বিনোদন ডেস্ক:
দীর্ঘ সময় ধরে দেশের ফ্যাশন ও টেলিভিশন মাধ্যমের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ সাদিয়া ইসলাম মৌ। মডেলিং কিংবা অভিনয় দুই জগতেই তার সৌন্দর্য, পরিশীলন ও নিপুণতার স্বাক্ষর বহুবার দেখা গেছে। এবার তাকে দেখা যাবে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ অবলম্বনে নির্মিত ওয়েব ফিল্ম ‘গহিন অতল’-এর অন্যতম প্রধান চরিত্রে। আর এই অভিজ্ঞতা নিয়ে বেশ আনন্দিত ও সন্তুষ্ট মৌ নিজেই।
‘গহিন অতল’-এর গল্প মূলত কাজী আনোয়ার হোসেন রচিত ‘আর্তনাদ’ উপন্যাস অবলম্বনে হলেও সময়োপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে এর চিত্রনাট্য; যা করেছেন কাজী আনোয়ার হোসেনের পুত্রবধূ মাসুমা মায়মুর। এই গল্পে আধুনিক সমাজ বাস্তবতায় একজন মায়ের মানসিক টানাপড়েন, অপরাধবোধ আর সন্তানকে রক্ষার জন্য নিজের নৈতিক দ্বন্দ্বÑ সবকিছু মিলিয়ে এক জটিল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌ। এই ওয়েব ছবিতে মৌয়ের সঙ্গে অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, রাশেদ মামুন অপু, নাফিস আহমেদ, নাফিসা মালিয়াত প্রমি ও ইহতেশাম আহমেদ টিংকু। একটি বিশেষ চরিত্রে ভিডিওকলের মাধ্যমে উপস্থিত হয়েছেন ইন্তেখাব দিনার।
সহশিল্পীদের নিয়ে মৌ বলেন, ‘সবাই খুব আন্তরিক ছিলেন। সবার সহযোগিতায় কাজটি বেশ উপভোগ করেছি। একটা ভালো টিমওয়ার্ক ছিল, যেটা স্ক্রিনে বোঝা যাবে বলে মনে করি।’ পরিচালক আকা রেজা গালিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মৌ বলেন, ‘গালিব অনেক যত্ন নিয়ে কাজটি করেছেন। চিত্রনাট্যের গভীরতা, শুটিং লোকেশন, ক্যামেরার কাজÑ সব মিলিয়ে কাজটা খুব প্রফেশনালি হয়েছে।’
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে মৌ বলেন, ‘ওটিটি প্লাটফর্ম এখন দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর দারুণ একটা মাধ্যম। এখানে গল্প বলার ধরন আলাদা, চরিত্রগুলোও অনেক বেশি বাস্তব আর গভীরভাবে উপস্থাপন করা হয়।’
ওয়েব সিনেমা প্রসঙ্গে পরিচালক আকা রেজা গালিব বলেন, ‘ওয়েব ছবির গল্প মূলত পারিবারিক আবহে গড়ে উঠলেও এতে রয়েছে একটি জোরালো থ্রিলার উপাদান, যা দর্শকদের এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেবে। পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে গল্প ও কিছু চরিত্রের নামের পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা চেয়েছি গল্পটি সময়োপযোগী করে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে।’ নির্মাতা জানিয়েছেন, কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে ১৯ জুলাই সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
শিগগিরই ওয়েব প্লাটফর্মে ‘গহিন অতল’ মুক্তি পাবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা। এরই মধ্যে এর দৃশ্যধারণও প্রায় শেষ। পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনার সময়ে ১৯৮৮ সালে নাম লেখান মডেলিংয়ে। ক্যারিয়ারের শুরুর সেই ঘটনা স্মরণ করে মৌ বলেন, ‘একদিন আমাদের বড় দুলাভাই এসে জানালেন, ফ্যাশন শোতে অংশ নিতে হবে। আমি তখনও কিছুই বুঝিনি। এটা আমি কখনও দেখিনি। মায়ের সঙ্গে কথা বলে অংশ নিলাম। একটা কাজ করার পর দুই-তিনটা শোয়ের প্রস্তাব পেলাম।’
পরবর্তী সময়ে যত জায়গায় শো করেছেন, সেখান থেকেই আরও বেশি মডেলিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন মৌ। পরিচিতি বাড়লে ডাক পড়ে বিজ্ঞাপনে। সেখানে ১৯৮৯ সালে শুরু এই পথচলা। পরে মডেলিং ও বিজ্ঞাপনে কাজ করা নিয়ে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। মডেলিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও কণ্ঠস্বরের কারণে দীর্ঘ সময় তিনি অভিনয় করতে চাননি। অনেকটা বাধ্য হয়েই ১৯৯৫ সালে পরিচালক ফারিয়া হোসেনের ‘অভিমানে অনুভবে’ নামের একটি নাটক দিয়ে অভিনয়ে পা রাখেন। সহশিল্পী ছিলেন টনি ডায়েস।
নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে সাদিয়া ইসলাম মৌ এখনও সমান জনপ্রিয়। আর নতুন প্রজন্মের মডেলদের কাছে তিনি আইকন। ১৯৭৬ সালের ২১ জুন তার জন্ম। সাদিয়া ইসলাম মৌ বিয়ে করেন অভিনেতা জাহিদ হাসানকে। তাদের পুষ্পিতা, পূর্ণ নামের এক মেয়ে ও ছেলে রয়েছে।
Sharing is caring!