ত হলেই শুরু হবে এ সম্পর্কিত আলোচনা। এগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশনে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। মৌলিক সংস্কার না হলে নির্বাচন হবে, কিন্তু গণতান্ত্রিক উত্তরণ হবে না। এমন বিধান করতে হবে যেন কথায় কথায় সংবিধান পরিবর্তন করা না যায়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার প্রস্তাব আলোচনায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। অনেক ক্ষেত্রে কাছাকাছি আসছি। কোনো কোনো প্রস্তাবে কিছু দল ভিন্নমত ব্যক্ত করেছে। এই দলগুলো জাতীয় সনদে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলোতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিতে পারবে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। সেটা সোমবারের মধ্যে সবকটি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হবে। দলগুলো দ্রুত মতামত দিলে সেটা সন্নিবেশিত করা হবে। জাতীয় সনদ সইয়ের জন্য চলমান আলোচনায় একটি দিন বরাদ্দ রাখা হবে।

তিনি বলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের চলমান আলোচনা শেষ করা হবে। ১০টি বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে। সাতটি বিষয়ে ঐকমত্য অসমাপ্ত আছে। আর তিনটি বিষয়ে আলোচনা এখনও হয়নি।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code