প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

৮৬ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি: মেগা প্রকল্পে নিয়ে উদ্বেগ

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২, ২০২৪, ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ
৮৬ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি: মেগা প্রকল্পে নিয়ে উদ্বেগ

Manual7 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে। এসব প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনীতির চেয়ে রাজনীতি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কমিটি বলেছে, এসব প্রকল্প একাধিকবার সংশোধন করা নিত্যনৈমিক্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিসিবল স্ট্যাডি বা সমীক্ষা মানসম্মত ছিল না। ফিসিবল স্ট্যাডি করার ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই। ঘন ঘন সংশোধনের ফলে প্রকল্প ব্যয় অনেক গুণ বেড়ে গেছে। প্রকল্পের কেনাকাটায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পাবলিক প্রক্রিউরমেন্ট রুলস মেনে চলা হয়নি।

Manual8 Ad Code

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে অর্থনীতির শ্বেতপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। রবিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আজ সংবাদ সম্মেলন করে শ্বেতপত্রের বিস্তারিত জানানো হবে। ৪০০ পৃষ্ঠার বেশি প্রতিবেদনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব অনিয়ম মোকাবিলায় সুপারিশ করা হয়েছে।

Manual1 Ad Code

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেই মাসের শেষ সপ্তাহে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। পরে দেশের খ্যাতিমান ১১ জন বিশেষজ্ঞকে এই কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Manual7 Ad Code

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় ৮৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। জনগণের করের টাকায় বাস্তবায়িত এসব প্রকল্পের টেকসই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিবেদেন বলা হয়, ৭টি মেগা প্রকল্পে ৮০ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। যথাসময় বাস্তবায়নে ঘাটতি ও ঘন ঘন প্রকল্প সংশোধনের ফলে এই খরচ বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, বাংলাদেশে নির্মাণ খরচ অনেক বেশি। অথচ কাজের মান অত্যন্ত নিচু। যেমন বাংলাদেশে চার লেন সড়ক তৈরিতে যে খরচ হয় তা পাশের দেশ অপেক্ষা ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি, পাকিস্তানের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি। রংপুর হাটিকুমরুল চার লেন সড়কের প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়েছে ৬ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার।। অথচ ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে সড়কের খরচ ধরা হয়েছে ৭ মিলিয়ন ডলার।

দরপত্র প্রক্রিয়াতেও নানা ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশি অনিয়ম হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণে। বেশির ভাগ প্রকল্পে ভূমির দাম বাস্তবের চেয়ে বেশি ধরা হয়েছে। প্রকল্পের খরচ বাড়ার ক্ষেত্রে এটিও অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। স্বার্থান্বেষী মহল এর সুবিধা ভোগ করে বলে কমিটি মনে করে। প্রতিবেদেন বলা হয়, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প বারবার সংশোধনের ফলে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে কমপক্ষে ১২ গুণ খরচ বেশি হয়েছে।

শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের ব্যবহার বেড়েছে। এ ধরনের ঋণের খরচ বেশি এবং নানা জটিল শর্ত থাকে। পদ্মা রেললিংক ও কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে চীন এবং এই ঋণ দেওয়া হয়েছে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটে এবং নানাবিধ জটিল শর্ত রয়েছে। এর ফলে ‍দুটি প্রকল্পের টেকসই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও শক্তিশালী করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ই-প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন বিভাগ-আইএমইডি তার যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংস্থাকে আরও সক্রিয় করতে হবে। এখানে দক্ষ জনবল নিয়োগ ও আর্থিক ক্ষমতা দিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়গুলো অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রতিবেদনে। একই সঙ্গে তদারকি নিবিড় করার কথাও বলা হয়েছে। আইএমইডিকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান করা যায় কি না, সে বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের চিন্তা-ভাবনা করার কথা বলেছে কমিটি।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code