প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এই মাহমুদউল্লাহকেই চায় বাংলাদেশ

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ণ
এই মাহমুদউল্লাহকেই চায় বাংলাদেশ

Manual5 Ad Code

ক্রীড়া ডেস্ক:

০, ১, ২ ও ৩—এই ছিল আগের চার ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের রান। শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে তাঁর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটারের এমন ব্যর্থতায় উঠেছিল প্রশ্নও। এমনকি দল থেকে বাদ দেওয়ারও কথা উঠেছে। তবে মাহমুদউল্লাহ যেন ‘ফিনিক্স পাখি’! ক্যারিয়ারের শুরু থেকে দুঃসময় কাটিয়ে বারবার ফিরে এসে সেটির প্রমাণ দিয়েছেন।

Manual4 Ad Code

 

প্রমাণ দিলেন আজও। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে খেললেন ৯৮ বলে ৯৮ রানের ইনিংস। তবে ৭ চার ও ৩ ছয়ে সাজানো ঝকঝকে ইনিংসের পরেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। পায়ে ক্র্যাম্প করায় রানের জন্য দৌড়াতেই কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। কিন্তু দলের প্রয়োজন যে বড় কথা! সতীর্থরা তাঁকে শেষ দিকে সঙ্গ দিতে না পারলেও স্কোরবোর্ডের রানটা বাড়াতে চেষ্টার কমতি রাখেননি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পেতে শেষ ওভারে মাহমুদউল্লার দরকার ছিল ৪ রান। কিন্তু তিন বল স্ট্রাইক পেয়েও ব্যাট উঁচিয়ে ধরতে পারেননি। উল্টো পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বল ডিপ স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে ২ রান নিতে গিয়ে হয়েছেন রানআউট। শেষ বলে ৩ রান নিলেই সেঞ্চুরি পেয়ে যেতেন মাহমুদউল্লাহ।

 

শারজার দুপুরের গরম আর বয়সটাও যেন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের পথে। অবশ্য ৩৮ বছর বয়সেও চার-ছয়ে ‘বুড়ো হাড়ের ভেলকি’ তিনি ঠিকই দেখিয়েছেন। তবে শক্তি ক্ষয় করেছেন ডাবল ও সিঙ্গেল নিতে গিয়ে। সিঙ্গেল থেকে নিয়েছেন ৩৭ রান, আর ডাবল থেকে ১৪। অর্থাৎ, তাঁর ৫১ রান এসেছে ‘রানিং বিটুইন দ্য উইকেট’ থেকে। আর দৌড়ের ক্লান্তির কারণেই হয়তো খুব কাছে গিয়েও হাতছাড়া হলো সেঞ্চুরি। শেষ দিকে যে দৌড়াতেই কষ্ট হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহর!

 

মাহমুদউল্লাহ আজ এমন সময়ে উইকেটে আসেন, দল যখন ৭২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে। এরপর নেতৃত্বে অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজের (৬৬) সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১৮৮ বলে ১৪৫ রানে জুটি গড়েন। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশও করেছে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান। চোটের কারণে এই ম্যাচে নেই নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে মাঠে ছিলেন বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক। মাহমুদউল্লার সেঞ্চুরি হাতছাড়া হতে দেখে কিছুটা হতাশ তিনিও। বাংলাদেশের ইনিংস শেষে বলেন, ‘রিয়াদ ভাই তাঁর অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। অল্প হতাশ, তাঁর সেঞ্চুরি করা উচিৎ ছিল তবে দল ভালো অবস্থানে।’ মাহমুদউল্লাহ যে হতাশ সেটি দেখা গেছে আউটের পর ফেরার সময়। ব্যথায় ও হতাশায় চোখ বুজে আসছিল তাঁর। তবে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে পিঠ চাপড়ে দেন আফগানরাও।

Manual2 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

গরমের কারণে পায়ে ক্র্যাম্প করেছে। তারপরও থামেননি মাহমুদউল্লাহ। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাট করে গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাট করে এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মনে করিয়ে দিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ওয়াংখেড়েতে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারের সেই অবিশ্বাস্য ইনিংসটির কথা মনে আছে?

 

Manual7 Ad Code

 

এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই ২৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিল অজিরা। হার যখন প্রায় সুনিশ্চিত, ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা ম্যাক্সওয়েল ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের দানবীয় ইনিংস খেলে এনে দেন জয়। ম্যাক্সিরও ক্র্যাম্প করেছিল। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল, মাটিতেই শুয়ে পড়েছিলেন তিনি। পারছিলেন না দৌড়াতে। কিন্তু হার মানেননি। পা না তোলেই ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেন জয়। পরে সেই অজিরা জিতেছিল বিশ্বকাপও।

 

ম্যাচটি হয়েছিল নভেম্বর মাসে। আর কী কাকতালীয়! বাংলাদেশের ম্যাচটিও একই মাসে, প্রতিপক্ষও সেই আফগানিস্তান। আর মাহমুদউল্লাহও ব্যাটিংয়ে নামেন ৬ নম্বরে, দলের যখন দুঃসময়। ম্যাক্সির সেই দ্বিশতক বৃথা যায়নি। এক বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডেতে পাওয়া মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিও কি বৃথা যেতে দেবেন মিরাজরা? এই ম্যাচ জিতলে প্রথম ওয়ানডেতে হেরেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেবে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর আগের ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি ছিল গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেই। ওয়াংখেড়েতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১১ বলে করেছিলেন ১১১ রান। অবশ্য সেই ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার মাহমুদউল্লাহ ৫০+ রান পেলেন ৭ ইনিংস পর। কিন্তু ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর পাওয়া ২৯ তম ওয়ানডে ফিফটিটি ২ রানের জন্য জন্য সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code