প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

আমলা পূনর্বাসন সংস্থাগুলো অকার্যকর

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ণ
আমলা পূনর্বাসন সংস্থাগুলো অকার্যকর

Manual5 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

ব্যবসায়ীদের অসম প্রতিযোগিতা দূর করে বাজার ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনা, ভেজাল দূর করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত এবং ভোক্তার স্বার্থরক্ষা করতে আওয়ামী লীগ সরকার নতুন তিনটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। ঢাকঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তৈরি করা হলেও, এগুলো কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। অথচ সব প্রতিষ্ঠানই একেকটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এতে শুধু বেড়েছে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। পুনর্বাসন হচ্ছে কিছু আমলার খরচ বেড়েছে সরকারের। আদতে করের বোঝা বেড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সারা দেশে যে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছিল, তাতে কিছু মুখ পরিবর্তন হয়েছে। কাজেকর্মে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত আরও দুর্বল অবস্থায় নেমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব নিয়ন্ত্রক সংস্থায় যাদের পদায়ন করা হয়, তারা কেউই এসব খাতের অভিজ্ঞ নন। এটা বড় জটিলতা। ফলে কাজ বুঝতে বুঝতেই অনেকে বড় একটি সময় কাটিয়ে দেন। আবার কাউকে কাউকে যেমন বাড়তি পুরস্কার হিসেবে সংস্থার দায়িত্বে দেওয়া হয়, একইভাবে আবার কোনো কোনো কর্মকর্তাকে শাস্তিস্বরূপও এসব জায়গায় পদায়ন করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলমকে তার চাকরি শেষে প্রতিযোগিতা কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল পুরস্কার হিসেবে।

 

জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএফএসএ’র বয়স এখন ১২ বছর। কিন্তু নতুন অবস্থায় যে ধরনের উদ্যম এবং কর্মকান্ড ছিল, এখন তার ধারেকাছেও নেই প্রতিষ্ঠানটি। শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা দুটি কাজ একসঙ্গে করেছেন। ভেজাল খাদ্যের গতিপ্রকৃতি খুঁজে বের করার জন্য যত খাদ্যপণ্য রয়েছে, সেগুলো ব্যাপকহারে পরীক্ষা করা এবং একই সঙ্গে আইনের আওতায় নতুন নতুন বিধি-প্রবিধি তৈরির কাজ করেছেন। এর পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩-এর আওতায় সংশ্লিষ্ট ১৭ থেকে ১৮টি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু যখন বড় বড় দেশি-বিদেশি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আইনের জালে আটকাতে শুরু করল, ঠিক তখনই এ প্রতিষ্ঠানটিকে অকার্যকর করার পরিকল্পনা শুরু হয়। যার উদাহরণ ‘অকার্যকর’ বর্তমান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

 

চাল, শাকসবজি, শুঁটকি থেকে যত খাদ্যপণ্য রয়েছে, সবই যখন মরণব্যাধি ক্যানসার তৈরিকারী ভারী ধাতুর ব্যাপক উপস্থিতির কথা বলছেন গবেষকরা, তখন কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ। একটি খাতের ভেজালের তীব্রতা টের পাওয়া যায় এমন কোনো বড় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংস্থাটি বর্তমানে করে না। রুটিন কাজ অনুযায়ী, নামকাওয়াস্তে কিছু পণ্যের পরীক্ষা চালালেও সেখানে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, যার কিছু নমুনা আসে সারা দেশ থেকে। আবার কর্তৃপক্ষের ঢাকায় বছরব্যাপী সাত-আট ব্যক্তিকে ফেলোশিপের আওতায় টাকা দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে কিছু পণ্যের পরীক্ষা চালিয়ে, গবেষণা আকারে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ তার দায় নেয় না। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া সরাসরিই বলে দেন, এসব গবেষণার কোনো দায় কর্তৃপক্ষের নয়, গবেষকের নিজের। ভেজালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের বিষয়।

Manual7 Ad Code

 

জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের নীতিনির্ধারকদের সংশ্লিষ্ট আইনে যে ‘সুপার পাওয়ার’ দেওয়া হয়েছে, সেটার চর্চা করছেন না। তাদের নজর ৯-৫টা অফিস করার দিকে। প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর করতে না পারলেও প্রশাসন ক্যাডারের-১৭ ব্যাচের এ কর্মকর্তা এখন সচিব হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন, সেখানেই তার স্বপ্ন বুনছেন। খাদ্যে ভেজাল বাড়ল কি কমল তাতে তার কিছু যায় আসে না। তবে তিনি একটা বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আর সেটি হচ্ছে, প্রতিদিন ফেসবুকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিংয়ের খবরগুলো প্রকাশ পাচ্ছে কি না। এ বাজার মনিটরিংও আবার হচ্ছে ঠিক উল্টো পথে। শক্তিশালী আইন থাকার পরও কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা এখন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাজার অভিযানে যাচ্ছেন এবং ভোক্তার আইনে জরিমানা করছেন। অথচ কর্তৃপক্ষের আইনে এ জরিমানার পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বেশি। এ ভোক্তার আইনের জরিমানার তথ্য আবার গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষের ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

