প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট সীমান্তে বেড়েই চলছে প্রাণহানী, বেপরোয়া বিএসএফ ও খাসিয়া

editor
প্রকাশিত মার্চ ১০, ২০২৫, ০৫:৫২ পূর্বাহ্ণ
সিলেট সীমান্তে বেড়েই চলছে প্রাণহানী, বেপরোয়া বিএসএফ ও খাসিয়া

Manual2 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে হত্যার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি ২০২৫ সালে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৫ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় উদ্বেগজনক। ২০২৪ সালে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর বিএসএফ বা খাসিয়াদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ৮ জন বাংলাদেশি। ফলে সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

সর্বশেষ ৬ মার্চ রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার মঙ্গলপুর সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত হন শাহেদ আহমদ। নিহত শাহেদ লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মঙ্গলপুর আলুবাড়ি গ্রামের মশাহিদ আলীর ছেলে। জানা যায়, তিনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করে চিনি আনতে গেলে ভারতীয় খাসিয়ারা গুলি চালায়, এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। পরবর্তীতে ভারতের মেঘালয় পুলিশ তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।

Manual6 Ad Code

২১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা-সুনামগঞ্জ সীমান্তের বাউসারী ও কামাউরা এলাকায় রাজিব সরকারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, সীমান্ত এলাকায় মাদক ও অন্যান্য চোরাচালানকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, চোরাকারবারিদের দ্বন্দ্বের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

২৬ জানুয়ারি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে খুন হন আহাদ মিয়া (৪৫)। তিনি কুলাউড়ার দশটিকি ইউনিয়নের নয়াবস্তি গ্রামের বাসিন্দা। জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভারতীয় নাগরিক হায়দার আলী ও তার সহযোগীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর বিজিবি বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে।

৮ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হন সাইদুল ইসলাম (২৩)। তিনি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের গামারিতলা গ্রামের জয়নুল আবেদীনের ছেলে। জানা গেছে, সাইদুল সীমান্ত দিয়ে চিনি আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন।

Manual6 Ad Code

৬ জানুয়ারি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বড় কেয়ারা সীমান্ত এলাকায় জহুর আলী (৫৫) নামের এক বাংলাদেশি ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম ডুলনা গ্রামের বাসিন্দা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও সীমান্তের ওপারের ভারতীয় লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ নিয়ে যায়। পরে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।

Manual6 Ad Code

সীমান্তে বাড়তে থাকা হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলত চোরাচালান সিন্ডিকেটগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং আধিপত্য বিস্তারের লড়াই রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সীমান্তের ওপারে ভারতীয় খাসিয়ারা শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, যেখানে বাংলাদেশের কিছু চোরাকারবারিরও সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিজিবি বলছে, সীমান্ত এলাকায় টহল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

Manual4 Ad Code

সীমান্তে লাগাতার হত্যাকাণ্ড রোধে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের মধ্যে কার্যকর আলোচনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি। এছাড়া, সীমান্তবর্তী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা না গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code