প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মিথ্যা মামলা দায়েরকারী সিন্ডিকেট আবারও সক্রিয়

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১১, ২০২৫, ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ
মিথ্যা মামলা দায়েরকারী সিন্ডিকেট আবারও সক্রিয়

Manual3 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে মিথ্যা মামলা করার জন্য দণ্ডবিধিসহ (পেনাল কোড) বিভিন্ন আইনে শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও মিথ্যা মামলা করার হার যেন দিন দিন বেড়ে চলেছে।

কোনো অপরাধ না করেও অনেক নিরীহ ব্যক্তি মিথ্যা মামলায় পড়ে গ্রেপ্তার এবং পরবর্তী সময়ে তদন্ত, জামিন ও বিচারকালে বিভিন্নভাবে ভোগান্তির শিকার হন। অনেক ক্ষেত্রে হন স্বজনহারা, সর্বহারা।

মামলাবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যরা এসব মিথ্যা মামলা করে থাকেন। ওই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা সমাজের অবস্থাসম্পন্ন ভদ্র, নিরীহ ও সহজ-সরল মানুষদের প্রথমে টার্গেট করে কার্যক্রম শুরু করেন।

Manual2 Ad Code

এ চক্রের সঙ্গে জড়িত কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের সঙ্গে আদালতের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।

Manual6 Ad Code

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন ভয়ানক অপরাধের তথ্য।

এ অপরাধীরা আগেও দীর্ঘদিন মিথ্যা মামলা দায়েরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফের তারা সক্রিয় হয়েছেন।

এ রকমই এক মিথ্যা মামলাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্যের নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে বাহার ওরফে হাতকাটা বাহার ওরফে বাহার চৌধুরী।
তার বিরুদ্ধে রাজধানী ও নোয়াখালীতে হত্যা, মাদক পাচার, ভূমি দখল ও মারামারির পাশাপাশি কখনো নিজে, কখনো তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় ২০০৯ সালে রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে তার নাম প্রকাশ পায়।

বিজ্ঞ আদালতে বিচার শেষে মিথ্যা মামলা দায়েরকারী বাদীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ২১১ ধারার কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হলেও ওই কুচক্রী সিন্ডিকেটের ক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত হয়নি।

সাইফুল ইসলাম বাহারের প্ররোচনায় শাহানাজ আক্তার নামের এক নারী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা নম্বর ৪৯(০৮)১১ ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(খ)/৩০ ধারায় মামলা করেন। এ মামলাটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

তবে ঢাকার আদালতে মামলার বাদিনী ও সাইফুল ইসলাম বাহারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিবাদী এই মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে নোয়াখালীর আদালতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

Manual4 Ad Code

অপর মামলার বাদী সালমা আক্তার। সাইফুল ইসলাম বাহারের প্ররোচনায় তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মিথ্যা মামলা করেন।
এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে শাহ আলী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বুঝতে পারেন এটি মিথ্যা মামলা।

মামলায় বাদীর সাজানো ঘটনা মিথ্যা বর্ণনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়‌।

বাদী সালমা আক্তার ও সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ ধারায় মিথ্যা মামলা করার অপরাধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এদিকে ভুয়া কাবিননামা ও জাল চিকিৎসাপত্র দাখিল করে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম বাহার ও মামলার বাদী সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে শাহ আলী থানায় ৭(০৯)১১ নম্বর ধারা- ৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৩৪ দণ্ডবিধি দায়ের করে।

এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হলেও বিচারিক ফলাফল জানতে আদালতের প্রসিকিউশন শাখার রেজিস্টারে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসব মামলার তথ্য গ্রহণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Manual5 Ad Code

বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা ও নোয়াখালীতে মাদক, ভূমি দখল, হত্যা, মারামারি, কখনো নিজে, কখনো তৃতীয় পক্ষ দিয়ে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানকালে সিআরও (ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডার) ও বাংলাদেশ পুলিশ ফরম অনুযায়ী রেজিস্টারগুলোতে মিথ্যা মামলাসংক্রান্ত আদালত কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিপরীতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো রেজিস্টার খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে মিথ্যা মামলার বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code