প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির হুঁশিয়ারি

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির হুঁশিয়ারি

Manual1 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
প্রোক্লেমেশন জারি করার তারিখ ঘোষণা করতে কোনো প্রকারের কালক্ষেপণ ও গড়িমসি করলে দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।

Manual7 Ad Code

বুধবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংগঠনিক আলোচনা শেষে সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হুঁশিয়ারির কথা বলা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা জুলাই প্রোক্লেমেশন জারির আহ্বান জানিয়ে এসেছিলাম। জাতীয় নাগরিক কমিটি আমাদের এই দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে। প্রোক্লেমেশন ইস্যুতে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও দলিল সংরক্ষণের স্বার্থে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর আমরা ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশন জারি করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কারণ, এ ছাড়া এই অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক, আইনি ও আন্তর্জাতিক ভিত্তি এবং সমর্থন আদায় করা কঠিন হবে বলে আমরা মনে করেছি।

এমনকি বিদ্যমান সংবিধানের বিরুদ্ধে সংঘটিত এই গণ-অভ্যুত্থানের আইনি ভিত্তি প্রদান আমাদের বিবেচনায় ছিল। পরবর্তীতে ৩০ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার জানায়, সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে তারা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশন জারি করবে। আমরা প্রাথমিকভাবে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ করি। ওই সমাবেশ থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রোক্লেমেশন জারির আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

Manual5 Ad Code

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলা হয়, গত ১৫ দিনে প্রোক্লেমেশন ইস্যুতে সরকারের তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপও শুরু করেনি। আমরা সরকারের এই অনীহা ও ধীরগতির তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারকে মনে রাখতে হবে, খোদ তার নিজের বৈধতার স্বীকৃতির জন্যই অবিলম্বে জুলাই প্রোক্লেমেশন জারি করা দরকার। বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মতো আইনি বাধ্যবাধকতাহীন অনুচ্ছেদ এই সরকারের বৈধতার পূর্ণাঙ্গ ভিত্তিমূল হতে পারে না।

Manual6 Ad Code

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার এক দিন আগে গত (মঙ্গলবার) সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল সরকার সব রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে বসবে। কিন্তু গত পনেরো দিন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ কেন দেখা গেল না, এ প্রশ্নে সরকার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। সরকারের মন্থর গতি এবং নির্জীব মনোভাবের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। জুলাই প্রোক্লেমেশন জারি স্রেফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সাংগঠনিক বিষয় নয়, এর সঙ্গে আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও অস্তিত্ব নির্ভরশীল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রোক্লেমেশন জারির দাবি জানিয়ে দেশ ও জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের কমিটমেন্ট রক্ষা করেছে। আমরা সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে প্রোক্লেমেশন জারির তারিখ ঘোষণা করুন। জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও অভিমুখ নির্ধারণ করে, এমন বক্তব্য প্রোক্লেমেশনে রাখতে হবে। পাশাপাশি এই প্রোক্লেমেশন যেন অনাগত সাংবিধানিক ও আইনি ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

Manual5 Ad Code

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান, আসুন মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে বাংলাদেশ প্রশ্নে আমরা এক হই। বিদ্যমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে টিকে থাকা এবং বিকশিত হতে গেলে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশন জারির প্রশ্নে ঐক্যের প্রয়োজন। এর মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ, উপনিবেশবিরোধী সংগ্রাম, পাকিস্তান আন্দোলন, নব্বইয়ের সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ এই জনগোষ্ঠীর সব বীরোচিত সংগ্রামের ইতিহাসকে ধারণ করে, পূর্বতন ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোর পরবর্তী বন্দোবস্তের সীমাবদ্ধতা ও ব্যর্থতাকে পেরিয়ে চব্বিশের অভ্যুত্থান পরবর্তী বন্দোবস্ত সফল করতে হবে।

গণ-অভ্যুত্থানের বাস্তবতা ও ঐতিহাসিক দাবির মুখে সরকার প্রোক্লেমেশন জারির ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাক্ষাৎ করতে যাবে। সেখানে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে অবিলম্বে প্রোক্লেমেশন করার তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কোনো প্রকারের কালক্ষেপণ ও গড়িমসি ছাত্র-জনতা বরদাশত করবে না। কালক্ষেপণ হলে আমরা দ্রুতই সারা দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code