প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটের ৩ বন্দর-স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ণ
সিলেটের ৩ বন্দর-স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
ভারতের লোকজনের বাধা ও পণ্য পরিবহন জটিলতায় সিলেটের স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শেওলা স্থলবন্দর ও জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।

এর আগে সোমবার (২ ডিসেম্বর) জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে কিছু কমলা আমদানি হলেও আর কোনো পণ্য আমদানি বা রপ্তানির খবর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, পাথরবাহী ট্রাকে কাদামাটি ও আবর্জনা এবং ‘ওয়েট স্কেলে’ ওজন জটিলতার কারণে ১৬ দিন ধরে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর-কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে সিলেটের দুটি স্থলবন্দর ও একটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে সিলেটের ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি স্বাভাবিক আছে।

তবে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়নি। ভারত থেকে পণ্য না আসায় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, গত রোববার থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ও বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সিলেট সীমান্তের ওপারে বিক্ষোভ করছেন ভারতীয় লোকজন। সনাতনী ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে ‘চল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি ঘোষণা করে গত রোববার ভারতের করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনে মিছিল নিয়ে জড়ো হন কয়েকশ হিন্দু লোক।

বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশের প্রস্তুতি নিলে বিএসএফ ও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে সিলেটের শেওলা স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে সোমবার একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের করিমগঞ্জ (শ্রীভূমি) শুল্ক স্টেশনে। এদিন দুপুর থেকে শ্রীভূমি শুল্ক স্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ করেন ভারতের সনাতনী ঐক্য মঞ্চ সংগঠনের সদস্যরা। পরে তাদের বাধায় জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের কোনো পণ্য বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি। সকাল থেকে একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে এ স্টেশনে।

এছাড়া পণ্য পরিমাপ নিয়ে জটিলতায় সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে সীমান্তের উভয়পাড়ে আটকা পড়েছে শত কোটি টাকা মূল্যের পণ্যবোঝাই ছয় শতাধিক ট্রাক।

Manual2 Ad Code

সিলেটের ৩ বন্দর-স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
এ বিষয়ে শেওলা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ ইমরান মাতব্বর বলেন, আজ সকাল থেকে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু আমদানি-রপ্তানি বন্ধ। তবে গতকাল আমদানি-রপ্তানি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল।

জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফুদ্দিন বলেন, সকাল থেকে এই স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য আসেনি। গতকাল সকালে দুই দফায় ৬ টনের মতো পণ্য আসছিল। এরপরে আর কোনো পণ্য আসেনি।

Manual5 Ad Code

তিনি বলেন, এই স্টেশন দিয়ে স্বাভাবিকভাবে পণ্য কম আসে। বন্দরের দাপ্তরিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। ওপার (ভারত) থেকে পণ্য এলে আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা শুল্কায়ন করবো।

Manual2 Ad Code

তামাবিলে ১৬ দিন পাথর-কয়লা আমদানি বন্ধ
পাথরবাহী ট্রাকে কাদামাটি ও আবর্জনা এবং ওয়েট স্কেলে ওজন জটিলতার কারণে ১৬ দিন ধরে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর-কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। আমদানি বন্ধ থাকার কারণে স্থবির নেমে এসেছে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে। শুধু তাই নয়, আমদানি বন্ধ থাকার কারণে গত কয়েকদিনে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

পাথর-কয়লা আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা জানান, পাথরবাহী ট্রাকে কাদামাটি, আবর্জনা থাকলেও স্কেলে কড়াকড়ি ওজন নির্ণয়ের কারণে কয়লা-পাথর আমদানি থেকে বিরত রয়েছেন তারা। এ অবস্থায় আমদানি অব্যাহত রাখলে পাথরবাহী প্রতি ট্রাকে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা করে লোকসান গুণতে হবে। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না আমদানিকারকরা। যে কারণে বাধ্য হয়ে আমদানি বন্ধ রেখেছেন তারা।

তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানিকারক মেসার্স মিসবাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মিসবাহউল আম্বিয়া বলেন, আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা স্থলবন্দরের ওজন জটিলতায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ অবস্থায় আমাদের ব্যবসা দূরে থাক, বাড়ি থেকে এনে লোকসানের টাকা দিতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাইনি।

Manual5 Ad Code

সিলেট জেলা পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. আতিক হোসেন বলেন, পাথর আমদানি নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় আমদানি শুরু হবে।

তামাবিল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি বন্ধ রাখায় এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code