প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পরীমনি ইস্যুতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে যা বললেন ন্যান্সি

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ণ
পরীমনি ইস্যুতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে যা বললেন ন্যান্সি

Manual4 Ad Code

বিনোদন ডেস্ক:
গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগে ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে আসেন পরীমনি। সেখানে তিনি মারধরের শিকার পিংকীকে নিজের গৃহকর্মী বলে অস্বীকার করেন এবং তিনি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।

শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পরীমনির বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতজগতের জনপ্রিয় গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।

Manual1 Ad Code

গৃহকর্মী পিংকী আক্তারের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। গত বৃহস্পতিবার পরীমনির বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগে পিংকী উল্লেখ করেন, পরীমনি তার এক বছরের দত্তক কন্যাসন্তানকে খাবার খাওয়ানোর ঘটনা কেন্দ্র করে গৃহকর্মী পিংকী আক্তারকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

তিনি বলেন, একটি এজেন্সির মাধ্যমে এক মাস আগে তিনি পরীমনির বাসায় কাজ নেন। তার দায়িত্ব ছিল পরীমনির এক বছর বয়সি মেয়ের দেখাশোনা করা এবং তাকে খাবার খাওয়ানো। ওই বাচ্চাকে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর নিয়ম। পাশাপাশি বাসার অন্যান্য কাজও করতেন পিংকী। গত ২ এপ্রিল গৃহকর্মী পিংকী পরীমনির বাচ্চাটিকে পাশে বসিয়ে বাজারের লিস্ট করছিলেন। এ সময় বাচ্চা কান্না শুরু করলে পরিমনির পরিচিত সৌরভ নামে এক ব্যক্তি বাচ্চাকে ‘সলিড খাবার’ দেওয়ার পরামর্শ দেন। পিংকী বলেন, সলিড খাবার দেওয়ার সময় না হওয়ায় আমি বাচ্চার জন্য দুধ তৈরি করছিলাম। এমন সময় পরীমনি মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও একপর্যায়ে বেধড়ক মারধর করেন। তিনি একের পর এক আমার মাথায় মারতে থাকেন। তার মারধরে আমি তিনবার ফ্লোরে পড়ে যাই। এরপর তিনি আমার বাম চোখে অনেক জোরে একটি থাপ্পড় মারেন। এতে আমার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বোটক্লাবকাণ্ডের মতো এবারও তার বক্তব্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ দাবি করেছে— নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী পিংকীকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে।

Manual6 Ad Code

ভাটারা থানার ওসি মো. মাজহারুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে তার গৃহকর্মীর দেওয়া অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পিংকী আক্তার নামে ওই গৃহকর্মী যে অভিযোগ দিয়েছিলেন, তা জিডি হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে।

এদিকে অভিনেত্রী পরীমনির এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিনোদন জগতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেই স্ট্যাটাসটি তিনি নায়িকার ফেসবুকেও শেয়ার করেছেন।

Manual3 Ad Code

সামাজিক মাধ্যমে ন্যান্সি লিখেছেন— গৃহকর্মী নির্যাতিত হয় যেমন সত্যি, ঠিক তেমনি কিছু গৃহকর্মীর দ্বারা গৃহকর্ত্রীও কম সমস্যার মুখোমুখি হন না!

তিনি বলেন, আমার পুরো বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে, শুধুমাত্র গৃহকর্মীর মিথ্যা হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য। বছর দশেক আগে আমার বাসার গৃহকর্মী বাসার দারোয়ানের সঙ্গে পালিয়ে যায়। গৃহকর্মীর পরিবার তাদের মেয়ে গুম হয়েছে অভিযোগ তুলে মোটা টাকা দাবি করে। আমি সরাসরি পুলিশের শরণাপন্ন হই এবং তাদের আন্তরিক সহযোগিতায় ঘণ্টা দুয়েকের মাথায় পলাতক গৃহকর্মী তার প্রেমিকসহ উদ্ধার হয়। পরে জানতে পারি, আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।

গায়িকা বলেন, এ ঘটনার পরই আমার বাসায় কথা রেকর্ড হয় এমন সিসি ক্যামেরা সেটআপ করি। দুই বছর আগে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে দেখাশোনার জন্য এজেন্সি থেকে যে মেয়েটাকে এনেছিলাম, সে তার বোনের সঙ্গে মিলে আমার বিয়ের গহনা এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের স্বর্ণপদক চুরি করে। থানায় অভিযোগ করার পর উলটো গৃহকর্মী আমার নামে নির্যাতনের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করে। আমি সিসি ক্যামেরার বদৌলতে হয়রানির হাত থেকে বেঁচে যাই।

ন্যান্সি বলেন, বাসার রান্নার লোক যে কত জ্বালিয়েছে তার হিসাব নেই। বেতনের বাইরে যতই দিই না কেন, তাদের খুশি করা যায় না। মন চাইলে কাজে আসে, অন্যথায় আসে না। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পুরো বাসার সিংহ ভাগ ফার্নিচার বদলাই। আগের সব আসবাব আমার বাসার রান্নার মহিলা ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যায়, আমিও ভাবলাম এবার হয়তো সে আর কাজে ফাঁকি দেবে না। এত বড় উপকারের ফলাফল হিসাবে কি পেলাম জানেন?

তিনি বলেন, তার চাহিদা এখন আর হাজারের ঘরে রইল না, লাখের ঘরে চলে গেল। বিগত জুলাই মাসে বিরক্ত হয়ে তাকে বিদায় করলাম। আমার বাসার সব রান্না ১০ মাস ধরে আমিই করি। আমার ঘরে এখন বাজার খরচ কমে গেছে। বাসি খাবার খাই না বললেই চলে। স্বামী-সন্তান ভাই ও খুশি, তাদের রান্না করে খাইয়ে আমিও অনেক তৃপ্তি পাই।

ন্যান্সি আরও বলেন, ঘরের কাজে সহযোগিতার জন্য একজন এখনো আছে। আসলে কিছু করার নেই। বিশেষ করে কর্মজীবী মায়েদের সন্তানের জন্য হলেও অপরিচিত একজনের ওপর ভরসা করতে হয়। প্রতিবার আশা করি, এবারের গৃহকর্মী পরিবারের সদস্যের মতো হবে। সে আশা কখনো পূরণ হয়, বেশিরভাগ সময় হয় না।

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে এ গায়িকা বলেন, সংবাদমাধ্যম একটু সংবেদনশীল হোন। সব কিছুতে বাণিজ্য দেখবেন না। নির্যাতিতার পরিচয় গৃহকর্মীও হতে পারে, আবার গৃহকর্ত্রীও হতে পারে। সত্যিকারের ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান।

ন্যান্সি বলেন, পরীমনির মতো তারকাদের ঘাড়ে ভর করে আর কত শিরোনাম বেচবেন বলুন! আপনাদেরও নিশ্চয়ই কিছু দায় আছে, তাই না?

শেষে তিনি বলেন, যে গৃহকর্মীর সাক্ষাৎকার নিয়ে ফেসবুক সয়লাব, তার যে মুখের ভাষা… আর কিছু বলতে পারলাম না।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code