প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন: বিয়ানীবাজারে ৩ মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি, আরেক মামলা সিআইডিতে

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন: বিয়ানীবাজারে ৩ মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি, আরেক মামলা সিআইডিতে

Manual4 Ad Code

 

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন বিয়ানীবাজার পৌরশহরে উদ্বেলিত জনতার উল্লাসকালে গুলিতে ৩ জন নিহত হন। এর আগে সিলেট নগরীতে এক সাংবাদিক ও নারায়নগঞ্জে আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এই দু’জনের বাড়িও বিয়ানীবাজার উপজেলায়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে এখানকার মোট ৫ জন নিহত হলেও ৩ জনের ময়নাতদন্ত এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী। নিহতরা হলেন পৌরশহরের নয়াগ্রামের ময়নুল ইসলাম, একই গ্রামের অস্থায়ী বাসিন্দা রায়হান আহমদ, কটুখালিপার গ্রামের তারেক আহমদ, চারখাই কাকুরা গ্রামের সোহেল আহমদ ও ফতেহপুরের সাংবাদিক আবু তাহের মো: তুরাব।

 

নিহতদের মধ্য থেকে সাংবাদিক তুরাব ও রায়হান আহমদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপর ৩ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন না হওয়ায় মামলার অগ্রগতি থেমে আছে বলে অভিযোগ করেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। ১৯ আগস্ট তুরাব নিহত হলে ২০ আগস্ট সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। আর রায়হান আহমদের নিজ জেলা ব্রাক্ষ্ণবাড়িয়ায় তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য নিহত তারেক, ময়নুল ও সোহেলের ময়নাতদন্ত নানা কারণে আটকে আছে।

 

নারায়নগঞ্জে কাকুরা গ্রামের সোহেল নিহত হওয়ার বিষয়ে তার পিতা তখলিছ মিয়া বলেন, গত ৩১ জুলাই বিকেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তার ছেলে। দু’দিন পর মরদেহ বুঝে পেলে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ অনেকটা জোরপূর্বক তড়িগড়ি করে তা দাফন করে। পুলিশের ভয়ে এলাকাবাসীসহ আত্মীস্বজনরাও মরদেহ দেখতে কিংবা জানাযায় শরিক হতে পারেনি।

 

Manual2 Ad Code

সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট বিকেলে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে সৃষ্ট নানা ঘটনায় ৩টি হত্যাসহ ৪টি মামলা দায়ের করেছেন নিহত ও আহতদের স্বজনরা। এরমধ্যে ময়নুল ও রায়হান হত্যা মামলার তদন্তভার নিয়েছে সিলেটের সিআইডি পুলিশ। গত সপ্তাহে ময়নুল হত্যা মামলা তদন্তের জন্য সিআইডি পুরো নথিপত্র নিয়ে যায়। পৃথক এসব মামলায় চারখাই ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন মুরাদসহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তারা সবাই জামিনে আছেন বলে জানা গেছে।

 

বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ছমেদ আলী জানান, ময়নাতদন্তের জন্য ম্যাজিষ্ট্রেটসহ পুলিশ নিহত তারেকের লাশ উত্তোলন করতে যায়। কিন্তু নিহতের পরিবারের আপত্তির কারণে তা উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আদালতকে অবগত করা হয়েছে। অপর নিহত ময়নুলের মরদেহের ময়নাতদন্তের দায়িত্ব সিআইডির কাছে। তারা আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।

 

Manual5 Ad Code

 

Manual1 Ad Code

ফৌজদারি আইনবিশেষজ্ঞরা বলছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না থাকলে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না। ফৌজদারি কার্যবিধি ও পুলিশ প্রবিধান অনুযায়ী, অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার কোনো ব্যক্তির লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই। আর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হচ্ছে ফৌজদারি মামলার তদন্ত ও বিচারের অন্যতম অপরিহার্য উপাদান।

 

আইনজ্ঞরা বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি পুলিশের প্রবিধান অনুযায়ী, কোনো থানা এলাকায় কোনো ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ামাত্র পুলিশ লাশ দেখতে যাবেন। এরপর মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করবেন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ পাঠাতে হবে ফরেনসিক চিকিৎসকের কাছে। ফরেনসিক চিকিৎসক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবেন। সেই প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ লিপিবদ্ধ করবেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন খুনের মামলার অন্যতম সাক্ষ্য।

 

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code