প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

২৯ মিলিয়ন ডলার পেলো কারা?

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
২৯ মিলিয়ন ডলার পেলো কারা?

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual1 Ad Code

বাংলাদেশের দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান যু্‌ক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার অনুদান পেয়েছে। রাজনৈতিক পরিমণ্ডল শক্তিশালীকরণের প্রকল্পে এই অনুদান দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এ তথ্য প্রকাশের পর এ নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- কোন প্রতিষ্ঠান বা কারা এই অনুদান গ্রহণ করেছে।

ট্রাম্পের তথ্য প্রকাশের পর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যেও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। কারণ এসব সংস্থা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার অনুদান নিয়ে চলে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প যে অনুদানের তথ্য দিয়েছেন তা দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসে থাকলেও নির্বাচন নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে খরচ হয়ে থাকতে পারে। কারণ নির্বাচন নিয়ে কাজ করে এমন অনেক সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা পেয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান গত জাতীয় নির্বাচনের আগে তৎপর ছিল। এ ছাড়া নির্বাচনের পরও কোনো কোনো সংগঠন সেমিনার, গোলটেবিল সহ বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করে।

ওদিকে, শনিবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে ভারতে ইউএসএইড’র তহবিল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এতে বলা হয়, ভারতে নয়, বরং ২০২২ সালে ওই অর্থ বাংলাদেশে অনুমোদন দিয়েছিল ইউএসএইড। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ফ্যাক্ট চেকে ওই ২ কোটি ১০ লাখ ডলার তহবিলের মধ্যে অন্তত ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার ইতিমধ্যে বিতরণ করেছে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অনুদান নির্দিষ্ট দেশগুলোতে দেয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে ভারতে ইউএসএইড’র অর্থায়নে সিইপিপিএস’র কোনো প্রকল্প পরিচালিত হয়নি। ২ কোটি ১০ লাখ ডলার তহবিলের সঙ্গে ইউএসএইড’র অনুমোদিত অনুদান কেবল সিইপিপিএস’র মাধ্যমে (যার ফেডারেল অ্যাওয়ার্ড নম্বর ৭২০৩৮৮২২এলএ০০০০১) বাংলাদেশে দেয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ‘আমার ভোট আমার’ নামে একটি প্রকল্পের জন্য যা অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই বছরের নভেম্বরে এই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘নাগরিক (সিটিজেন) প্রোগ্রাম’। গত বছরের ডিসেম্বরে ইউএসএইড’র ঢাকার উপদেষ্টা লুবাইন মাসুম যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে নাগরিক প্রকল্পের জন্য ২ কোটি ১০ লাখ ডলার অনুদান পাওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছিলেন। এই অনুদানের মধ্যে ইতিমধ্যে ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার প্রকল্পের পেছনে ব্যয় হয়েছে। অনুদান পাওয়া তিন সংস্থা হলো- ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)।

Manual6 Ad Code

ইউএসএইড’র বাংলাদেশের তহবিল প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। তিনি মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ (এমজিআর) নামে একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। আইনুল ইসলাম আইএফইএস’র সিনিয়র কনসালটেন্টের দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাবের (এডিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হন তিনি।

Manual8 Ad Code

গত ১১ই সেপ্টেম্বর ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, হ্যালো বাংলাদেশ ২.০! গত দুই বছরে এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি দেশ জুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণদের জন্য ৫৪৪টি অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। কর্মশালার আকার, প্রশিক্ষণ, কথোপকথন, সামিট, অ্যাকশন প্রকল্পসহ তরুণ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সংশ্লিষ্টতার জন্য সরাসরি ২২১টি অ্যাকশন প্রকল্প, ১৭০টি গণতন্ত্র সেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার ২৬৪ তরুণের কাছে পৌঁছেছিল এমজিআর, সেইভ ইয়ুথ ও ডিএফটিপি!

এসব কর্মসূচির বাস্তবায়ন নাগরিক প্রোগ্রামের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (আইএফইএস) এবং ইউএসএইড বাংলাদেশের উদার সমর্থন ও অংশীদারিত্বে সম্ভব হয়েছে বলে লেখেন তিনি। ইউএসএইড ও আইএফইএস’র সহায়তায় এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিইপিপিএস’র মাধ্যমে নাগরিক প্রোগ্রামে ইউএসএইড’র অর্থায়নের তথ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নিশ্চিত করেছেন তিনি। ইলন মাস্ক নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি ইউএসএইড’র তহবিল বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একটি ধাক্কা। তবে ল্যাবটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে এবং আমরা আশাবাদী এটি চালু থাকবে।

Manual2 Ad Code

গত বছরের ২রা ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে এনডিআই সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর ইউএসএইড ঢাকার পলিটিক্যাল প্রোসেসেস উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম লিংকডইনের একটি পোস্টে ইউএসএইড’র ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের তহবিলের প্রতিশ্রুতির তথ্য নিশ্চিত করেন। পোস্টে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এনডিআইয়ের উপস্থিতি না থাকলেও সংস্থাটি ইউএসএইড’র ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের সিইপিপিএস/নাগরিক প্রকল্পের অধীনে আইআরআই ও আইএফইএস-সহ তিনটি প্রধান অংশীদারদের একটি। এনডিআই…সিইপিপিএস/নাগরিক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে প্রি-ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট মিশন (পিইএএম) ও টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশনে (টিএএম) অংশ নিয়েছে; যা আমি পরিচালনা করি। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও মাসুম সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

এসপিএল শীর্ষক যে প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড’র অর্থায়নের কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সেই নামে বাংলাদেশে একটি প্রকল্প পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই)। তাদের ওয়েবসাইটে এই প্রকল্পে ইউএসএইড’র অর্থায়নের তথ্য উল্লেখ রয়েছে।

ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সম্পর্ক উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে ডিআইয়ের এই প্রকল্প।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code