প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১১ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে ধীরে ধীরে

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ
খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে ধীরে ধীরে

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপরাসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বিদেশে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না বলে জানিয়েছে তার জন্য গঠিত চিকিৎসা বোর্ড। তাকে লন্ডন নেওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা হচ্ছে না। আসছে না অ্যাম্বুলেন্স। এনিয়ে দুই দফা পিছিয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের শিডিউল।

Manual4 Ad Code

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খালেদা জিয়াকে এই অবস্থায় নিয়ে বিমানযাত্রা উপযুক্ত মনে করছে না তার গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড। প্রতিদিনই অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। মূল সমস্যা—একটি জটিলতা কেটে গেলে নতুন করে আরেকটি জটিলতা দেখা দেয়। একটি রোগের প্যারামিটার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আরেকটি বেড়ে যায়। দীর্ঘদিনের পুরোনো লিভারের জটিলতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি নিয়ে উদ্বিগ্ন আছে মেডিক্যাল বোর্ড। শারীরিক অবস্থার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে উন্নত চিকিৎসার কথা ভাবছে না বোর্ড।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বোর্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) উন্নতি আছে। তবে আহামরি বলা যাবে না। বয়সজনিত কারণে সেরে উঠতে সময় লাগবে। এই দফায় ওনার উন্নতি হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। ওনার মাল্টিপল ডিজিস (বহুমুখী জটিলতা) থাকায় একটি রোগ থেকে সেরে উঠলে আরেকটি দেখা দেয়। লিভার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি জটিলতায় বেশ ভুগছেন। কিডনির ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বর্ডার লাইন (ঝুঁকিপূর্ণ সীমা) অতিক্রম করেছে বেশ আগেই। এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই কষ্ট হচ্ছে। এখানে বয়স একটা বড় ফ্যাক্টর। প্রতিনিয়ত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে। ডায়ালাইসিস বন্ধ করলেই কিডনির অবস্থার অবনতি হয়।’

তিনি বলেন, সিসিইউতে নেওয়ার পর থেকে প্রতিদিন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো স্বাভাবিক থাকলেও একেবারে ঝুঁকিমুক্তও হচ্ছেন না। সিসিইউতে অ্যাডভান্স টিট্রমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। মেডিক্যাল বোর্ড প্রতি রাতে বৈঠকে প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা রোগ নিয়ে আলোচনা করেন। রিপোর্ট দেখে কিছু ওষুধ বন্ধ করেন, আবার চালু করেন। কিছু ওষুধের মাত্রা কমান কিংবা প্রয়োজনে বাড়িয়ে দেন। দেশে ফেরার পর বোর্ডে সশরীরে অংশ নেন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান।

৮০ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হূদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপরসন। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ২৭ নভেম্বর তাকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত দেশি-বিদেশি দুই ডজনের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড প্রতিদিন বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনছে।

Manual4 Ad Code

এদিকে দিনের বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে শাশুড়ির শয্যাপাশে কাটান ডা. জুবাইদা রহমান। অনবরত শাশুড়ির স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন। চিকিৎসার বিষয়গুলোর তিনি সমন্বয় করেন। ডা. জুবাইদা বেশ কয়েক দিন দেশেই থাকবেন।

হূদেরাগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের এক ডজন চিকিৎসক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছে।

Manual3 Ad Code

আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ মঙ্গলবার আসছে না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকালে তাদের ঢাকায় নামার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটর গতকাল সোমবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে আজ মঙ্গলবারের ঐ ফ্লাইট বাতিল করার আবেদন করেছেন বলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন (এফএসআর) বিভাগের ঐ কর্মকর্তা বলেন, আমরা এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে পূর্বের স্লট অনুমোদন প্রত্যাহারের আবেদন পেয়েছি। ইতিমধ্যে আবেদনটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে রবিবার অপারেটরের প্রাথমিক আবেদন অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকা পৌঁছানোর অনুমতি দেয় বেবিচক। আবেদন পত্রে জানানো হয়, রাত ৯টার দিকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটটি। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৯ ডিসেম্বরের স্লট বাতিল করায় তার যাত্রা আবার পিছিয়ে গেল। জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তার চিকিৎসক দল।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code