প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে পানি উন্নয়নের প্রকল্প ভেসে যায় জলে

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে পানি উন্নয়নের প্রকল্প ভেসে যায় জলে

Manual3 Ad Code

নিম্নমানের কাজ হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙ্গে বন্যার সময় এভাবে প্লাবিত হয় বিয়ানীবাজার-ফাইল ছবি/

মিলাদ জয়নুল:

Manual6 Ad Code

নদীমাতৃক এই দেশে নদীভাঙ্গন স্বাভাবিক বিষয়। তবে নদীভাঙ্গন ঠেকানোর জন্য বছরের পর বছর থেকে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সেগুলোর সুফল পাচ্ছেনা বিয়ানীবাজারবাসী। উপরন্তু সুরমা, কুশিয়ারা আর সোনাই নদীর ভাঙ্গনে ছোট হচ্ছে বিয়ানীবাজারের মানচিত্র। উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নেয়া প্রকল্পগুলো ভেসে যায় জলে।

Manual7 Ad Code

 

বিয়ানীবাজারে নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে সুফল না পাওয়ায় সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ‘পুকুরচুরি’র কারণে ভূক্তভোগী হচ্ছেন উপজেলার অন্তত: ৩০টি গ্রামের মানুষ।

 

বিগত দিনে সম্পন্ন হওয়া অনেক প্রকল্প সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নিম্নমানের বালি, সিমেন্ট, এলসি পাথরের সাথে লোকাল পাথর মিশিয়ে বøক ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। নদীর তীর উন্নয়ন কাজে পাউবোর কোনো কর্মকর্তার তদারকি ছিলনা বললেই চলে। পাউবোর প্রকল্প মানেই যেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মহোৎসব। যতটুকু কাজ হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ চলে গেছে প্রকল্প সিন্ডিকেট ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের পকেটে। বিগত ১৫ বছর এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কয়েকশ’ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।

Manual4 Ad Code

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১:২, ৫:৫ মাত্রার ঢালাই টেন্ডারে থাকলেও বালি ও পাথরের পরিমাণ বেশি এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ঢালাইয়ের পর কমপক্ষে ২১ দিন বøক ভিজিয়ে রাখতে হয়। রোদ বেশি হলে এর সময়কাল আরো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। শিডিউলে বালির এফএম কমপক্ষে ১.৫ হলেও ব্যবহার করার কথা থাকলেও এফএম ১ থেকে ৮ সাইজের কাদাযুক্ত বালি ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া নদী ভাঙ্গন ঠেকানোর আরেক মোক্ষম অস্ত্র ‘জিও ব্যাগ’। নদীপাড়ের অতি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সবার মুখস্থ এই ‘জিও ব্যাগ’র নাম। কোন স্থানে কতটি ব্যাগ ফেলার কথা, তা কেউ জানতে চায়না। ব্যাগ ফেলার পর কেউ এগুলো গুণেও দেখেনা।

 

সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ড্রেজিং করার জন্য দুটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তা আলোর মুখ দেখবে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় নদী দুটির ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি তীর সংরক্ষণ এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজও অন্তর্ভুক্ত। এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্নার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে চারখাইয়ের নয়াগ্রাম জামে মসজিদ, দুবাগের গজুকাটা বিওপি, আলীনগরের ঢাকা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদের ভাঙ্গন ঠেকাতে মোট ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন হয়েছে। এসব এলাকা সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে মারাত্মক ঝূঁকির মুখে ছিল। জিও ব্যাগের মাধ্যমে মাটি ভরাটের এসব প্রকল্পে আপাতত: ভাঙ্গন ঝূঁকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

অপরদিকে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের মাধ্যমে আরোও বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজারে প্রতিবছরই সুরমা-কুশিয়ারার ডাইক ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপজেলার নদী, খাল ও জলাশয় খনন এবং হাওর এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশনে বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে বাস্তবে তার কোনো সুফল ভোগ করছে না মানুষ। মুড়িয়া হাওর উন্নয়নে ১০কোটি টাকার প্রকল্প কাগুজে সম্পন্ন হয়েছে দেখিয়ে পুরোটাই আত্মসাত করা হয়।

এসব বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সকল প্রকল্পই আমরা তদারকি করে থাকি। কিছু প্রকল্প পানির তোড়ে বা অধিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ একটি চলমান প্রক্রিয়া। ফলে নদী ভাঙ্গন কখনো পুরোপুরি ঠেকানো যাবেনা। অনিয়ম-দূর্র্নীতির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code