স্টাফ রিপোর্টার:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। এ থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে মো: ওমর ফারুক যোগদানের পর অভিযানের ধরণ পাল্টাতে শুরু করেছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ এর অংশ হিসেবে পুলিশের এমন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, পুলিশের এমন অভিযানে নিয়মিত মামলার আসামীদের পাশাপাশি নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হবে। সোমবার রাতে পৃথক অভিযানে পুলিশ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগের ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত ৪-৫দিন থেকে অনিবন্ধিত মোটর সাইকেল আটক ও ব্যবহারকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে। চলতি অভিযানে মাদক প্রতিরোধেও গুরুত্ব দেয়া হবে। পুরনো মামলার তালিকা দেখে দাগী অপরাধী এবং ফৌজদারীসহ রাজনৈতিক মামলার আসামীদের গ্রেফতারেও অভিযান পরিচালিত হবে।
পুলিশী এমন অভিযান শুরুর পর নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক ঢুকে পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ আওয়ামীলীগ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। তৃণমূলের অনেকেই এত দিন নিজ নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসব কর্মীও এখন মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা অনেকটা ঘরছাড়া। তারা নিজেদের গোপন রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের পরিবার-পরিজনরাও দিনরাত আতঙ্কের মধ্যে থাকছেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজারে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতসহ আওয়ামীলীগের অন্তত: হাজারখানেক নেতাকর্মী আসামী হয়েছেন। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের পুরনো সংঘর্ষ এবং মামলাও যাচাই করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধ-সংঘাতে থানায় অন্তত: ২ ডজন মামলা রয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও একাধিক মামলা চলমান। পুলিশী গ্রেফতার অভিযানে সেসব মামলাও সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনী কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সরকারের পতনের পর অজানা পরিস্থিতিতে পড়েছে নিষিদ্ধ বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগ। দেড়যুগ পর অপ্রত্যাশিত এই ভূতুড়ে পরিবেশ কল্পনাই করতে পারেনি দলীয় নেতাকর্মীরা। সরকার পতনের দিন ৫ আগস্টের ঘটনার জের ধরে একে-একে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় নতুন গতি পেয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ওমর ফারুক জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলায় যাদের নাম আছে, তারা জেনেবুঝেই আত্মগোপনে গেছেন। সতর্কভাবে থাকছেন। আর পুলিশের অভিযানে আসামীও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
Sharing is caring!