প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সরকারকে চাপে রাখবে বিএনপি

editor
প্রকাশিত মে ২১, ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ণ
সরকারকে চাপে রাখবে বিএনপি

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো এবং ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবি—এই দুই ইস্যুতে সরকারকে চেপে ধরার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। এর মাধ্যমে দলটি তাদের রাজনৈতিক শক্তি দেখানোর পাশাপাশি সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলনও জোরদার করতে চায়। তবে এখনই কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হোক—সেটাও চায় না দলের উচ্চ মহল।

Manual7 Ad Code

ইশরাক ও সাম্য ইস্যুতে আন্দোলন জোরদার করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বুধবার থেকে এই দুই কর্মসূচিতে জনসমাগম আরো বাড়াবে দলটি।

গত সোমবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এই দুই ইস্যু, সংসদ নির্বাচন ও সাম্প্রতিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। রাত সাড়ে ৮টায় বৈঠকটি শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে বিএনপি নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের ৯ মাসেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষিত না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা মনে করেন, সরকারের মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী চক্র নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করছে। ফলে নানা ঘটনায় পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে।

তবে ধীরে ধীরে চাপ বাড়বে। একই সঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের যৌক্তিকতার বিষয়টি বর্তমানে দলটি যেভাবে বিভিন্ন ফোরামে তুলে ধরছে, সেটিও অব্যাহত রাখবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সরকারকে সময় দিচ্ছি, সুযোগ দিচ্ছি। তার মানে এই নয় যে এই ধৈর্য অনন্তকাল থাকবে।’

Manual5 Ad Code

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বিভিন্ন এজেন্ডা থাকলেও মূলত দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, বিভিন্ন পক্ষ নানা দাবিদাওয়া নিয়ে হঠাৎ করে মাঠে নামায় এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অবনতিশীল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারকে বিপদে ফেলতে নানা চক্রান্ত চলছে। সম্প্রতি অতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন কিছু ইস্যু নিয়ে হঠাৎ করে নানা পক্ষের মাঠে আন্দোলনে নামার ঘটনা সন্দেহজনক। পতিত স্বৈরাচারের লোকজনও হঠাৎ হঠাৎ রাজপথে মিছিল করছে। এর মধ্য দিয়ে তারা সরকারকে বিপদে ফেলতে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। সরকারও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, ছাত্রদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা যে থেমে থেমে নিত্যনতুন দাবি তুলছেন এবং দাবি আদায়ে রাজপথে নামছেন, এর মধ্য দিয়েও সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। বিএনপির কারো কারো আশঙ্কা, রাষ্ট্রপতি অপসারণ, সংবিধান বাতিল, গণভোট, স্থানীয় সরকার নির্বাচন—এই ইস্যুগুলোতে তারা (এনসিপি) ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সরকার সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না কিংবা সরকারের অবস্থান তখন কী হয়, সেটি নিয়েও তাদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে।

গতকাল থাইল্যান্ডের ব্যাংকক রুটনিন আই হসপিটালের কেবিন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলের এক যৌথ সভায় নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে কালো ছায়া দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে নেতাকর্মীদের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত থাকার কথাও বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।’ তিনি বলেন, ‘গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে পরস্পরের মুখোমুখি করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’

Manual1 Ad Code

সরকার সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে বলে আলোচনা তুলে কোনো কোনো নেতা বৈঠকে বলেন, এতে সরকারের ভেতর ও বাইরের একটি চক্রের ইন্ধন আছে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, সরকারের একটি প্রভাবশালী অংশ বিরাজনৈতিকীকরণ বা তাদের মদদপুষ্ট একটি দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে। তাদের এ চেষ্টা সফল হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। পাশাপাশি পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেবে, যা দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে যাঁরা নির্যাতনে সম্পৃক্ত ছিলেন না তাঁদের বিএনপিতে যোগদানের বিষয়টি বৈঠক শুরু হওয়ার আগে আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপিতে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে যে বক্তব্য এসেছে তাতে বেশির ভাগ নেতা নেতিবাচক মনোভাব দেখান।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code