প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

প্রতিবেশীদের সম্পর্কে নতুন করে ভাবছে বাংলাদেশ

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২১, ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ণ
প্রতিবেশীদের সম্পর্কে নতুন করে ভাবছে বাংলাদেশ

Manual8 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশের ‘প্রতিবেশী নীতিতে’ পরিবর্তন এসেছে। বড় প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করতো আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দিল্লির অস্বস্তিকর সম্পর্ক বিরাজ করছে। অন্যভাবে বলা যায়, ভারতের সঙ্গে আগের সেই উষ্ণ সম্পর্কের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

Manual3 Ad Code

দক্ষিণ এশিয়ার অন্য প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সর্বনিম্ন কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রেখেছিল। ২০১০ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা কর্মকর্তা পর্যায়ে বৈঠক বলতে গেলে একদম হয়নি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠক হয়েছে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। অপরদিকে ১৯৭১ সালে কৃতকর্মের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলবে সরকার। কিন্তু এ কারণে সম্পর্ক একদম আটকে রাখা হবে না।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘সরকারের প্রতিবেশী নীতির ক্ষেত্রে রিঅ্যালাইনমেন্ট হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে অতীব ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এখন নেই। অপরদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা সহজ করতে চাইছে সরকার।’

ভারতের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, ‘বৃহৎ প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। এটা পরস্পরের জন্য লাভজনক এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে হওয়া জরুরি।’

 

 

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক

 

Manual6 Ad Code

২০০৯ সালে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সম্মানজনক ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাও করেছিল। কিন্তু ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই তিনটি নির্বাচনে ভারতের সরাসরি সমর্থন ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বোঝাপড়া অনেক বেশি। সে কারণে দলটির ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে ভারতের আগ্রহ কোনও গোপন বিষয় নয়।’

তবে বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, তাদের সঙ্গে ভারতকে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সব সরকারের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। অর্থাৎ তাদেরকেও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে বলে তিনি জানান।

 

 

Manual6 Ad Code

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক

 

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা অর্জনের সময়ে বাংলাদেশে গণহত্যা ও মানবাধিকারবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিল পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর সদস্যরা। একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে একটি গোষ্ঠী স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা এবং পাকিস্তানকে সর্বত্র সহায়তা করে। পাকিস্তান তাদের জঘন্য অপরাধের জন্য এখনও বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘দেশ হিসেবে পাকিস্তান এখন অনেক দুর্বল। দেশটি এখন নিজেদের সমস্যাই সমাধান করতে পারছে না।’

Manual2 Ad Code

পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখাটাই যথেষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের কোনও উপকারে আসবে না।’

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাকিস্তানকে ব্যবহার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান যদি একাত্তরের জন্য ক্ষমা চায়, তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের সম্পর্কে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়, সেটির বড় ধরনের পরিবর্তন হবে।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code