প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সউদী রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছিল মেঘনা আলমের প্রতারক চক্র

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ
সউদী রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছিল মেঘনা আলমের প্রতারক চক্র

Manual7 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

সুন্দরী নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত সউদী আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আলদুহাইনের কাছ থেকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার আদায়ের চেষ্টা করে একটি প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় প্রতারণার মামলায় মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও ও সানজানা ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমিরের (৫৮) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

 

Manual4 Ad Code

গত শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে আদালত মেঘলা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

পুলিশ জানায়, রিমান্ডে মেঘনা আলমের সহযোগি দেওয়ান সামির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে ফাঁদে ফেলে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য মিলবে বলে পুলিশ আশাবাদী।

Manual7 Ad Code

 

এদিকে, মেঘনা আলমকে আটকাদেশ দেয়ার পর কথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো যেভাবে মেঘলার পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে তাতে অনেকেরই সন্দেহ এটি ছিল আন্ত:রাষ্ট্রীয় যড়যন্ত্রের অংশ। ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চক্রান্ত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র সউদী আরবে জনশক্তি রফতানি অব্যাহত আছে। বন্ধ আছে ব্রুনাই, দুবাই, কাতার, মালয়েশিয়াসহ সবগুলো দেশে জনশক্তি রফতানি। সউদী আরবের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে যড়যন্ত্রকারীরা ৩০ লাখ সউদী প্রবাসীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় ফেলার পাশাপাশি রেমিট্যান্সের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। মেঘনার পক্ষ নেয়ায় তাই কথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব দেখা গেছে প্রবাসীসহ নেটিজেনদের। অনেকেই কমেন্ট করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন লিখেছেন, এটা নিশ্চিত ভারতপন্থী তথা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের যড়যন্ত্র ছিল। তারা যে কোনো কায়দায় ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মেঘনার পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে।

 

 

অরেকজন লিখেছেন, মেঘনাকে যখন পুলিশ গ্রেফতার করতে যায় তখন সে যে পোশাকে ফেসবুক লাইভে এসেছিল, তাতে বোঝাই যায় সে প্রথম শ্রেণির পতিতা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো পতিতার পক্ষ নিয়ে তাদের গ্রহনযোগ্যতা হারিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরের পোস্টের জবাবে আরেকজন লিখেছেন, হাসিনা যখন হাজার হাজার মানুষের উপর গুলি চালিয়েছিল তখন কোথায় ছিলেন আপনারা? তখন আপানাদের মানবতা জাগ্রত হলো না কেন? আরেকজন লিখেছেন, গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে খুন করছে ইসরাইলি বাহিনী।

 

অথচ মানবাধিকার সংস্থাগুলো সেগুলো চোখে দেখে না। মেঘনার মতো প্রথম শ্রেণির পতিতাদের জন্য এদের মায়াকান্না দেখে অবাক হই। কেউ কেউ মেঘনার অন্ধকার জগতের কাহিনী বর্ণনা করে লিখেছেন, ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় এসব পতিতাদের আনাগোনা বন্ধ না করলে এরকম যড়যন্ত্র চলতেই থাকবে।

 

অন্যদিকে, আইন ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, মেঘনাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি। এ নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় বইছে। অনেকেই আসিফ নজরুলকে ভারতের দালাল আখ্যায়িত করে বলেছেন, হাসিনার আমলের বিশেষ ক্ষমতা আইন তো এখনও বহাল আছে। আট মাস হয়ে গেল আপনি দায়িত্বে। আইন বহাল রেখে এমন মন্তব্য করা কী ঠিক হলো। আরেকজন লিখেছেন, সরকারের একজন দায়িত্বশীল উপদেষ্টা হয়ে পতিতার পক্ষ নিলেন কিভাবে? সরকারের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রকারীর পক্ষ নেয়ায় আগে একবারও ভাবলেন না?

 

এদিকে, মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ১০ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র সুন্দরী মেয়েদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। ওইদিন রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আসামি দেওয়ান সমিরকে সেখানে পাওয়া যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করে গত শনিবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই আরিফুল ইসলাম। আসামিপক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

 

জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেওয়ান সমির প্রতারক দলের সদস্য তথা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ও অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে। পরবর্তীতে সুকৌশলে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। আসামিরা বাংলাদেশে সউদী আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আলদুহাইনকে টার্গেট করে গত বছরের জানুয়ারি মাস হতে এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে প্রতারক দলের সদস্যরা সখ্যতা তৈরি করে। একপর্যায়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করে ফাঁদে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন। দেওয়ান সমির এ টাকা দেয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে। এ ঘটনার বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানাজানি হওয়ায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হুমকির সম্মুখীন হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় মিস আর্থ এর আগে মেঘনা আলমকে গত ১০ এপ্রিল আটক করে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ চক্রের সাথে আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। সরকারের উ্চ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা ফেলেই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code