প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

স্পিকারের বাসভবনই হবে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৯:০৯ পূর্বাহ্ণ
স্পিকারের বাসভবনই হবে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস

Manual4 Ad Code

 

# সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সংসদ ভবন এলাকা পরিদর্শন।

Manual7 Ad Code

# স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন এক করেই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রস্তুত করা হবে।

Manual8 Ad Code

# স্থায়ী আবাস নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রজন্ম ডেস্ক:

আগামী বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনের পর যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তাঁর জন্য বাসভবন প্রস্তুতের কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। তবে স্থায়ী নিবাস তৈরি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত স্পিকারের বাসভবনেই থাকবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে এক করে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস হিসেবে প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তিন মেয়াদে গণভবনে থেকেছেন শেখ হাসিনা। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা বাসভবন প্রস্তুত করতে হচ্ছে।

গত রোববার সকালে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিন ভবন দুটি পরিদর্শনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব নজরুল ইসলাম, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কানিজ মওলা, প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান সেলিম ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুব উস সামাদ।

গতকাল মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন সচিব কানিজ মওলা। তিনি জানান, এখানে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হবে কি না, সেটা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ভালো বলতে পারবে। যদিও সোমবার রাতে একই বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি চূড়ান্ত হলে জানবেন। চূড়ান্ত হবে কি না, বলতে পারছি না।’

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলেও সচিব কানিজ মওলার নেতৃত্বে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের স্পিকারের বাসভবন ঘুরে দেখতে দেখা গেছে। একই সময়ে ভেতরে সংস্কারকাজে নিয়োজিত একাধিক ব্যক্তিকেও দেখা গেছে। তবে বেলা ২টার পর স্পিকারের বাসার গেট বন্ধ দেখা যায়। পেছনের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনে সংস্কার কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।

Manual8 Ad Code

রাজধানীর আসাদ গেট দিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় ঢুকে বাঁ পাশের প্রথম সড়কে পশ্চিমমুখী গেটে ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন। তার লাগোয়া আরেকটি বাসভবন (এ-২) আছে, যেখানে শেখ হাসিনার ফুঢাতো ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ থাকতেন। বাঁ পাশের দ্বিতীয় সড়কের পূর্বমুখী প্রথম বাড়িটি স্পিকারের। এই ভবনের পেছনের দেয়ালের অপর অংশেই ডেপুটি স্পিকারের বাসা। স্পিকারের ভবনের উত্তর পাশ-লাগোয়া আরেকটি ভবনে (এ-১) থাকতেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সূত্রে জানা গেছে, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন দুটিকে একত্র করে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী বাসভবনে রূপ দেওয়া হবে। পৃথক দুটি ভবনের মধ্যে সহজ যাতায়াতের জন্য একটি দুই স্তরবিশিষ্ট করিডর নির্মাণ প্রাথমিক পরিকল্পনায় আছে। তবে বিকল্প হিসেবে দেয়াল অপসারণের বিবেচনা করা হচ্ছে বলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে। একই সঙ্গে এ-১ ও এ-২ বাসা দুটিও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

Manual8 Ad Code

এই চারটি ভবন ছাড়াও জাতীয় সংসদের হুইপদের থাকার জন্য আরও ছয়টি বাসভবন আসাদ গেট দিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় ঢুকে বাঁ পাশের প্রথম সড়কে। পূর্বমুখী গেটের বি-১ থেকে বি-৬ ভবনগুলোতে জাতীয় সংসদের হুইপদের জন্য নির্মাণ করা, যার একটিতে থাকতেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এই ছয়টি ভবনও নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অফিশিয়াল কার্যক্রমের জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপদের বাসভবন কোথায় হবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন সচিব কানিজ মওলা।

১৯৭৩ সালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে গণভবন নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে নির্মাণকাজ শেষ হলে তাতে অফিস করতেন শেখ মুজিবুর রহমান। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে সেটি সামরিক আদালতে পরিণত করা হয়। ১৯৮৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভবনটি সংস্কার করে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন করেন, নাম দেন করতোয়া। ১৯৮৮ সালে আবার সংস্কার করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় করা হয় সেটি। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও একই নামে ছিল। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গণভবনে বসবাস শুরু করেন শেখ হাসিনা। একপর্যায়ে ১ টাকায় গণভবন শেখ হাসিনাকে ইজারা দেয় তৎকালীন মন্ত্রিসভা। ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেই ইজারা বাতিল করে। ওই বছরের নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও সেটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নামেই থাকে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গণভবন সংস্কারকাজ শুরু হয়। সে সময় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় থাকতেন। ২০১০ সালের ৫ মার্চ থেকে শেখ হাসিনা গণভবনে বসবাস শুরু করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগপর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। ফ্যাসিবাদের উৎপত্তিস্থল মনে করে ছাত্র-জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল গণভবনকে ঘিরে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code