প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে বড় কর্মসূচি দিল বিএনপি

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৯, ২০২৫, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ণ
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে বড় কর্মসূচি দিল বিএনপি

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলো নির্বিঘ্নে তাদের কর্মসূচি পালন করছে। এবার দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে পহেলা বৈশাখ পালন করবে বিএনপি। এজন্য বড় পরিসরে দিনটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

আর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে দেশীয় সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে দলীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ওইদিন বৈশাখী যাত্রা/র্যালি থেকে শুরু করে মেলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে।

সারা দেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলায় এই কর্মসূচি পালিত হবে। সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

Manual8 Ad Code

এদিকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আবারও সাক্ষাৎ করবে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পরপরই সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এছাড়া ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা ও গণহত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিএনপি। দ্রুত এই নৃশংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে দলীয়ভাবে খুব শিগগিরই ঢাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ করবে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, পহেলা বৈশাখে সারা দেশে দলীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জেলা, উপজেলায় বৈশাখী যাত্রা/র্যালি হবে। যদি সম্ভব হয় ইউনিয়ন পর্যায়েও এই যাত্রা/র্যালির আয়োজন করতে পারে। এছাড়া ওইদিন পান্তা আয়োজন, লোকজ গানের অনুষ্ঠান, বৈশাখী গ্রামীণ মেলা, হাডুডু খেলাসহ নানা আয়োজন থাকবে।

তবে পরদিন (১৫ এপ্রিল) এসএসসি পরীক্ষা থাকায় পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধ্যার আগেই সব আয়োজন শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরদিন ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর ও ১৬ এপ্রিলও (এসএসসি পরীক্ষা না থাকায়) নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। এতে চলমান পরিস্থিতিসহ রাজনৈতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর এই বৈঠক ছিল দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের প্রথম বৈঠক।

Manual3 Ad Code

সূত্রমতে, গত কয়েক মাস ধরে বিএনপি নেতারা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের যে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, সে ব্যাপারে একটি স্পষ্ট পথনির্দেশিকা পেতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাক্ষাতের পর দলটি নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে দলীয় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে দু-একটি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে দেখা যেতে পারে দলটিকে। বৈঠকে বেশ কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ ও সংস্কারের ইস্যু ছিল অন্যতম। বিএনপি ২৩ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ওপর দলীয় মতামত জমা দিয়েছে।

সংস্কারের পক্ষেই দলটির মতামত রয়েছে। সংস্কার ইস্যুতে তারা যে সরকারকে সহযোগিতা করছে, সে বিষয়ে দলটি তাদের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করছে। বিএনপি মনে করে, সরকারের উচিত নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ আলোচনা হয়েছে।

Manual8 Ad Code

বিএনপি মনে করে, নির্বাচনকেন্দ্রিক যত সংস্কার রয়েছে, সেগুলো সরকার একটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। আর বাকি সংস্কারগুলো একটা রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ করবে।

Manual6 Ad Code

তবে সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে, সে ব্যাপারে দলটি এখনো আশ্বস্ত নয়। তাদের মধ্যে নির্বাচন প্রলম্বিত করার নানান শঙ্কা এখনো রয়ে গেছে।

সরকারের তরফ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মনে করে, এটি কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নয়। কারণ, নির্বাচন নিয়ে সরকারের তরফ থেকে একেক সময় একেক কথা বলা হচ্ছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে সরকার আসলে কী ভাবছে কিংবা তাদের অবস্থান কী, সেটা সুস্পষ্টভাবে জানতে খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবে।

জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে কনসার্ন, সংশয়-তা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবে বিএনপি। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির যে মতামত, সেটাও তারা তুলে ধরবে। চিকিৎসার জন্য রোববার সিঙ্গাপুর যান বিএনপির মহাসচিব। সপ্তাহখানেক পরে তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে বিএনপি যেহেতু সরকারকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে এবং আগামীতেও করবে; সে কারণে নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে তারা বড় কোনো কর্মসূচিতে যেতে চান না। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবতা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক চাওয়া-এগুলো বিবেচনায় নিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। দলটি মনে করে, দ্রুত নির্বাচন হলে দেশে বিদ্যমান নানা সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে এবং দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি পালন করছে। এবার বিএনপিও কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি নেবে। এর অংশ হিসাবে চলতি সপ্তাহেই রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিতে পারে। যেখানে ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ জানাবে দলটি। এছাড়া শনিবার রাজধানীতে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানাবে বিএনপি। সেখানে দলটির নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারেন।

ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘটিত শতাব্দীর বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাজধানীতে ‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। শনিবার শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে গিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান (অনলাইনে), নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইনে), আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইনে), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন (অনলাইনে)।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code