প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ণ
একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)-এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে আমাদের প্রত্যাশা ও ভাবনা কী? নতুন প্রজন্মের ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য আমার এরই মধ্যে তারুণ্যের ভাবনা জানতে সভা-সেমিনার করেছি। চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের প্রধান শিক্ষা হলো পরিবর্তন।

Manual8 Ad Code

তিনি বলেন, সবক্ষেত্রে মেধা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে হবে। সমাজের যে স্তরেই আমরা কাজ করি না কেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা ব্যাপক। কারণ তারা তরুণ প্রজন্মকে শেখান।

Manual3 Ad Code

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিয়া হলো গবেষণাধর্মী ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার প্রতিষ্ঠান। খাতভিত্তিক গবেষণামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যাতে আমরা রিসার্চের মাধ্যমে গ্লোবাল পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি। কর্মমুখী ও সময়োপযেগী কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে। শুধু নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সমাজের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নয়, সেজন্য শিক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহার পরিবর্তন করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার কর্মসংস্থান অবশ্যই করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু সরকারের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না; বরং আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

Manual5 Ad Code

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা যে পরিবর্তন আশা করছি তা সর্বত্রই হতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন শুধু বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থা বা কর্মসংস্থানের জন্য নয়। সেটি ছিল দীর্ঘ ১৫/১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষের বহিঃপ্রকাশ। যে কারণে দ্রুত গতিতে এক দফার ভিত্তিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয় এবং বহু লড়াই সংগ্রাম ও রক্তের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

তিনি বলেন, যত সংস্কারই অমরা করি না কেন মানসিক সংস্কার আগে করতে হবে। না হলে আমরা যত সংস্কারের কথা বলি না কেন আমরা কিন্তু আইনে রূপান্তর করতে পারব না। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালী আইনি রূপান্তর ঘটাতে পারলে জাতির মুক্তি হবে। আসুন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে আমরা সবাই একসঙ্গে হই।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, গতকাল একটি দল বলেছে- আমরা নাকি চাপে জুলাই সনদে গণভোটের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি। আমরা বলেছি, জাতীয় নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হতে পারে। এখন একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে। তবে তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। আমরা আশা করছি সুন্দর সমাধান হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আদেশ জারি ও প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি কাঠামো দিতে পারেন। সবই হতে হবে বাস্তবতার নিরিখে এবং আইন দিয়ে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ বাতিলের দাবি তুলতে পারে। সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জাতিসংঘের সাবেক চিফ অব স্টাফ রেহান এ আসাদ।

স্বাগত বক্তব্যে ইউট্যাবের মহাসচিব ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, আমাদের দল বিএনপি মনে করে একটি জাতি গঠনে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু শিক্ষাকে হতে হবে সম্পূর্ণ কর্মসংস্থানমুখী ও যুগোপযোগী। গত কয়েক দশকে আমরা দেখেছি সার্টিফিকেটসর্বস্ব একটি শিক্ষা ব্যবস্থা, যা কেবল বেকারত্বের সংখ্যা বাড়িয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে তরুণদের ভাবনা হওয়া উচিত একটি জ্ঞানভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বৈশ্বিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে, যেখানে কারিগরি, ভোকেশনাল এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশের শিক্ষার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সুতরাং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের অবস্থান বদনাম ঘোচাতে হবে। বিগত ১৭ বছরে শিক্ষার জঞ্জাল সরিয়ে শিক্ষাকে বাঁচাতে হবে। কারিকুলাম পরিবর্তনের মাধ্যমে কর্মমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- রুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম প্রমুখ।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code