প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

চাঁদাবাজিতে ‘তাৎক্ষণিক সাজা’, ভুক্তভোগী না এলে পুলিশই হবে বাদী

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৪:২০ অপরাহ্ণ
চাঁদাবাজিতে ‘তাৎক্ষণিক সাজা’, ভুক্তভোগী না এলে পুলিশই হবে বাদী

Manual3 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual3 Ad Code

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশজুড়ে বেড়ে যাওয়া চাঁদাবাজি রোধে এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, চাঁদাবাজি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দেওয়া হবে। ভুক্তভোগীরা ভয়ে মামলা করতে না চাইলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করবে—এমন নির্দেশনাই দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব ইউনিটের প্রধানদের কাছে পাঠানো বার্তায় এই কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের অস্বস্তি এবং সরকারের কঠোর হওয়ার নির্দেশের পর পুলিশ এই ‘নয়া কৌশল’ গ্রহণ করেছে।

Manual6 Ad Code

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রগুলো জানিয়েছে, এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের একটি নতুন তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হবে। তালিকায় রাজনৈতিক নেতা এবং উঠতি সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের নামও উঠে এসেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এ বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের সব ইউনিটকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজদের ভয়ে ভুক্তভোগীরা মামলা করার সাহস না পেলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। পুলিশের কোনো সদস্য সম্পৃক্ত থাকলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি মামলাও করা হবে। চাঁদাবাজিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Manual7 Ad Code

সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে একজন অতিরিক্ত ডিআইজি জানিয়েছেন, চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে গেছে। হাতেনাতে ধরা পড়লে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়া হবে। জেলা পর্যায়ে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে নেওয়া হবে। দ্রুত বিচার আইনে মামলা হলে বিচার প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

Manual3 Ad Code

পুলিশের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে উঠে এসেছে চাঁদাবাজির বদলে যাওয়া কৌশলের চিত্র। এখন সশরীরে উপস্থিত না হয়েও হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার বা টেলিগ্রামের মতো প্রযুক্তির সহায়তায় চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। ফলে অনেক সময় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রমাণের অভাব থাকছে। পরিবহন খাতে টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে এবং ফুটপাতে হকারদের কাছ থেকে দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা আদায় চলছে। এছাড়া নির্মাণাধীন ভবন বা প্লট মালিকদের জিম্মি করে টাকা আদায়, মারধর ও লুটপাটের মতো ঘটনাও ঘটছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতারা মিলে এই চাঁদা আদায় করছে, যার ফলে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে যে, চাঁদাবাজদের লালন-পালন করছে খোদ থানা-পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। প্রতিদিন সারা দেশে গড়ে ৫০ লাখ টাকার চাঁদা তোলা হচ্ছে, যার একটি অংশ প্রভাবশালীদের পকেটে এবং বাকিটা পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ভাগ হচ্ছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code