 

Manual5 Ad Code

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা মূলত প্রচারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যেমন, সারা দেশে গত এক বছরে ছয় হাজার দেয়াল লিখন করা হয়েছে, দেয়ালিকা করা হচ্ছে। ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় পোস্ট করাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ এগুলো এক থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত ভিউ হচ্ছে, মানুষ জানছে। প্রতি মাসে দুটি করে নতুন নতুন লিফলেট তৈরি করছি যেগুলো সারা দেশে বিলি করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খাতভিত্তিক খাদ্যের ব্র্যান্ড ধরে পণ্যের নমুনা পরীক্ষার কাজ শুরু করব শিগগিরই। এ ছাড়া প্রতি মাসে প্রতিটি জেলা থেকে দুটি করে খাদ্যের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছি আমরা।’

বিএফএসএ’র সাবেক সদস্য মো. মাহবুব কবির মিলন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি এখন টোটালি ধ্বংস হয়ে গেছে। কারণ, খাদ্যে ভেজাল রয়েছে কি না, তার গতিপ্রকৃতি জানার একমাত্র উপায় হচ্ছে পণ্য পরীক্ষা করা; যা এখন কর্তৃপক্ষ একেবারেই করছে না। পরীক্ষা না করলে কোথায় খাদ্যে ভেজাল হচ্ছে, তার ওপর ব্যবস্থা নিতে পারবে না। পুরোপুরিই অন্ধকারে থাকতে হবে।’

অথচ বিভিন্ন পর্যায়ের বেসরকারি গবেষণাগুলোতে চাল থেকে শুরু করে সব ধরনের কৃষি ও খাদ্যপণ্যে মারাত্মক মাত্রায় হেভি মেটালের উপস্থিতি ধরা পড়ছে, যেগুলো মানবদেহে ক্যানসারসহ নানা ধরনের মরণব্যাধি তৈরি করছে। একদিকে গবেষণা যেমন নেই, তেমনি কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাহলে প্রতিষ্ঠানের কাজ কী? আইনটা যে কতটা শক্তিশালী সেটাই কর্তৃপক্ষ জানে না, যে কারণে কাজও করতে পারছে না বলে জানান সাবেক এ কর্মকর্তা। এজন্য অবশ্য তিনি অদক্ষ আমলাদের পদায়নকে প্রকৃত কাজের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে দেখেন।

Manual7 Ad Code

একইভাবে ২০১৬ সালে কার্যক্রম শুরু করা প্রতিযোগিতা কমিশন অল্পবিস্তর কিছু কাজ শুরু করলেও তারা এখনো হাবুডুবু খাচ্ছে। ৯ বছরেও তারা তাদের কাজ দিয়ে বাজারে কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারেনি। পারেনি বাজারে পণ্যের অসম প্রতিযোগিতা দূর করতে বা সিন্ডিকেট ভাঙতে। বাজারে যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে, তাদের শাস্তির মুখে পড়তে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)। যে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়তই একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য গুগল, মেটা (ফেসবুক), অ্যাপলের মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করে ব্যবস্থা নেয়। অথচ বাজারে প্রভাব বিস্তার করে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে জাপান টোব্যাকো ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর বিরুদ্ধে মামলা হয় প্রতিযোগিতা কমিশনে। যে মামলার এখন পর্যন্ত শুনানি চলছে, যার একটি গত ১৫ তারিখে হয়েছে। বোতলজাত পানি নিয়ে সাত কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি গত বছর। সব প্রতিষ্ঠানই প্রভাবশালী হওয়ায় এক বছরের মধ্যে শুনানিই করতে পারেনি কমিশন। দুবার তো শুনানির তারিখ দিয়েও তা পরিবর্তন করতে হয়েছে। অথচ কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো আধা লিটার পানির বোতল বিক্রি করে অন্যায্য মুনাফা করছে। অর্থাৎ, যতদিন মামলা শেষ না হচ্ছে ততদিন সরকারি নিয়ন্ত্রণে পানির এ অন্যায্য ব্যবসা নির্দ্বিধায় করে যেতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০২২ সাল, ২০২৩ সালের পুরনো অনেক মামলাও এখনো চলমান। চাল, তেল, ডিম, আটা, ময়দা, ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন পণ্যের দামে অরাজকতার দায়ে অনেক মামলা ঝুলছে বছরের পর বছর। কিন্তু সেগুলোর রায় নেই, রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে গতিটা দেশের পরিবর্তনের পরও আসেনি।

