প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে নির্যাতন

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে নির্যাতন

Manual2 Ad Code

বড়লেখা সংবাদদাতা:
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, রশি দিয়ে বেঁধে টেনে স্থানীয় বাজারে নিয়ে ওই নারীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এমনকি জোরপূর্বক তাকে ছেলেধরা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টাও চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকায় অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনার কয়েকটি ভিডিয়ো ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিয়োতে দেখা গেছে, এক নারীকে স্থানীয় লোকজন হাত বেধে টেনে নিচ্ছেন। পানিধার বাজারে তাকে লোকজন ঘিরে ধরেছে। তার চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ। লোকজন তাকে একের পর এক প্রশ্ন করছেন। কেউ তাকে গালি দিচ্ছেন। চড় মারছেন। লাথি-গুঁতাও দিচ্ছেন। মারধরের ভয়ে ওই নারী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। জোর করে তাকে ছেলেধরা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টাও করা হচ্ছে।

Manual1 Ad Code

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর নাম তাহেরা বেগম (৩৫)। তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে।

Manual1 Ad Code

তাহেরার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাহেরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যা ভুগছেন। কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হলেও মানসিক সমস্যার কারণে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকেন। তবে তাহেরা প্রায় স্বজনদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। পরে স্বজনরা তাকে খোঁজে এনে বাড়িতে রাখেন। গত ৯ নভেম্বর স্বজনদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তাহেরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্বজনরা তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে তিনি বড়লেখায় চলে আসেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে তিনি বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকায় একটি বাড়িতে গেলে ওই বাড়ির লোকজন তাকে ছেলেধরা সন্দেহে আটক রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে জড়ো হয়ে সেখান থেকে তার হাত বেঁধে টেনে টেনে তাকে পানিধার বাজারে নিয়ে যান। বাজারে নিয়ে তার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। অনেকে এই ঘটনার ভিডিয়ো ফেসবুকে লাইভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাহেরাকে উদ্ধার করে। তাকে নির্যাতনের ভিডিয়ো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা তা দেখে তাহেরাকে চিনতে পারেন। পরে তারা স্থানীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পারেন তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। রাতেই তাহেরার স্বজনরা বড়লেখা থানায় এসে তাকে নিয়ে যান।

তাহেরার চাচা ছালেহ আহমদ বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, আমার ভাতিজি তাহেরা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যা ভুগছে। অনেক চিকিৎসা করিয়েও সে সুস্থ হয়নি। সে প্রায় বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। তখন তাকে ধরে এনে বাড়িতে রাখা হয়। গত রোববার সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা তাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বড়লেখায় তাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের একটি ভিডিয়ো গতরাতে ফেসবুকে দেখতে পেয়ে আমরা স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। রাতেই থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে তাকে থানা থেকে আমাদের জিম্মায় নিয়েছি। মারধররে সে শরীরে কিছুটা আঘাত পেয়েছে। বিকেলে চিকিৎসা করাব। তাকে মারধর করাটা ঠিক হয়নি।

Manual7 Ad Code

বড়লেখা থানার ওসি মো. আবদুল কাইয়ূম বুধবার দুপুরে বলেন, তাহেরা বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে তাকে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করেন। শুনেছি তাকে কিছুটা মারধর করা হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তাকে মারধর করা ঠিক হয়নি। রাতে তাহেরার স্বজনরা থানায় এসে আমাদের কাছ তাকে নিয়ে গেছেন।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code