প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

ইতালি-চীন-পাকিস্তান-তুরস্ক থেকে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার কিনছে বাংলাদেশ

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ
ইতালি-চীন-পাকিস্তান-তুরস্ক থেকে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার কিনছে বাংলাদেশ

Manual3 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত আধুনিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের অভাব বিমানের চালনা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় সীমা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের। এই পরিস্থিতি বদলাতে অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিমানবাহিনী আধুনিকায়নে বড় ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। ইতালি থেকে ইউরোফাইটার টাইফুন, চীন থেকে জে-১০সি ও পাকিস্তান থেকে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কেনা হবে; পাশাপাশি তুরস্কের তৈরি টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টারও যোগ করা হবে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র বলেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইতালি থেকে ১০টি ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টি-রোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট ইউরোফাইটার টাইফুন এবং তুরস্ক থেকে ছয়টি টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ উদ্যোগের নীতিগত অনুমোদন ও দুই দেশের সরকারের সম্মতিতে চুক্তিপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ইতালি ও তুরস্কের পক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা হবে।

Manual6 Ad Code

নির্ধারণ অনুযায়ী, বিমান সদর একজন এয়ার ভাইস মার্শালকে সভাপতি করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ১২ সদস্যের একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বিমান সদরের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এসব সংস্থাকে চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে প্রতিনিধি মনোনয়ন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

Manual5 Ad Code

এই যৌথ কমিটি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে ইতালি ও তুরস্কের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে ক্রয়চুক্তি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কমিটি খসড়া চুক্তিপত্র পর্যালোচনা, দর-কষাকষি, চূড়ান্ত মূল্য নির্ধারণ, অর্থপরিশোধ পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক বিষয় নির্ধারণ করবে। চুক্তিতে থাকবে যুদ্ধবিমান সংরক্ষণ, প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি শর্তাবলি। ক্রয় প্রক্রিয়া জিটুজি (সরকার-টু-গভর্নমেন্ট) পদ্ধতিতেই যাচাই-বাছাই করে করা হবে।

Manual6 Ad Code

চীনের সঙ্গে আগেই জে-১০সি নিয়ে আলোচনাসূত্র ছিল; পরে ২০টি জে-১০সি ক্রয়ের প্রস্তাবসহ প্রায় ২২০ কোটি ডলারের প্রস্তাব সরকারের কাছে আসে। তাছাড়া পাকিস্তানের কাছ থেকে ১৬টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের জন্য প্রায় ৭২০ মিলিয়ন ডলার খরচ ধরা হয়েছে।

দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, পাক-ভারত, চীন-ভারত সীমান্তে চলমান উত্তেজনা, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর ও মায়ানমারের সংকট বিবেচনায় বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন জরুরি। সামরিক সক্ষমতা শক্তিশালী করাই এখন সরকারি অগ্রাধিকার—গত কয়েক বছরে আধুনিকায়ন পিছিয়েছিল বলেও তারা মনে করেন।

Manual6 Ad Code

বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান এয়ার কমোডর (অব.) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিমান ও হেলিকপ্টার কেনার উদ্যোগ বিমানবাহিনীর আধুনিকতার সূচনা। এর সঙ্গে সার্ভেইল্যান্স, কমিউনিকেশন, লাইভ ইনফরমেশন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল, এবং সে ক্ষেত্রেও আমাদের সমস্যা নেই।’

তিনি ইউরোফাইটার টাইফুন ও জে-১০সিকে ‘বিশ্বমানের’ বিমান হিসাবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘টাইফুন ডবল ইঞ্জিনের, দীর্ঘ রেঞ্জ ও নৌ-সমর্থন সক্ষম; জে-১০সি ৪.৫ প্রজন্মের, তুলনামূলকভাবে ব্যয়সাশ্রয়ী এবং সীমিত শর্তে পাওয়া যায়।’

সংক্ষেপে, ইউরোফাইটার টাইফুন, জে-১০সি, জেএফ-১৭ ও টি-১২৯ যোগ হলে বিমানবাহিনীর বহর ও অপারেশনার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে—এটি দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মতো জাতীয় স্বার্থে গুরুতর ভূমিকা রাখবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code