প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকে কেটে যেতে পারে নির্বাচনী সংকট

editor
প্রকাশিত জুন ১২, ২০২৫, ০৭:২০ পূর্বাহ্ণ
লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকে কেটে যেতে পারে নির্বাচনী সংকট

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
নির্বাচন, সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক উত্তেজনা যখন চরমে, ঠিক সে মুহূর্তে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক। এতে বিএনপির পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন, চলমান সংকটে নতুন দিশা দেখাতে পারে এই বৈঠক।

আগামীকাল শুক্রবার (১৩ জুন) যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে হোটেল ডোরচেস্টারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠকে কেটে যেতে পারে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সৃষ্ট সংকট। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির আগামী নির্বাচনে তাদেরই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই সরকারের জন্য নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার ইস্যুতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মনোভাব বোঝা খুব দরকার। অন্যদিকে সরকার কী করতে চায়, সেটাও তারেক রহমানের জানা দরকার। আর তার জন্য এ বৈঠকটি হবে উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম।

এদিকে বিএনপির নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার এবং বিচার- মূলত এ তিন ইস্যু প্রাধান্য পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মূল ফোকাস থাকবে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ওপর। তবে ডিসেম্বরে না হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থাৎ রোজার আগে যাতে নির্বাচনটা হয়ে যায়, সে বিষয়টিতে তারেক রহমান সর্বোচ্চ জোর দিতে পারেন বৈঠকে।

অন্যদিকে সরকারি সূত্র বলছে, সরকারও কেন আগামী এপ্রিলে নির্বাচন করতে চায়, সেটা ড. ইউনূস তার ভাষণে যেমন তুলে ধরেছেন। সংস্কার এবং বিচারের পাশাপাশি তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকেও এ বিষয়টি তিনি তুলে ধরবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যদি সেটাতে কনভিন্সড হন, তাহলে এপ্রিলে নির্বাচন হতে পারে। এ ছাড়া বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে সূত্র বলছে।

Manual1 Ad Code

বৈঠকটি সরকার এবং বিএনপি উভয়ের জন্যই ‘সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিদ্যমান অবস্থা থেকে বের হয়ে একটা নির্বাচিত স্বাভাবিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিতে হবে। এমন অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শুক্রবার অনুষ্ঠেয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নির্বাচন হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

Manual1 Ad Code

গত কয়েক মাসে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। এরই মধ্যে ঈদুল আজহার আগের দিন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন। প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে ভাষণের পর ওই রাতেই স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকে সরকারের এ ঘোষণার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি। সেখানে দলটির পক্ষ থেকে এপ্রিলে নির্বাচনের বিষয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

Manual8 Ad Code

এমন অবস্থায় ঈদের দিন গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় গিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিএনপির সূত্রমতে, শুভেচ্ছা বিনিময়ের একপর্যায়ে সরকার ঘোষিত নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপের বিষয়টি উঠে আসে। তখন খালেদা জিয়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্বাচন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সরাসরি কোনো ধরনের বিরোধে না জড়ানোর নির্দেশনা দেন। নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে সংঘাতে গেলে বিএনপির কোনো লাভ নেই। তাই বিরোধ নয়, সংকট সমাধানে আলোচনাই শ্রেয়। সে পথেই হাঁটতে হবে। যদি ড. ইউনূস না থাকেন, তাহলে কী হবে, সেটাও তো ভাবতে হবে। তাই যুক্তির আলোকে কীভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ এগিয়ে নিয়ে আসা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। খালেদা জিয়ার এমন নির্দেশনায় বদলে যায় বিএনপির রাজনীতির দৃশ্যপট। ডিসেম্বরে নির্বাচন দাবিতে দলীয় কঠোর অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয় হয়ে বিএনপি এখন যৌক্তিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকট সমাধানের পথে এগোচ্ছে।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code