প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

উপদেষ্টা পরিষদে কে যাচ্ছেন কে থাকছেন

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ণ
উপদেষ্টা পরিষদে কে যাচ্ছেন কে থাকছেন

Manual2 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছাঁটাইয়ের দাবি জোরালো হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোই বারবার এ প্রসঙ্গ সামনে আনছে। বিদায়ের জন্য উপদেষ্টাদের একটি অংশ মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন। তবে মাঠে সক্রিয় তিন দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উপদেষ্টা পরিষদে কাটছাঁটের দাবি আবার তোলায় উপদেষ্টাদের কেউ কেউ আছেন অস্বস্তিতে। উপদেষ্টা পরিষদের কে কে পদত্যাগ করবেন আর কারা থাকবেন সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে সরকারের ভেতর ও বাইরে।

অন্যদিকে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে তৈরি করা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দল তিনটির বিরোধের সুরাহা এখনো বাকি। এখন উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চেয়ে দলগুলোর পরস্পরবিরোধী দাবি এ নির্বাচন অনিশ্চিত করে তুলবে কি না এমন প্রশ্নও উঠছে।

এমন পরিস্থিতির বিষয়ে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ নিজেদের মতামতও জানাচ্ছেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান শুক্রবার ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। একটি দলের তালিকায় আমার নামও আছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে শুধু এটুকুই বলা যে, আমি পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নই।’

কোনোরূপ অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সবসময় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন দাবি করে তিনি উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি করে তোলা প্রশ্ন নিষ্পত্তির ওপর জোর দেন।

Manual8 Ad Code

ফাওজুল কবির খান বলেন, নির্বাচনের পর যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাবৃন্দ, বিশেষ সহকারীবৃন্দও চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত সব কর্মকর্তার কেউই পরবর্তী নির্বাচিত সরকারে কোনো লাভজনক পদে অংশ নিতে পারবেন না এ মর্মে একটি অধ্যাদেশ জারি করলে সমস্যাটির সুরাহা হতে পারে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে কেউ পদত্যাগ করলে তাদের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।

Manual4 Ad Code

পদত্যাগ ইস্যুতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টাও অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।

সরকারি একটি সূত্র জানায়, উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি জোরালো হওয়ায় প্রবীণ কয়েকজন উপদেষ্টা সরে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছেন। পরিস্থিতি যেদিকেই যাক, শেষ বেলায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন অন্তত চার প্রবীণ উপদেষ্টা।

সরকারের ভেতরকার তথ্য অনুযায়ী, দেড় বছর আগে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের শুরু থেকে আলোচনায় ছিল উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে কে কোন দলের লোক। কী প্রক্রিয়ায় পরিষদের সদস্যদের পছন্দ করা হয়েছে, বিষয়টি তিনি একাধিক সাক্ষাৎকারে বলার চেষ্টা করেছেন। তারপরও প্রশ্ন রয়ে গেছে, কে কার লোক। কমপক্ষে দুই উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন ও ড. আসিফ নজরুলের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপিসহ বিভিন্ন মহল দুই তরুণ উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে বাদ দিতে সরাসরি প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করলেও তিনি এড়িয়ে যান।

এখন আবার আদিলুর রহমান খানসহ ভিন্ন ভিন্ন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের দাবি তুলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ভাবনা থেকে জামায়াত ও এনসিপি দাবিটি তুলে থাকতে পারে, এমনটি মনে করছেন কেউ কেউ। তবে শেষবেলায় বিএনপি কেন এ দাবির সঙ্গে শামিল হলো, এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. শাহিদুজ্জামান বলেন, উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিতর্কিত হয়ে গেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কয়েকজন উপদেষ্টা জবাবদিহির তোয়াক্কাই করেন না। প্রধান উপদেষ্টা তাদের পদত্যাগ করতে চাপ দেবেন না, সেটাও উপদেষ্টারা জানেন।

শাহিদুজ্জামান মনে করেন, এই মুহূর্তে পদত্যাগ দাবি জাতীয় নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ার একটি ক্ষেত্র সরকারকে তৈরি করে দেবে। জামায়াত ও এনসিপি সেটা চাইতে পারে। বিএনপি কেন শেষদিকে এসে এ দাবি করবে, বোধগম্য নয়।

বিএনপির অভিযোগ, কিছু উপদেষ্টা বিশেষ দলের পক্ষে কাজ করছেন। বিশেষ দল বলতে দলটি জামায়াত ও এনসিপির দিকে ইঙ্গিত করেছে। জামায়াতও একইভাবে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে অভিযোগ করে আসছে।

এনসিপির অভিযোগ, বিএনপি ও জামায়াতকে টার্গেট করে। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, জনপ্রশাসনে বদলি-পদায়নে বড় দলগুলোর ‘ভাগবাটোয়ারায়’ উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। এতে নির্বাচন নিরপেক্ষ না হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারেরই তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা নেওয়ার বিষয়টি বিএনপি সামনে আনায়, এই মুহূর্তে সরকারের কাঠামোতে পরিবর্তনের সুযোগ আছে কি না, সে প্রশ্নও তুলছে এনসিপি।

Manual8 Ad Code

সরকারি সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই হবে, এ ব্যাপারে দলগুলোকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code