প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে অপপ্রচার: বিস্মিত, ক্ষুব্দ বিয়ানীবাজারের সনাতনী ধর্মীয়রা

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ১২:০৩ অপরাহ্ণ
ভারতে অপপ্রচার: বিস্মিত, ক্ষুব্দ বিয়ানীবাজারের সনাতনী ধর্মীয়রা

Manual5 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমে নানামুখি অপপ্রচার চলছে। সংখ্যালগু নির্যাতনের কথিত অভিযোগ নিয়েও বিক্ষোভ করছে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও চালানো হচ্ছে নানা প্রোপাগান্ডা। পুরনো এবং ভিন্ন স্থানের ছবি প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে ধর্মীয় উসকানি। এতে ক্ষুব্ধ, বিস্মিত বিয়ানীবাজারের সনাতন ধর্মীয় নেতারা। তারা বলছেন, মিথ্যা ও ভুল তথ্য প্রচারের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করে ভারতীয়রা নোংরা খেলায় মেতেছে বলেও অনেকের অভিযোগ।

Manual3 Ad Code

এ বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সভাপতি অরুনাভ পাল চৌধুরী মোহন বলেন, আধিপত্য ধরে রাখতে ভারতীয় উগ্র নাগরিকদের ধর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা বাংলাদেশ বিরোধী এক গভীর ষড়যন্ত্র। ভারতকে নিন্দনীয় এমন কাজ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান তিনি। একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এখানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আছেন। কিন্তু কিছু ভারতীয় ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে সনাতন ধর্মীয়দের ছোট করার চেষ্টা করছেন।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিতর্কিত হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর আবার বাংলাদেশকে নিয়ে ‘মিথ্যা’ খবরে সয়লাব হয় ভারতীয় মিডিয়াগুলো। সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি সজীব ভট্রাচার্য জানান, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের এমন বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ সত্যিই সনাতন ধর্মীয়দের বিব্রত করে। রাজনৈতিক ও পছন্দের বিশেষ কোন ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে একটি রাষ্ট্রকে নিয়ে প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্রের আগ্রাসন কাম্য নয়। তিনি ভারতীয় মনোভাবের নিন্দা জানান। কুড়ার বাজার কলেজের প্রভাষক বিজিত আচার্য জানান, কোন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কারো উস্কানী দেয়া ঠিক নয়। ধর্মীয় উস্কানী কেউ সমর্থন করেনা। ভারত যা করছে তা নিন্দাযোগ্য। বাংলাদেশেও এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়। বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের প্রভাষক সঞ্জয় আচার্য বলেন, ধর্মভেদে আমাদের উপাসনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে কিন্তু আমরা সবাই রক্তে-মাংসে গড়া। যে-কোনো প্রকার সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে কান না দিয়ে সাধারণ মানুষকে তা যাচাই-বাছাই করা উচিত। সব ধর্মই অহিংসা, সাম্য, মানবতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয়।

Manual7 Ad Code

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজের ওপর হামলা নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে দাবি করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সনাতন ধর্মীয় শিক্ষক। তিনি বলেন, ভারতের কিছু গণমাধ্যমে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে, মিথ্যাচার করছে এবং নানা উদ্ভট কথাবার্তা বলছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাধারণভাবে হিন্দুদের ওপর কোনও ধরনের হামলা হয়নি বা কোনও মন্দিরে ভাঙচুর হয়নি। কিছু আওয়ামী লীগ হিন্দু নেতা রয়েছেন, যারা বিভিন্ন সময়ে লম্ফঝম্প করেছিলেন, তাদের বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ হয়েছে। একই সঙ্গে মুসলমান আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিয়ানীবাজার উপজেলার কোথাও এ ধরনের ঘটনাও ঘটেনি।

Manual6 Ad Code

 

সনাতন ধর্মীয় সাধারণ লোকজন বলছেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। এ দেশের ক্ষতি হোক আমরা তা চাইনা। ভারতকে ষড়যন্ত্র বন্ধ করে প্রতিবেশী সুলভ আচরণ করা উচিত।

 

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code