প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত, সাশ্রয়ী হবে সুচিকিৎসা

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৫, ২০২৫, ১০:১২ পূর্বাহ্ণ
অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত, সাশ্রয়ী হবে সুচিকিৎসা

Manual7 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

Manual7 Ad Code

 

Manual8 Ad Code

দেশে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা তৈরির কাজ প্রায় চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তালিকা প্রণয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত লক্ষাধিক চিকিৎসকের কাছে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে তাদের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সপ্তাহজুড়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহের পর আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রকাশের জোর সম্ভাবনা রয়েছে।

অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় কত সংখ্যক ওষুধ থাকবে তা চূড়ান্ত না হলেও এ সংখ্যা আনুমানিক ২৬০টি থেকে ২৮০টি হতে পারে।

 

Manual2 Ad Code

অত্যাবশ্যকীয় এ ওষুধের তালিকা প্রণয়ন ও দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলে বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীরা বর্তমানের তুলনায় সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ কিনে সুচিকিৎসার সুযোগ পাবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী কার্যকারিতা, নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়নের ভিত্তিতে জাতীয় অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা তৈরি করতে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলমকে আহ্বায়ক করে ১৮ সদস্যের শক্তিশালী টাস্কফোর্স গঠন করে। টাস্কফোর্সে দেশের খ্যাতনামা মেডিসিন, ফার্মেসি, স্বাস্থ্য অর্থনীতি, স্ত্রীরোগ, শিশুরোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয়। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়।

এরইমধ্যে টাস্কফোর্স বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী কার্যকারিতা, নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়নের ভিত্তিতে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা তৈরি করেছে।

অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জানান, দেশে রোগপ্রবণতা ও রোগের ধরন বিবেচনা করে ১৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় গঠিত টাস্কফোর্স অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের যে তালিকা তৈরি করেছে সে তালিকার ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিকিৎসকদের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে। তালিকার পাশে ইয়েস, নো ও কমেন্ট- এ তিনটি ঘর রাখা হয়েছে। তালিকাভুক্ত ওষুধ ঠিক থাকলে ইয়েস, তালিকার ব্যাপারে ভিন্নমত থাকলে নো এবং কমেন্টে ঐ চিকিৎসক কী কারণে ভিন্নমত পোষণ করছেন সে ব্যাপারে নিজস্ব মতামত দেবেন এবং ওই ওষুধের পরিবর্তে অন্য কোনো ওষুধ ব্যবহারের ব্যাপারে মতামত দিতে চাইলে সে ব্যাপারেও যুক্তিসঙ্গত মতামত তুলে ধরবেন।

এরইমধ্যে সহস্রাধিক চিকিৎসকের কাছ থেকে মতামত পাওয়া গেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা চূড়ান্ত ও প্রকাশ করার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণীত হলে এই ওষুধে ৮৫ শতাংশ লোকের বা ৮৫ শতাংশ রোগের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তালিকাটি প্রণয়নের ফলে আগামী দিনে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে আসবে। শুধু তাই নয়, দেশের বাজারে অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্য বর্তমানের তুলনায় কমে আসবে। এ ধরনের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা ইতিপূর্বে দেশে কখনো হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

Manual4 Ad Code

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, এর আগে একাধিকবার অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হলেও ঔষধ প্রশাসন তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ফলে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়নে টাস্কফোর্স গঠিত হয় এবং এ কাজে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইউনিসেফকে যুক্ত করা হয়। কিন্তু টাস্কফোর্সে ওষুধ উৎপাদনকারীদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এ নিয়ে তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির নেতারা সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, যারা ওষুধ তৈরি করেন, তাদের না রেখে মূল্য নির্ধারণের নীতি তৈরি করলে চিকিৎসক, রোগী ও প্রস্তুতকারক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পণ্যের দাম কেবল কাঁচামালের খরচ না; গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিকায়ন খরচও বিবেচনায় রাখতে হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের সবগুলো সরকার নিজে উৎপাদন করবে না । অধিকাংশই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানের কাছে সরবরাহ করবে। তাছাড়া সাধারণ রোগীরাও বাইরে থেকে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ কিনবেন। ফলে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি যে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা সঠিক নয়।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রেফারেন্স দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী বলেন, ওষুধ এবং স্বাস্থ্য অসৎ উপার্জনকারীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code