প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২১শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

চিন্ময়ের আইনজীবী এখন কলকাতায়, মিডিয়ায় ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যের অভিযোগ

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪, ০২:০৩ অপরাহ্ণ
চিন্ময়ের আইনজীবী এখন কলকাতায়, মিডিয়ায় ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যের অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার:

বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ এখন ভারতের কলকাতায়। সেখানে অবস্থানকালে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ করছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। রবীন্দ্র ঘোষের বক্তব্যে ক্ষুদ্ধ আইনজীবী সমিতির নেতারাও।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনি (রবীন্দ্র ঘোষ) দুইবার এসেছিলেন চট্টগ্রাম আদালতে।
এই সময় আপনারা মিডিয়াকর্মীরাও ছিলেন। এখানে কোনো হত্যার হুমকির বিষয় ছিল না। প্রথম দিনও তিনি শারীরিক হেনস্তার একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছিলেন। তিনি ভারতে গিয়ে যেসব মন্তব্য করছেন সেসব মামলা শুনানির নামে রাজনীতির অংশ বলে মনে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম আইনজীবীদের এই নেতা বলেন, ‘মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশে আদালতে আসা যাওয়ার সময় সার্বক্ষণিক আমি তার সঙ্গে ছিলাম। দেশের বাইরে অবস্থান করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত এবং ভারতকে খুশি করার জন্য তিনি (রবীন্দ্র ঘোষ) এখন নানা মিথ্যা কথা বলছেন।’

একই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য পুরোটাই বানোয়াট এবং মিথ্যা। ওনাকে আদালতে কেউ কিছুই বলেনি।
একটা মামলায় দুটো পক্ষ তাদের পক্ষে যুক্তি দেখাবে, এটাই স্বাভাবিক। আসলে উনি এসেছেন রাজনীতি করতে।’

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২৬ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন পরিচালিত চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পুণ্ড্ররীকধামের (মন্দির) অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। তার হয়ে আদালতে আইনিভাবে লড়তে সম্প্রতি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। পর পর দুই দিন এই আইনজীবী আদালতে গেলেও ওকালতনামা জটিলতায় চিন্ময়ের শুনানি করতে ব্যর্থ হন।

জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে তিনি চিকিৎসা ভিসায় ভারতে গেছেন। উঠেছেন কলকাতার ব্যারাকপুর আনন্দপুরির সি রোডের ছেলের বাসায়। চট্টগ্রামের আইনজীবীদের অভিযোগ, ছেলের বাড়িতে অবস্থানকালে তিনি (অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ) কথা বলেছেন স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে। সেখানে অভিযোগ করে রবীন্দ্র বলেন, ‘চিন্ময় প্রভু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শারীরিক এবং মানসিক। তার বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বিধায় আমি আইনজীবী হিসেবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম মামলায় লড়তে। স্থানীয় আইনজীবীরা খারাপ আচরণ করলেও ওই সময় পুলিশের ভূমিকা খারাপ ছিল না। আমাকে হত্যা করার হুমকি দিয়েছে। এই হুমকি আমি পরওয়া করি না। জীবন তো একটাই। জন্মিলে মরিতে হয়।’

এদিকে আগামী ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের মামলার শুনানির দিন আবারও উপস্থিত থাকবেন জানিয়ে অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘জানুয়ারিতে শুনানির সময় নিশ্চয়ই যাব। আমি যাওয়ার জন্য রেডি। ভগবান রক্ষা করেছে, মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করে। আমি চিন্ময় প্রভুর মামলা লড়ার সাহস পেয়েছি। এই সাহসটা আমাকে দিয়েছে ভিকটিমরা। যারা নির্যাতিত হয়ে শেষ পর্যন্ত কৃতকার্য হয়েছে। আমার বয়স প্রায় শেষ। আমাকে তো মরতে হবে। আমি শেষ লড়াইটা করেই যাব।’

 

ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যা, এটাতে মানুষ ভয় পাচ্ছে। বিশেষ করে হিন্দুরা ভয় পাচ্ছে। মুসলমানদের কিছু অংশও ভয় পাচ্ছে। তারা হয়তো মুখ খুলছেন না। আমার একটা লোক নিগৃহীত হচ্ছে তাকে বেআইনিভাবে জেলখানায় রাখা হচ্ছে, আমার ফাইট করা উচিত।’

গণমাধ্যমগুলোতে তিনি আরো বলেন, ‘ওখানে (বাংলাদেশ) মামলা হয়েছে হিন্দু আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। একজন আইনজীবী মারা গেছেন। তার হত্যা মামলায় হিন্দুরা আসামি। কার আঘাতে তিনি মারা গেছেন, সেটা বিচার না করে, সে মুসলমান সেটাই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ওরা বলেছে হিন্দুরা তাকে মেরেছে। এটা কোনো কথা?’

Sharing is caring!