প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বড়লেখার দুই যুবককে ভারতে পাচার, নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিপণ দাবি

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৭, ২০২৫, ০২:৩৫ অপরাহ্ণ
বড়লেখার দুই যুবককে ভারতে পাচার, নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিপণ দাবি

Manual2 Ad Code

বড়লেখা সংবাদদাতা:
কাজের কথা বলে মৌলভীবাজারের বড়লেখার দুই যুবককে ভারত পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে এক যুবক পাচারকারিদের কবল থেকে কৌশলে ফিরে এসে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। ঘটনাটি জানাজানি পর বড়লেখা উপজেলাজুড়ে তোলপাড় চলছে।

Manual5 Ad Code

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, সীমান্ত দিয়ে মহিষ চোরাচালানের দ্বন্দ্বে ওই যুবকদের ভারতে পাঠিয়ে সেখানে নির্যাতন করানো হয়। ওই যুবকরা এখন ভারতে স্থানীয় প্রশাসনের হেফাজতে আছেন।

পাচারের শিকার যুবকরা হলেন- বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে মো: আব্দুল কাদির (২৩) ও একই ইউনিয়নের পূর্ব সাতকরাকান্দি গ্রামের আব্দুল শুক্কুরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫)।

পাচারকারিদের কবল থেকে ফিরে আসা যুবকের নাম শাহিন আহমদ (১৮)। শাহিন বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।

এ ঘটনায় পাচারের শিকার যুবক আব্দুল কাদিরের মা নেছা বেগম বাদী বড়লেখা থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৮ জনকে।

Manual2 Ad Code

মামলার আসামিরা হচ্ছে- বড়লেখা সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল গ্রামের সরফ উদ্দিন নবাব (৪০), একই ইউনিয়নের ডিমাই গ্রামের ফখর উদ্দিন (৩৮), আব্দুল খালিক (৪০), কুটু মিয়া (৩৮), আদুল শুকুর (৪০), খয়রুল ইসলাম (৩৯), আব্দুল মালিক (৩৬), কেছরিগুল গ্রামের ইছহাক আলী (৪২) ও ডিমাই গ্রামের ইমাম উদ্দিন (৪০), গৌরনগর গ্রামের রুবেল আহমদ (৩৫)।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাচারের ঘটনায় জড়িত আব্দুল মালিক (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। আব্দুল মালিক বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই গ্রামের ইছহাক আলীর ছেলে।

Manual1 Ad Code

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে (৫ এপ্রিল) মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা ডিমাই গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে মো: আব্দুল কাদিরের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা কাজ আছে জানিয়ে গভীর রাতে আব্দুল কাদির ও তার প্রতিবেশী শাহিন আহমদকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। একই গ্রুপ (আসামিরা) গিয়াস উদ্দিন নামের আরও এক যুবককে তার বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। পরদিন ৫ এপ্রিল দুপুরে শাহিন আহমদ কৌশলে আহত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে এসে স্বজনদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়। শাহিন জানায়, আসামিরা আব্দুল কাদির ও গিয়াস উদ্দিনকে টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের অবৈধভাবে ভারত পাঠিয়ে দিয়েছে। এসময় শাহিন আহমদ আসামিদের কবল হতে কৌশলে পালিয়ে আসে। এর আগে শাহিনের উপর নির্যাতন চালানো হয়। আহত শাহিনকে তার স্বজনরা বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছেন।

Manual3 Ad Code

মামলার বাদী নেছা বেগম বলেন, শাহিন ফিরে এসে তাদের উপর চালানো নির্যাতনের খবর জানায়। এরমধ্যে আমার ছেলে কাদির ও গিয়াসের উপর ভারতে নির্যাতন চালানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে দেখতে পাই। এরপর আসামিদের সাথে যোগাযোগ করি। তাদের (আসামিদের) কাছে অনেক আকুতি-মিনতি করি। কিন্তু আসামিরা আমার নিকট ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। টাকা না দিলে তারা আমার ছেলে ফিরিয়ে দিবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বলেন, ‘এ ঘটনায় মানব পাচার আইনে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code