প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বড়লেখায় ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ায় মামলা: গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া মানুষ

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০১:২৫ অপরাহ্ণ
বড়লেখায় ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ায় মামলা: গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া মানুষ

Manual3 Ad Code

বড়লেখা সংবাদদাতা:
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার কলাজুরা গ্রামে গ্রেপ্তারের সময় এক ছাত্রলীগ নেতাকে তার স্বজন ও সহযোগীরা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে। ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কলাজুরা গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশ এক ফার্মাসিস্ট ও দুই ব্যবসায়ীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এতে কলাজুরাসহ আশপাশের গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার এড়াতে রাতে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকছেন। ভয়ে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাটও বন্ধ করে রাখছেন।

Manual4 Ad Code

সোমবার রাতে এক প্রতিবাদ সভায় কলাজুরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এমন অভিযোগ করেছেন। মূলত গ্রেপ্তার এক ফার্মাসিস্ট ও দুই ব্যবসায়ীর মুক্তির দাবিতে এবং নিরীহ মানুষের বাড়িতে পুলিশের অভিযানের প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করা হয়।

পুলিশের মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলাজুরা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজির উদ্দিনের ছেলে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম আহমদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা (নং-০৯) রয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে বড়লেখা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ কলাজুরা বাজারে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসানকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাকে গাড়িতে উঠাতে গেলে তার স্বজন ও সহযোগিরা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। এই ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কলাজুরা বাজারের ফার্মাসিস্ট গৌরধন সিংহ, ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম, জামিল আহমদ ও মুরাদ আহমদকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার রাতেই বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার ছাত্রলীগ নেতা মাসুমসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পেরে পুলিশ এক ফার্মাসিস্ট ও ব্যবসায়ীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তবে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এদিকে ঘটনার পর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য কলাজুরা গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। গত রোববার রাতে কলজুরা বাজারের ব্যবসায়ী স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আজম ইসলামের বাড়িসহ অনেক বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। এতে কলাজুরাসহ আশপাশের গ্রামের অনেক মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকছেন। এমনকি ভয়ে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাটও বন্ধ রাখছেন। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতে কলাজুরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এক প্রতিবাদ সভা করেছেন।

Manual3 Ad Code

সভায় দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামির সাধারণ সম্পাদক বেলাল মিশরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এবি সিদ্দিকী দুলাল, ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মেম্বার আমিনুল হক, উপজেলা যুবদলের সদস্য জুবেল আহমদ, জামায়াত নেতা এমদাদুর রহমান স্বপন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যবসায়ী তাজুল ইসলামের বড়ভাই নজরুল ইসলাম ও কলাজুরা শাহী ঈদগাহের সভাপতি মাওলানা লুৎফুর রহমান প্রমুখ।

Manual3 Ad Code

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, গত শনিবার কলাজুরা বাজারে পুলিশ আসামি ধরতে এলে পুলিশের কাছ থেকে আসামিকে তার স্বজনরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু ঘটনার পর পুলিশ এক ফার্মাসিস্ট ও দুই নিরীহ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে। মামলার পর পুলিশ আসামিদের ধরতে কলাজুরা গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। রাতে অনেকের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। এতে এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকছেন। ভয়ে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খুলতে পারছেন না। যার কারণে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মুক্তি ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি না করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আমি একমাস আগে বিদেশ থেকে দেশে ঘুরতে এসেছি। পুলিশ রাতে অনেক বাড়িতে হানা দিচ্ছে। আমিও ভয়ে আছি। গ্রেপ্তারের ভয়ে রাতে অন্য বাড়িতে গিয়ে থাকতে হচ্ছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত করে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরীহ কোনো মানুষের বাড়িতে পুলিশ অভিযান করেনি। তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code