প্রতিযোগিতা কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে ১১১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রায় হয়েছে ৫৫টি, বিচারাধীন ৫৬টি মামলা। এর মধ্যে চূড়ান্ত রায়ের পর্যায়ে রয়েছে ২৬টি এবং ৩০টি মামলার শুনানি চলমান। যেসব মামলার রায় হয়েছে এবং বিচারাধীন, সেগুলোর ওপর আবার ২৪টি রিট রয়েছে হাইকোর্টে। একদিকে প্রভাবশালীদের চাপ, অন্যদিকে আইনি জটিলতা। দুয়ে মিলে আসলে প্রতিষ্ঠানটির দৃশ্যমান প্রভাব বাজারে নেই এবং প্রতিযোগীরাও এ দুর্বলতাগুলো জেনে গেছে।

প্রতিযোগিতা কমিশনের সচিব মাহবুবুর রহমান খান বলেন, ‘দেশের পরিবর্তনের পর বিচারাধীন মামলায় রায়ে সেভাবে প্রতিফলন না থাকলেও কমিশন এ সময়ে একটা বড় সংস্কারকাজ করেছে। আইনের দুর্বলতাগুলো যুগোপযোগী করার জন্য সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে, যা এখন অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে খসড়া পাঠানো হয়েছে। এটা আমাদের একটা বড় সংস্কারকাজ।’

Manual8 Ad Code

বাজার ব্যবস্থাপনায় ভোক্তা যাতে না ঠকে, এর জন্য সব ক্ষমতা দিয়ে ২০০৯ সালে তৈরি হয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ১৫ হাজারেরও বেশি ভোক্তার অভিযোগের সুরাহা করছে, বাজারে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছে, শত শত সেমিনার করছে কিন্তু বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিবর্তন নেই। কারণ প্রতিষ্ঠানটি হাসিনা সরকারের পতনের আগে এক ধরনের লোকদেখানো কাজে ব্যস্ত ছিল। সে সময় পোলট্রির বাজারে সুমন হাওলাদার, মাংসের বাজারে খলিলের মতো চরিত্র দাঁড় করিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বাজারে এসব কাজ করেনি। বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।

ভোক্তা অধিদপ্তর পণ্যের বাজারে অহেতুক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কাজ করলেও কখনো আগে থেকে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে পারেনি। বরং যখন কি না বাজারে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তখন বাজারে গিয়ে অভিযানের নামে লোকদেখানো কাজ করে এসেছে। ফলে বাজারের তদারকি শেষে কর্মকর্তারা ফিরে যাওয়ার পরই আবার আগের চরিত্রে ফিরে গেছেন। স্থায়ী সমাধানে সংস্থাটি কাজ করতে পারেনি। ফলে বাজারে পণ্যের দামে-মানে ভোক্তা ঠকানোর মাত্রা কমেনি, প্রভাব পড়েনি, যে কারণে প্রতি বছর গ্রাহকের অভিযোগ না কমে বরং বাড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলেন, বড় শাস্তি না দেওয়ার কারণেই ব্যবসায়ীরা ভয় পান না। তাদের নামমাত্র যে জরিমানা করা হয়, সেটা তারা পণ্য বিক্রি করেই তুলে আনেন। কিন্তু কেউ ভেজাল করলে তার প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ করে দেওয়া, নকল পণ্য উৎপাদনের পরও জরিমানাতেই তার ইতি টানার কারণে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া। এমনকি তদারকি সংস্থার মনিটরিংকে গায়েও মাখেন না।

এ বিষয়ে জানতে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফারুক আহম্মেদকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অবশ্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগুলো ধ্বংসের জন্য যা যা করা দরকার, সবই করা হয়েছে।’

একইভাবে পর্যটন করপোরেশন থাকার পরও এ-খাতের উন্নয়নের জন্য পর্যটন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। অথচ করপোরেশনই যথেষ্ট ছিল। দুটি প্রতিষ্ঠান থাকার পরও প্রতিনিয়ত দেশে বিদেশি পর্যটকের ভ্রমণ কমছে। নদী রক্ষা কমিশন নদীর সীমানা চিহ্নিত করে। নদী দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করে। কমিশন হওয়ার আগে এ কাজগুলো করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। কমিশন যে কাজটুকু করছে, তা নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও করপোরেশনের মাধ্যমেই সম্ভব ছিল। সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিবদের পুনর্বাসন মাথায় রেখে কমিশনের রূপরেখা করা হয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এসব নতুন সংস্থায় বর্তমান ও সাবেক আমলাদের পুনর্বাসন ঠিকই হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code