প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে-হাতে মোবাইল ফোন, জড়াচ্ছে সাইবার অপরাধে!

editor
প্রকাশিত আগস্ট ২১, ২০২৫, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে-হাতে মোবাইল ফোন, জড়াচ্ছে সাইবার অপরাধে!

Manual2 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual1 Ad Code

‘বই হচ্ছে মস্তিষ্কের সন্তান’, এক বিখ্যাত মনীষীর উক্তি এটি। তবে বহমান সময়ে শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্ক থেকে মুছতে বসেছে বইয়ের স্মৃতি। সেখানে খেলে বেড়াচ্ছে অনলাইনের নানা রং-ঢং। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে স্মার্টফোনে বুঁদ হয়ে আছে বিয়ানীবাজারের কিশোর-তরুণ শিক্ষার্থী। উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ৮ম থেকে ১০ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের হাতে-হাতে মোবাইল ফোন। তাদের কেউ কেউ শিষ্টাচার-সামাজিকতার পাট চুকিয়ে ঢুকে পড়েছে সাইবার অপরাধে। কেউ অনলাইন গেমসে মত্ত, কেউ আবার অশ্লীলতার ঘোরে।

Manual2 Ad Code

জানা যায়, বিয়ানীবাজারের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার সময় লুকিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে আসে। বইয়ের ব্যাগের ভিতর শব্দহীন করে মোবাইল ফোনগুলো রেখে দেয়। সুযোগ পেলেই তারা এগুলোর অবাধ ব্যবহার শুরু করে। এখানকার খুব কম শিক্ষার্থীই পাঠগ্রহণের জন্য ফোন ব্যবহার করছে। স্থানীয় অনেক বিদ্যালয়ে মোবাইল ফোনের সাইবার অপরাধের কারণে সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষকদের বিব্রত হতে হচ্ছে। প্রবাসীবহুল এলাকা হওয়ায় বিয়ানীবাজারের অভিভাবকরা পরিবারের ক্ষুদে সদস্যের বায়না মেটাতে মোবাইল ফোন প্রদান করেন। সেই ফোনে তারা পড়াশোনার বদলে গেম বা ইন্টারনেটভিত্তিক ক্ষতিকর অ্যাপগুলোতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। স্কুলের মধ্যাহ্ন বিরতির সময় ফোন নিয়ে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। কেউ আবার ক্লাস ফাঁকি দিয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কঠোর নজরদারীর পরও ফোন আসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের সরানো যাচ্ছেনা।

Manual2 Ad Code

একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারিহা (আসল নাম নয়)। অলস সময়ের সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় মায়ের স্মার্টফোনটি। আঙুলের স্ক্রলে সে জানতে পারে ইন্টারনেটভিত্তিক নানা অ্যাপের কথা। কয়েক দিনের মধ্যেই যুক্ত হয়ে যায় টিকটকে। এখন সে নিয়মিত টিকটকার। আছে ফ্যান-ফলোয়ার। প্রায় প্রতিদিনই তাকে টিকটকের জন্য ভিডিও বানাতে হয়। এ জন্য লাগে নানা আইডিয়া। অভিনয় আরো কত ভালো করা যায়, এ নিয়েই ফারিহাকে ভাবতে হয় সারাক্ষণ। পড়াশোনায় আর মন বসে না তার। মেয়েটির মা বলেন, যখন ফারিহার হাতে মোবাইল ফোন দেওয়া হয়, তখন চিন্তাই করা যায়নি একদিন সে টিকটকে এতটা আসক্ত হয়ে উঠবে। এখন তাকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক বুঝিয়েও তাকে পড়ার টেবিলে বসানো যায় না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। মায়ের কথা পর্যন্ত মানতে চায় না। ফারিহার মতো বিয়ানীবাজারের হাজারো শিক্ষার্থী এখন অনলাইনে আসক্ত।

দাসউরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান জানান, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়তে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে তাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্তি দেখা যেতে পারে।অনলাইন গেমস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর অ্যাপসের প্রতিও তারা আসক্ত হতে পারে।

Manual2 Ad Code

খলিল চৌধুরী আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক জানান, শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যেমন চোখের সমস্যা, বসার ভঙ্গিতে পরিবর্তন ইত্যাদি। কিছু ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আপত্তিকর বা অশালীন বিষয়বস্তুর সংস্পর্শে আসতে পারে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code