প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

মাহমুদুর না হারিছ চৌধুরী- দাফন নিয়ে যা বললেন সামিরা

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২১, ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ণ
মাহমুদুর না হারিছ চৌধুরী- দাফন নিয়ে যা বললেন সামিরা

Manual2 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব সিলেটের হারিছ চৌধুরীকে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার পর তিনি এ কথা বলেন।

Manual2 Ad Code

সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আমার রক্তের নমুনা নিয়েছে আজ। আমার বাবা মরহুম আব্দুল হারিছ চৌধুরীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর আমার বাবার মরদেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর সিআইডি আজকে আমাকে ডেকেছে, আমার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য। এখন আব্বুর ডিএনএ’র ম্যাপিং চলছে। এখন আমার ডিএনএ’র নমুনার সঙ্গে আব্বুর ডিএনএ’র নমুনা মেলাবে। এরপর সিআইডি এই নমুনা মেলানোর ফলাফল দেবে।

তিনি আরও বলেন- সিআইডি আমাকে বলেছে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে। তবে প্রক্রিয়াটা জটিল, তারা আমাকে বলেছে, যত দ্রুত সম্ভব তারা এটা সম্পন্ন করবে।

এই মুহূর্তে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার কী প্রয়োজন রয়েছে, প্রশ্ন করা হলে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বলেন, আমি বলেছি আমার বাবা মারা গেছেন, কিন্তু গত সরকার এটা মেনে নেয়নি। তাহলে কি আমার বাবাকে আমি জীবিত রেখে দেব? তা না হলে কাউকে আমার বাবাকে খুঁজে দিতে হবে। আমার বাবা তো নিরুদ্দেশ থাকতে পারেন না। কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে এটার একটি সার্টিফিকেট লাগবে। তিনি তো যেমন-তেমন মানুষ ছিলেন না, তার মৃত্যুর বিষয়টা তো প্রমাণিত হতে হবে। যে কোনো যেমন-তেমন মানুষেরও মানবিক অধিকার থাকে। আমার আব্বুর মানবিক অধিকার রক্ষা হয়নি।

Manual3 Ad Code

ওই সময় হারিছ চৌধুরীর মরদহকে এইভাবে কেন মাটি দেওয়া হয়েছিল প্রশ্ন করা হলে সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, আমার আব্বুর মরদেহ আমি আমার দাদুর বাড়ি সিলেটে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমি দেখলাম- গণমাধ্যম অহরহ রিপোর্ট করছে মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীর দাফন। এটা আসলে সঠিক নয়। আমার প্রশ্ন- কে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করেছে। আমি তো শুধু জানি- আমি আমার বাবার মরদেহ নিয়ে গিয়েছি, সেখানে দাফন হয়েছে। ওখানে যারা দাফন করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি। ওইখানের হুজুর মহিলা মানুষের সঙ্গে কথা বলেন না, সেটা আমাকে বলা হয়েছিল। আমি তখন সদ্য মৃত বাবার মরদেহ বুকে করে নিয়ে যাওয়া মেয়ে। সে সময় আমি তো কাউকে কিছু বলিনি।

তিনি আরও বলেন, যখন বিষয়টি সবার সামনে আসে, তখন দুজন সাংবাদিক আমার কাছে বিষয়টি জানতে চান। তখন আমি এ বিষয়ে কথা বলি। আমি তো ওইভাবে কাউকে চিনি না। আমি যখন তাদের সঙ্গে কথা বলি তখন আমি তাদের বলেছি, হ্যাঁ, আব্বু মারা গিয়েছে। আব্বুর দাফন হয়েছে, আপনারা যা শুনছেন তা সত্যি। আগের সরকারের প্রতিহিংসার পাত্র ছিলেন আমার আব্বু। তখনকার সময়ে বিরোধীদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক মামলা হয়েছে। আমার আব্বু গত সরকারের আমলে নির্যাতিত হওয়ার মধ্যে অন্যতম একজন। এ কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন, কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাননি। তখন ওই সরকারের পক্ষ থেকে অপপ্রচার চালানো হয় যে, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে মারা গেছেন, আবার কেউ কেউ বলেন যে, তিনি মারা যাননি, মিথ্যা কথা বলছে যাতে করে ইন্টারপোল থেকে নাম সরানো যায়। যা ইচ্ছা তাই খবর ছড়ানো হলো আব্বুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।

সামিরা তানজিন চৌধুরী আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান নামে আব্বুর মরদেহ কখনোই দাফন করিনি। এ ছাড়া মানবজমিনে আব্বুর মৃত্যুকে নিয়ে যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানেও এই ধরনের কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। আমি আমার আব্বুকে মাহমুদুর রহমান বলে দাফন করিনি, আমি আমার আব্বুকে দাফন করেছি। আমি যখন সত্যি কথা বলি তখন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ভয় পেয়ে যায়। যাদের মাধ্যমে আব্বুর মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। তখন তারা আমার কাছে সার্টিফিকেট চায়। এরমধ্যে মানবজমিনে এ বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়ে যায়।

আপনি আপনার বাবাকে দাফন করেছেন, তারপরও এখন ডিএনএ নমুনা দিতে হচ্ছে- এই বিড়ম্বনার পেছনে কারা দায়ী প্রশ্ন করা হলে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বলেন, এই বিড়ম্বনার জন্য গত সরকার দায়ী। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রশাসন এর জন্য দায়ী। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি এবং স্বৈরাচারী আচরণের কারণে আমাকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

Manual6 Ad Code

সোমবার বেলা ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সিআইডিতে আসেন। তার বাবা হারিছ চৌধুরীর মরদেহ শনাক্তের জন্য আদালতের নির্দেশে তিনি সিআইডিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিতে আসেন।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code